বাংলাদেশের ঝুলিতে শুধুই হতাশা

২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন শ্রীলঙ্কান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তাঁর অধীনে বাংলাদেশ কাঁপিয়ে দিয়েছে পুরো ক্রিকেটবিশ্বকে। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড—কেউ বাদ যায়নি বাংলাদেশের কাছে ভূপাতিত হতে।
হুট করেই এই সফল কোচ চলে গেলেন বাংলাদেশ ছেড়ে। অবশ্য মাসখানেকের মধ্যে ফিরেও এলেন। তবে সেটা বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হয়ে। ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জিতে মাঠেই হাথুরুকে জবাবটা বেশ ভালোই দিচ্ছিল টাইগাররা। জিম্বাবুয়েকেও দুবার হারিয়ে প্রমাণ করে, হাথুরুকে ছাড়াও বাংলাদেশ জিততে পারে। কিন্তু এর পরের বাংলাদেশ?
ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল ম্যাচ দিয়েই হারের ধারাবাহিকতা শুরু। এই সিরিজের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ ফ্ল্যাট উইকেটের সুবিধা নিয়ে ম্যাচ ড্র করে। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে ঢাকায় শ্রীলঙ্কার কাছে ২১৫ রানের বড় ব্যবধানে হার মানে বাংলাদেশ।
টেস্টের পরে টি-টোয়েন্টি। এই সিরিজ নিয়ে বাংলাদেশের প্রত্যাশার পারদ বরাবরই তলানিতে। কারণ, টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে কম শক্তিশালী আফগানিস্তানেরও নিচে বাংলাদেশের অবস্থান। সেখানে অপেক্ষাকৃত বেশি শক্তিশালী শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যাওয়াটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। মাঠে দেখা গেছে তেমনটাই। প্রধান কোচবিহীন বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে কোনো অসাধারণ ঘটনার জন্ম দিতে পারেনি। দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হতে হয় লঙ্কানদের কাছে।
২০১৪ সালের পর হাথুরুবিহীন বাংলাদেশ এই সিরিজে ছিল বেশ এলোমেলো। মাঠে খেলোয়াড়দের দায়িত্বহীনতার পাশাপাশি নির্বাচকদের খেলোয়াড় নির্বাচনের প্রক্রিয়াও প্রশ্নের জন্ম দেয়।
অবশ্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দল নির্বাচন বেশ কয়েকবারই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। এবার পুরো এক মাসের টাইগারদের ব্যস্ততম শিডিউলে টি- টোয়েন্টিতেই অভিষেক হয়েছে ছয়জন খেলোয়াড়ের। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে অভিষিক্ত হয়েছেন সাতজন ক্রিকেটার।
বাংলাদেশের হারের কারণ শুধু যে মাঠের ব্যর্থতা, এমনটা নয়। মাঠের বাইরেও পরিকল্পনার ঘাটতি ছল পুরো মাসের সিরিজজুড়ে। প্রধান কোচ না থাকায় বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়া টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও এককথায় ব্যর্থ। বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতার সমালোচনায় ক্ষুব্ধ সুজন পদত্যাগের কথাও বলেন।
মাঠে এবং মাঠের বাইরে দুই জায়গায়ই এককথায় বলা যায় বাংলাদেশ ব্যর্থ। এক মাসের দীর্ঘ এই সিরিজে স্বাগতিক হিসেবে বাংলাদেশের ঝুলিতে হতাশা ছাড়া কিছুই যোগ হয়নি।