চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েও হারল রূপগঞ্জ
টানা দুই ম্যাচ জিতে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) শক্ত অবস্থানেই ছিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে দলের স্কোরকার্ডে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি সংগ্রহ করে আবারো জাগিয়ে তুলেছিল জয়ের সম্ভাবনা। তবে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা আবাহনী লিমিটেডের কাছে পাঁচ উইকেটে হেরে গেছে তারা।
সাভার বিএকএসপিতে এদিন প্রাইম দোলশ্বরের কাছে হেরেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। অন্যদিকে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ফতুল্লায় পরাজিত করেছে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে সকালে টস জিতে রূপগঞ্জ অধিনায়ক নাঈম ইসলাম বেছে নিয়েছিলেন ব্যাটিং। চলতি টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আব্দুল মজিদ এদিনও ছিলেন উজ্জ্বল। মূলত তাঁর ব্যাটে ভর করেই ৫০ ওভার শেষে রূপগঞ্জের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৭ রান।
৬ চার আর ৫ ছয় হাঁকানো মজিদ বিদায় নেন শতক বঞ্চিত হয়েই। ১১৪ বলে এই তরুণের ব্যাট থেকে আসে ৮৯ রান। পারভেজ রাসুল করেছেন ৩৩ রান। এছাড়া শেষদিকে মোশাররফ হোসেন রুবেল এবং নাজমুল হাসান মিলন দুজনই রান তুলেছেন দ্রুতগতিতে। দুজনেরই সংগ্রহ ২৯ রান।
আবাহনীর হয়ে এদিন মাশরাফি বিন মর্তুজা ছিলেন ব্যর্থ। ৯ ওভারে ৬৩ রান দিয়ে ওয়ানডে দলের অধিনায়ক ছিলেন উইকেটশূন্য। তাসকিন আহমেদ ব্যয়বহুল হলেও তুলে নিয়েছেন তিন উইকেট।
জবাব দিতে নেমে আবাহনী জয়ের ভিতটা গড়ে নেয় উদ্বোধনী জুটিতেই। এনামুল হক বিজয় এবং সাইফ হাসান সংগ্রহ করেন ১৪৩ রান। ৮৯ বলে ৭৭ রান করে এনামুল ফিরে যাওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে সাইফ হাসানও ফিরে যান ৮২ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলে। দুই ওভার হাতে রেখেই আবাহনী ম্যাচ জিতে যায় পাঁচ উইকেটে। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ অধিনায়ক সাইফ হাসান।
দিনের অন্য ম্যাচে বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও প্রাইম ব্যাংক দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। আগে ব্যাট করা ব্রাদার্সের ২১৪ রানের লক্ষ্য দোলেশ্বর অতিক্রম করে ফেলে ১৩ বল আর ছয় উইকেট হাতে রেখেই।
ব্রাদার্সের হয়ে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মিজানুর রহমান করেছেন ৭১ রান। এছাড়া ইয়াসির আলীর ব্যাট থেকেও আসে ৪৪ রান। দোলেশ্বরের পক্ষে নেদারল্যান্ডসের তারকা ক্রিকেটার রায়ান টেন ডাসকাটে এবং ফজলে মাহমুদ নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট।
ব্যাট হাতেও ফজলে মাহমুদের দারুণ নৈপুণ্য দোলেশ্বরকে এনে দেয় সহজ জয়। মাহমুদের ৮০ বলে ৭৩ রানের দিনে লিটন দাসের সংগ্রহ ছিল ৪৩ রান। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন ফজলে মাহমুদ।
অন্যদিকে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গাজী ক্রিকেটার্স ৫৫ রানে হেরেছে কলাবাগানের বিপক্ষে। টপঅর্ডারের ব্যর্থ হওয়ার দিনেও আকবর-উর-রেহমানের অনবদ্য ৮০ রানে কলাবাগান প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে স্কোরকার্ডে রান তোলে ২৩২ রান। তাইবুর রহমানের ব্যাট থেকেও এসেছে অর্ধশতক। রজত ভাটিয়া, ডলার মাহমুদ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।
জবাবে ইমরুল কায়েসের ৭৪ রানও জয় এনে দিতে পারেনি বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। ২৯ বল আগেই গাজী ক্রিকেটার্স অলআউট হয় ১৭৭ রানে। কলাবাগানের জয়ের দিনে ম্যাচ সেরা হন আকবর।
চার ম্যাচে চার জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটা ধরে রেখেছে আবাহনী। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তিন ম্যাচ জেতা প্রাইম দোলেশ্বর। দুই জয় আর দুই পরাজয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানটা রূপগঞ্জের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ : ৫০ ওভারে ২৪৭/৮ (মজিদ ৮৯, রাসুল ৩৩, মোশাররফ রুবেল ২৯, মিলন ২৯। তাসকিন ৬১/৩, সানজামুল ২৭/২, মিরাজ ২৫/২)।
আবাহনী : ৪৮ ওভারে ২৫৩/৫ (সাইফ ৭৭, এনামুল ৭৬, নাসির ৩৪, শান্ত ২৫, মিরাজ ২১*। মোশাররফ রুবেল ৪১/২, আশিকুজ্জামান ২৩/১, আসিফ ৪৯/১)।
ফলাফলঃ আবাহনী ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরাঃ সাইফ হাসান (আবাহনী)।