লিটনের ব্যাটে ফিকে হলো আশরাফুল-তাইবুরের শতক

নয় বছর আগে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) শেষ শতকের দেখা পেয়েছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। গত বছর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ফিরলেও প্রত্যাবর্তনটা করে রাখতে পারেননি স্মরণীয়। এবার যখন শুরুতেই দেখা পেলেন শতকের, লিটন দাসের অপরাজিত শতকে সেটাই হয়ে গেল ফিকে। আশরাফুলের সাথে লিটন দাস ম্লান করে দিয়েছেন তাইবুরের শতকও।
ডিপিএলের মঙ্গলবারের খেলায় বড় সংগ্রহ গড়েও প্রাইম দোলশ্বরের কাছে বড় ব্যবধানে হেরেছে আশরাফুলের দল কলাবাগান। ব্রাদার্সের বিপক্ষে আবাহনীর বড় জয়ের দিন টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে হারিয়েছে খেলাঘরও।
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে কলাবাগান ক্রীড়াচক্রকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন দোলেশ্বর অধিনায়ক ফরহাদ রেজা। শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে বসা কলাবাগানকে ম্যাচে ফিরিয়েছিল আশরাফুল আর তাইবুরের ১৮৮ রানের জুটি।
২০০৯ সালে ডিপিএলে শেষ শতক হাঁকানো আশরাফুল ১৩১ বলে ১১ চারে গড়েছেন ১০৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। সাথে তাইবুর রহমানও দেখা পান তিন অঙ্কের। আশরাফুল ফিরলেও তাইবুর অপরাজিত থাকেন ১১৪ রানে। এই দুজনের জোড়া শতকে দোলেশ্বরের সামনে ২৯০ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁড়ে দেয় কলাবাগান।
জবাবে লিটনের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে প্রাইম দোলশ্বরের কাছে এক কথায় পাত্তাই পায়নি কলাবাগানের ক্লাবটি। পাঁচ ওভার আগেই জয়ের দেখা পেয়ে যায় দোলেশ্বর। ১২৩ বলে ১৪ চার আর ৩ ছয়ে জাতীয় টেস্ট দলের উইকেটরক্ষকের উইলো থেকে আসে ১৪৩ রানের ঝকঝকে এক অপরাজিত ইনিংস। দোলেশ্বরের জয়ের দিন লিটন সাথে পেয়েছিলেন মার্শাল আইয়ুবকেও। ১৭০ রানের অপরাজিত জুটি গড়ে দু’জন দলকে এনে দেন ৮ উইকেটের বড় জয়। লিটনের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার ম্যাচে মার্শাল অপরাজিত রয়ে যান শতক থেকে নয় রান দূরে, ৯১ রানে।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে আশরাফুলের দুঃখ একটু হলেও টের পেয়েছিলেন জহুরুল ইসলাম। এই উইকেটরক্ষকের শতকও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে এনে দিতে পারেনি জয়। খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতি বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের পরাজিত করে ৫ উইকেটে।
টস জিতেই খেলাঘর গাজি গ্রুপকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ব্যাটিংয়ের। দলনায়ক জহুরুলের ৫ চার আর ১ ছয়ে গড়া ১০২ রানের ইনিংস তো ছিলই। সাথে ভারতীয় রজত ভাটিয়ার অপরাজিত ৬১ রানে নির্ধারিত ওভার শেষে গাজী গ্রুপের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ২৪৭ রান।
নিজেদের ইনিংসে সব ব্যাটসম্যানরাই অবদান রেখেছেন খেলাঘরের জয়ে। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ৮৫ আর ভারতীয় অশোক মেনারিয়ার ৫১ রানে নয় বল আর পাঁচ উইকেট হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে নেয় খেলাঘর। ব্যাটসম্যান অঙ্কনের হাতে তুলে দেয়া হয় ম্যাচসেরার পুরষ্কার।
দিনের আরেক ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ১৩৬ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে আবাহনী লিমিটেড। বাকি দুই ম্যাচে শতকধারীরা দলের পরাজয়ে আফসোসে পুড়লেও সাইফ হাসানের শতকে ভর করেই জয় পেয়েছে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটি।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করা আবাহনী অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক সাইফের দারুণ শতকে সবকটি উইকেট হারিয়ে স্কোরকার্ডে সংগ্রহ করে ২৬৬ রান। ১৩২ বলে সাইফ করেছেন ১০২ রান। ৬ চার আর ৫ চারে এই তরুণ সাজিয়েছিলেন নিজের ইনিংস। এছাড়া এনামুল হক বিজয় ৪১ ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে ৩৮ রান।
জবাবে সানজামুল ইসলাম এবং মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিং তোপে ব্রাদার্স ইউনিয়ন অলআউট হয় ১৩০ রানেই। দলের পক্ষে ইয়াসির আলী সর্বোচ্চ ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। সানজামুল এবং মিরাজ দুজনই ঝুলিতে পুরেন সমান তিন উইকেট করে। সাইফ হাসান নির্বাচিত হন ম্যাচসেরা হিসেবে।