আবাহনীর প্রথম পরাজয়ের দিন মোহামেডানের টাই

আজকের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) লড়াইয়ে ব্যাট আর বল দুটোতেই দুর্দান্ত ছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। অবশ্য ব্যাট বলে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ অধিনায়কের জ্বলে ওঠা হয়েছে সার। প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে হারতে হয়েছে তাঁর দল আবাহনী লিমিটেডকে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের পরাজয়ের দিনে প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে টাইয়ে ম্যাচ শেষ করেছে মোহামেডান। অন্যদিকে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে পরাজিত করেছে শেখ জামাল ধানমণ্ডি।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে প্রাইম ব্যাংক। মাঠে নামা ছয় ম্যাচের ছয়টিতেই জয় পাওয়া আবাহনীর শুরুটাও ছিল সেরাদের মতই। মাশরাফির তোপের মুখে পড়ে নিজেদের ইনিংসে প্রাইম ব্যাংক সংগ্রহ করেছিল সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান।
দলের পক্ষে ৯৮ বলে সর্বোচ্চ ৮৪ রান আসে আল আমিনের ব্যাট থেকে। এছাড়া জাকির হাসান করেছেন ৬২ রান। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি মাশরাফি তুলে নিয়েছিলেন চার উইকেট। ৭ ম্যাচে এই পেসারের শিকার ১৯ উইকেট।
জবাব দিতে নেমে আবাহনীর শুরুটা ছিল যাচ্ছেতাই। মাত্র ১৭ রানেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দলটি হারিয়ে বসে তিন উইকেট। সে চাপটা অবশ্য অধিনায়ক নাসির হোসেন সামাল দিয়েছেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সাইফ হাসানকে সঙ্গে নিয়ে। ১২৭ রানের জুটি গড়ে ৮৮ বলে ৬৫ রান করে ফেরেন নাসির।
মোসাদ্দেকও দ্রুত ফিরলে চাপটা আবারও ফিরে আসে আবাহনীর ওপর। বিপদটা আরও ঘনীভূত হয় ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৫ রান করে সাইফও সাজঘরের পথ ধরলে। ১২৪ বলে ১ ছয় আর ৫ চারে নিজের ইনিংস সাজিয়েছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে বাংলাদেশের অধিনায়ক।
বল হাতে চার উইকেটের পর ২১ বলে এক ছক্কায় ২২ রানের ইনিংসে দলকে জেতানোর চেষ্টা করেছিলেন মাশরাফি। লাভ অবশ্য হয়নি তাতে। ৯ রানে ম্যাচ হেরে আবাহনীকে পেতে হয়েছে টুর্নামেন্টে প্রথম পরাজয়ের স্বাদ। চার উইকেট নিয়ে প্রাইম ব্যাংক পেসার শরিফুল ইসলাম পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
অন্যদিকে ফতুল্লায় শ্বাসরুদ্ধকর এক সমাপ্তি দেখতে পেলো মোহামেডান-দোলেশ্বর ম্যাচটি। লড়াইয়ে কেউ হারেনি, কেউ জেতেওনি। মোহামেডানের গড়া ২৮৬ রানের জবাবে দোলেশ্বরও স্কোরকার্ডে রান তুলেছে ঠিক ২৮৬। ফলে ডিপিএল দেখে ফেললো এবারের আসরের প্রথম টাই ম্যাচ।
প্রথমে ব্যাট করে অধিনায়ক শামসুর রহমান, রকিবুল হাসান আর বিপুল শর্মার অর্ধশতকে স্কোরকার্ডে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি গড়ে মোহামেডান। ৯৩ বলে ৭৫ রান করেছেন শামসুর। রকিবুলের সংগ্রহ ছিল ৭৫ আর বিপুলের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৩ রান। দোলেশ্বরের ফরহাদ রেজা শিকার করেছিলেন তিন উইকেট।
জবাব দিতে নেমে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের দারুণ শতকে দোলেশ্বর জয়টাকে দেখছিল হাতের নাগালেই। ১২২ বলে ৮ চার আর ২ ছয়ে লিটন করেছেন ১২৯ রান। তবে তাঁর ফিরে যাওয়ার পরেই ঘুরে দাঁড়ায় মোহামেডান। মোহাম্মদ আজিমের ছয় উইকেটই হারতে বসা ম্যাচে সাদা-কালো শিবিরকে ফিরেয়েছে ম্যাচে।উইকেটে পতনের চাপে পরের ব্যাটসম্যানরা নিতে পারেননি প্রত্যাশামাফিক রান। তাই শেষমেশ টাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে লিটনদের। ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন মোহামেডান পেসার আজিম।
শেরেবাংলায় দিনের অয়ারেক ম্যাচ সৈকত আলীর শতরানে ভর করে জয়ের মুখ দেখেছে শেখ জামাল। বর্তমান শিরোপাধারী গাজী ক্রিকেটার্সকে দলটি পরাজিত করেছে ৯৫ রানের বড় ব্যবধানে। ১১৮ বলে ৬ চার আর ৫ ছক্কায় সৈকতের ১১৫ রানে ভর করে শেখ জামালের পুঁজি ছিল ৮ উইকেটে ২৬৫ রান।
জবাব দিতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই ম্যাচের বাইরে চলে যায় গাজী ক্রিকেটার্স। গুরকিরাত সিং যা একটু প্রতিরোধ গড়েছেন শেখ জামালের বোলারদের বিরুদ্ধে। ৭৭ বলে এই ভারতীয়র সংগ্রহ ছিল ৬৭ রান। দারুণ বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে ১৭০ রানেই গুটিয়ে দেয় শেখ জামাল। জোড়া উইকেটের দেখা পেয়েছেন সোহাগ গাজী। শতকের সুবাদে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা গিয়েছে সৈকতের হাতেই।