অভিষেকটা রাঙাতে পারলেন না রাহি
ঘরোয়া ক্রিকেট আর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আলোচ্ছটায় উজ্জ্বল হয়েই আবু জায়েদ রাহি সুযোগ পেয়েছিলেন টি-টোয়েন্টির বাংলাদেশ দলে। অভিষেক ম্যাচটাতে অবশ্য ডানহাতি এই পেসার মেলে ধরতে পারলেন না নিজেকে। ঘরের মাঠে লাল-সবুজের হয়ে তাঁর শুরুটা হয়ে থাকল বিবর্ণই।
বিপিএলের চতুর্থ আসর থেকেই উত্থানটা শুরু রাহির। সেবার অবশ্য সুযোগ পেয়েছিলেন ৮ ম্যাচে। আর তাতেই ১৪.১১ গড়ে তুলে নিয়েছিলেন ৯ উইকেট। ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে খুবই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছিলেন, ওভারপ্রতি রান দিয়েছিলেন মাত্র ৫.২৫!
আর গেল আসরে সিলেটের এই তরুণ ছাড়িয়ে গেছেন নিজেকেই। খুলনা টাইটানসের জার্সিতে ১২ ম্যাচে মাঠে নেমে ঝুলিতে পুরেছেন ১৮ উইকেট। তবে ওভারপ্রতি রান দেওয়ার হারটা বেড়েছে পঞ্চম আসরে এসে। ৮.৯৫ হারে রান গুনেছেন প্রতি ওভারে। তাতে কি, টুর্নামেন্টসেরা বোলার সাকিব আল হাসানের পরের নামটাই যে ছিল রাহির!
ত্রিদেশীয় সিরিজ আর টেস্ট সিরিজ হেরে দিশেহারা বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টির একাদশটা সাজাতে চেয়েছিল তরুণদের দিয়েই। আর সেক্ষেত্রে রাহির নামটা লিখতে হবে সবার আগেই। হয়েছেও তাই, তবে মিরপুরের প্রথম ওয়ানডেতে মাঠে নামা হয়নি এই পেসারের। যখন মাঠে নামলেন আশপাশটা থাকল রাহির চোখে খুব পরিচিতই। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম যে রাহির ঘরের মাঠই। এই মাঠেই নেমেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে, ক’দিন আগে বিপিএলের লড়াইয়েও। চেনা মাঠে বাংলাদেশের জার্সিটা পরে রাহির দৌড়টা শুরু হলো একদম প্রথম ওভারটাতেই।
জীবন রূপকথা নয়, রাহি সেটা বুঝে গেলেন অবশ্য নিজের করা প্রথম ওভারেই। নিজের ঘরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক, সে কারণেই কি না প্রথম ওভারেই দিয়ে বসলেন ১২ রান! অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ এরপর আর বোলিংয়েই আনলেন না তাঁকে। আবার যখন ফিরলেন, সে ওভারে রান দিলেন অবশ্য মাত্র ৬! নিজের তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলেই দেখা পেলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম উইকেট। যদিও ইনিংস শেষে চার ওভারে ৪৫ রান দেওয়ার ফিগারটা দেখে রাহির সে উচ্ছ্বাস মিইয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।
থরে থরে সাজানো গোছানো উপন্যাসের সমষ্টি জীবন নয়, সেটা সত্যি। তবে দাঁতে দাঁত চেপে কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ে ক্যারিয়ারটাকে নেওয়া যায় স্বর্ণশিখরে সে উদাহরণ তো রাহির সামনে থাকছেই। এ ম্যাচই তো শেষ নয়, সামনে পড়ে আছে অজস্র দিন। প্রথম ম্যাচটা রাঙানো না গেলেও হাল ছেড়ে দেওয়ার কিছু নেই। বল হাতে রাহির বাকি দিনগুলো হোক বাংলাদেশ আর তাঁর- দুইয়ের জন্যই রঙিন।