ডেমিয়েন রাইট যখন বাংলাদেশের যুবদলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন বলেছিলেন অনূর্ধ-১৯ দলের আকাশে ‘ধ্রুবতারা’ একজনই। তার ডাকনামটাও ‘ধ্রুব’। এবারের যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাফল্যের আকাশে তারা হিসেবে জ্বলেছিলেন এই আফিফ হোসেন ধ্রুবই। দুর্দান্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যে আফিফ জয় করেছেন সবার মন। নিজস্ব ওয়েবসাইটে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসিও প্রশংসায় ভাসিয়েছে এই তরুণ তুর্কিকে।

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী সেরা দলগুলোকে নিয়ে আইসিসির ওয়েবসাইটে তৈরি করা হয়েছে রিপোর্টকার্ড। প্রতিবেদন হয়েছে টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ স্থান অধিকারী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে নিয়েও। সেখানেই আফিফ হোসেন ধ্রুবকে ‘উদীয়মান তারকা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে আইসিসি। এ ছাড়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রাপ্তি আর উন্নতির জায়গাটা নিয়েও করা হয়েছে আলোচনা।

ব্যাট হাতে চার অর্ধশতক হাঁকানোর পাশাপাশি বল হাতেও আফিফ ছিলেন ধারাবাহিক। ঘূর্ণি বোলিংয়ে আট উইকেট ঝুলিতে পোরা আফিফকে নিয়ে আইসিসির ভাষ্য, ‘সে দলের কঠিন সময়ে নৈপুণ্য দেখাতে পারে। চার অর্ধশতক এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে যার মধ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা ৭১ রান উল্লেখযোগ্য। স্পিন বোলিংয়েও তিনি ছিলেণ দারুণ। কানাডার বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়ে সেটার প্রমাণ তিনি রেখেছেন। আর ১৫ রানে তিন উইকেট নিয়ে অল্প রানেই ইংল্যান্ডকে বেঁধে রাখতে সাহায্য করেছিলেন তিনি।’

মূলত বিপিএল অভিষেকেই পাঁচ উইকেট নিয়ে প্রথমবার আলোচনায় এসেছিলেন আফিফ। আর এবারের বিপিএলে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেছেন ব্যাট হাতেও। অনবদ্য পারফরম্যান্সে এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার জায়গা পেয়েছেন ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর করা যুব বিশ্বকাপের সেরা একাদশেও।

বাংলাদেশ যুবদল টুর্নামেন্টে মোট ছয় ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে তিনটিতে। ভারতের কাছে হেরে সেমিফাইনালের স্বপ্নভঙ্গ হওয়া বাংলাদেশ পঞ্চম স্থান নির্ধারণীর সেমিফাইনালে পরাজিত করে ইংল্যান্ডকে। অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে ষষ্ঠ স্থান নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে সাইফ হাসানের দলকে।

বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সাথের জয়টাই বাংলাদেশের প্রাপ্তি হিসেবে উল্লেখ করেছে আইসিসি। পেসার কাজী অনিক (১০ উইকেট) আর হাসান মাহমুদের (৯ উইকেট) সাথে আফিফের স্পিন বোলিংটাই ছিল বাংলাদেশের শক্তি। সব ম্যাচেই উইকেটের দেখা পেয়েছেন অনিক। আরো উইকেট পেলেও পেতে পারতেন বাঁহাতি এই পেসার যদি বাংলাদেশের ফিল্ডিংটা আরো ভালো হতো।

বছর দুই আগে ঘরের মাঠেই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়া বাংলাদেশ এবার নিউজিল্যান্ডে হয়েছে ষষ্ঠ। ধারাবাহিকতার অভাবটাই বড় টুর্নামেন্টে ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। উদ্বোধনী বোলাররা দারুণ শুরু এনে দিলেও মাঝের ওভারগুলোতে আসেনি প্রত্যাশামাফিক উইকেট। ব্যাটিং অর্ডারে এক আফিফ ছাড়া আর কেউই ছিলেন না ধারাবাহিকতায়।