গার্দিওলার কোটে কেন এই হলুদ ফিতা?
গত রোববার আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার সিটির ম্যাচে বুকে হলুদ ফিতা পরে ডাগআউটে এসেছিলেন সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা। এটাই প্রথম নয়, গত সোমবার এফএ কাপে উইগানের বিপক্ষে সিটির হারের ম্যাচেও গার্দিওলার বুকে ছিল এই হলুদ ফিতা। কিসের প্রতীক এই হলুদ ফিতা?
এটি সাধারণ কোনো কাপড়ের টুকরা নয়। এই ফিতা বার্সেলোনার সাবেক এই কোচের একটি রাজনৈতিক বার্তা। কোটে হলুদ ফিতা বেঁধে গার্দিওলা জানান দিচ্ছেন, তিনিও খুব সক্রিয়ভাবে চাইছেন কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা।
কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলন নতুন কোনো ঘটনা নয়। দীর্ঘ সময় ধরে স্পেনের কেন্দ্রীয় শাসন থেকে মুক্তি চাইছেন কাতালোনিয়ার বাসিন্দারা। গত বছর স্বাধীনতার পক্ষে ভোট হওয়ার পর স্বাধীনতার ঘোষণাও দিয়ে দিয়েছিল কাতালোনিয়ার নির্বাচিত সরকার। কিন্তু স্প্যানিশ সরকারের আগ্রাসী আচরণের কারণে শেষ পর্যন্ত সেই স্বাধীনতা অধরাই থেকে গেছে। গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্লোস পুজেমনকে যেতে হয়েছে নির্বাসনে। স্বাধীনতাকামী চারজন নেতাকে এখনো আটকে রেখেছে স্প্যানিশ সরকার।
গার্দিওলা সেসব স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক নেতার মুক্তির দাবিতে হলুদ ফিতা পরেছেন। তাঁর এই হলুদ ফিতা পরা মেনে নিতে পারেনি ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ)। ‘রাজনৈতিক বার্তা বহন করা, বিশেষ করে হলুদ ফিতা’ পরার দায়ে গার্দিওলার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে এফএ। এমন ফিতা পরা সংস্থাটির পোশাক ও সরঞ্জামনীতির পরিপন্থী।
গার্দিওলা এর আগেও হলুদ ফিতা পরে মাঠে নেমেছিলেন। এ জন্য গত ডিসেম্বরে দুবার মৌখিকভাবে সতর্কও করেছিল এফএ। তবে সেটা না মানায় সফল এই কোচের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে এফএ। এর জবাব দিতে আগামী ৫ মার্চ পর্যন্ত সময় পাবেন পেপ।
তবে সিটির কোচ যে নীতিতে অটল থাকবেন, বোঝা গেছে আগেই। এ ব্যাপারে ৪৭ বছর বয়সী স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘কোচ হওয়ার আগে সর্বপ্রথম আমি একজন মানুষ। তারা (এফএ) জানে, আমি সব সময় এই হলুদ ফিতা পরে থাকব। এটা শুধু রাজনৈতিক নয়। এটা গণতন্ত্র সম্পর্কিত, এটা তাদের সাহায্য করবে, যারা এখন পর্যন্ত কিছুই করতে পারেনি।’
সিটি কোচ আরো বলেন, ‘একদিনের জেলবাস কত দুর্বিষহ মনে হয়। অথচ কাতালোনিয়ার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে। সবাই জানে, একদিন আমি এই হলুদ ফিতা পরা বন্ধ করব। যেসব রাজনীতিবিদ আটকে আছেন, আমি তাঁদের সবার মুক্তি চাই।’