শেষ ম্যাচেও হারের লজ্জা বাংলাদেশের
জয়ের লক্ষ্যটা ছিল পাহাড়সম, ২১১ রান। শুরুতে ব্যাটিং করে শ্রীলঙ্কাকে এই বিশাল সংগ্রহ গড়তে দেখেই হয়তো বাংলাদেশের জয় নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছিলেন সমর্থকরা। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তেমনটাই। তবে হারের ধরন ও ব্যবধান যে এতটা খারাপ হবে- সেটা হয়তো প্রত্যাশা করেনি অনেকেই। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ছয় উইকেটে হারের পর সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি বাংলাদেশ হেরেছে ৭৫ রানের বড় ব্যবধানে। ২১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আট বল বাকি থাকতেই ১৩৫ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস।
২১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র আট রানের মাথায় ওপেনার সৌম্য সরকারের উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। সেটি ছিল দ্বিতীয় ওভারের ঘটনা। পরের ওভারে সৌম্যর পথে হেঁটেছেন মুশফিকর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুনও। কেউই স্পর্শ করতে পারেননি দুই অঙ্কের কোটা। চতুর্থ উইকেটে ৩৭ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু দলীয় ৫৯ রানের মাথায় অষ্টম ওভারে তামিমকে সাজঘরমুখী করেন বাঁহাতি স্পিনার আমিলা আপোনসো। পরের ওভারে আরিফুল হকও সাজঘরে ফিরে গেছেন মাত্র ২ রান করে। ১৫তম ওভারে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর পরই নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের হার। ৪১ রানের অধিনায়কোচিত এক ইনিংস এসেছে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে। শেষপর্যায়ে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ২০ ও মেহেদী হাসানের ১১ রানের ইনিংস দুটি হারের ব্যবধানটাই শুধু কমাতে পেরেছে বাংলাদেশের।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেরে গেছে বাংলাদেশ। সমতা ফেরানোর লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেও খুব বেশি সুবিধা করে উঠতে পরেননি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে কুশল মেন্ডিস, গুনাথিলাকা, থিসারা পেরেরাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ভর করে মাত্র চার উইকেট হারিয়েই স্কোরবোর্ডে ২১০ রান জমা করেছে শ্রীলঙ্কা।
শুরু থেকেই ঝড়ো ব্যাটিং করে গেছে শ্রীলঙ্কা। কুশল মেন্ডিস ও গুনাথিলাকার ৬৬ বলের উদ্বোধনী জুটি থেকেই এসেছিল ৯৮ রান। একাদশতম ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দিয়েছেন সৌম্য সরকার। ৪২ রান করে ফিরে গেছেন গুনাথিলাকা। তবে এরপরও বাংলাদেশি বোলারদের স্বস্তি দেননি মেন্ডিস ও পেরেরা। দ্বিতীয় উইকেটে তাঁরা গড়েছিলেন ৫১ রানের ঝড়ো জুটি। ১৬তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত আবু জায়েদ। সাজঘরে ফেরান ৩১ রান করা পেরেরাকে। পরের ওভারে ৭০ রান করা মেন্ডিসের উইকেটও তুলে নিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। শেষপর্যায়ে উপুল থারাঙ্গার ২৫ ও দাশুন সানাকার ৩০ রানের ছোট ইনিংস দুটিতে ভর করে স্কোরবোর্ডে ২১০ রান জমা করে শ্রীলঙ্কা।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্কোরকার্ডে নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তুলেও বাংলাদেশকে হেরে যেতে হয়েছিল ছয় উইকেটে।
সিলেটে বাংলাদেশ মাঠে নামছে চার পরিবর্তন নিয়ে। ফিরে এসেছেন দলের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। অভিষেক সিরিজে অফস্পিনার মেহেদী হাসানের সঙ্গে সিলেটের ছেলে আবু জায়েদ রাহীর অভিষেকটাও হয়ে গেল নিজের ঘরের মাঠেই। আফিফ হোসেনের পরিবর্তে দলে এসেছেন মোহাম্মদ মিঠুন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
শ্রীলঙ্কা : ২০ ওভারে ২১০/৪ (গুনাথিলাকা ৪২, মেন্ডিস ৭০, পেরেরা ৩১, থারাঙ্গা ২৫, শানাকা ৩১*, চান্দিমাল ২*। রাহি ৪৫/১, মুস্তাফিজ ৩৯/১, সাইফউদ্দিন ৪৬/১, সৌম্য ২৫/১)।
বাংলাদেশ : ১৮.৪ ওভারে ১৩৫ (তামিম ২৯, সৌম্য ০, মুশফিক ৬, মাহমুদউল্লাহ ৪১, সাইফউদ্দিন ২০, মেহেদী ১১। মাদুশাঙ্কা ২৩/২, দনঞ্জয়া ২০/১, শানাকা ৫/১, আপনসো ৩১/১, জীবন ৮/১, উদানা ১২/১, গুনাথিলাকা ৩/২)
ফল : শ্রীলঙ্কা ৭৫ রানে জয়ী
শ্রীলঙ্কা ২-০তে সিরিজ জয়ী