হঠাৎ কেন এই ছন্দপতন?

ঘরের মাঠে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ, বেশ কিছুদিন ধরেই কথাটা শোনা যাচ্ছিল। বিশেষ করে ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরই পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের বিপক্ষে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন মাশরাফি-সাকিবরা। সে ধারাবাহিকতা ছিল পরবর্তী দুই-আড়াই বছর। ওয়ানডের পর টেস্টেও দারুণ কিছু সাফল্য পেয়েছিলেন তাঁরা। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ জয় বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ছিল নতুন একটি মাইলফলক।
বাংলাদেশের এমন সাফল্য বিশ্বের বাঘা বাঘা দলকেও রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছিল। পরিণত এক বাংলাদেশকে দেখে পরাশক্তি দলগুলোও বলতে বাধ্য হয়েছিল, এই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা খুব একটা সহজ হবে না।
সেই দলটির হঠাৎ ছন্দপতন! অবশ্য এই দুরবস্থা শুরু হয়েছিল গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই। এর পর প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পদত্যাগ একটা বড় ধাক্কা আসে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। প্রথমে মনে হয়েছিল, কোচের এই পদত্যাগ খুব একটা প্রভাব ফেলবে না বাংলাদেশ দলের খেলায়। অনেকের মুখেই তখন বলতে শোনা গিয়েছিল, কোচ তো আর মাঠে গিয়ে খেলেন না—খেলতে হয় ক্রিকেটারদেরই।
ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজে দলের ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে, ক্রিকেটে একজন কোচ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে খালেদ মাহমুদ সুজন পেছনে থেকে অনেকটা কোচের ভূমিকা পালন করেছেন, তিনিও নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। টেস্ট সিরিজে তা ভালোভাবে ফুটে উঠেছে। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে হারতে হারতে ড্র করেছে। ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্টে লজ্জাজনকভাবে হেরেছে দল।
টেস্ট সিরিজ শেষে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, দলের অন্যতম সেরা তারকা সাকিব আল হাসানের না থাকাটা ছিল বড় ক্ষতি। তাঁর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের খেলায়ও। কিন্তু একজন সাকিব ছাড়াও বাংলাদেশ দলে আরো অনেকেই ছিলেন, তাঁরা কেন পারেননি। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির রহমান কেউই নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। বিশেষ করে শেষ টেস্টে তাঁরা সবাই ব্যর্থ ছিলেন।
চট্টগ্রামে জোড়া সেঞ্চুরি করে মুমিনুল হক সামর্থ্যের প্রমাণ ভালোভাবে দিয়েছেন ঠিক, তিনিও ঢাকায় এসে ব্যর্থ হয়েছেন। সব মিলিয়ে ঢাকায় শেষ টেস্টে একেবারেই বাজে পারফরম্যান্স ছিল বাংলাদেশ দলের।
এখন সামনে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আগামী ১৫ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দুটি ম্যাচ খেলবে সফরকারী দল। এই সিরিজেও সাকিবকে পাওয়া যাচ্ছে না, সেটা এখন নিশ্চিত। আসন্ন এ সিরিজে বাংলাদেশ পারবে কি ঘুরে দাঁড়াতে?