শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে রূপগঞ্জের এক উইকেটে হার
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/03/04/photo-1520167928.jpg)
ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) টান টান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে এক উইকেটে হেরে গেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ম্যাচের শেষ বলে জয় পেয়েছে নবাগত শাইনপুকুর ক্রিকেট একাডেমি। শাহরিয়ার নাফিসের শতক না পাওয়ার আক্ষেপের দিনে কলাবাগানকে অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ম্যাচ জিতিয়েছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। আরেক ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে তিন উইকেটে ম্যাচ জিতেছে খেলাঘর। এদিনের সবকটি ম্যাচ মিলিয়ে মোট শতক এসেছে দুটি আর নড়বড়ে নব্বইয়ের শিকার হয়েছেন তিন ব্যাটসম্যান।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল রূপগঞ্জ। ব্যাটসম্যানদের নৈপুণ্যে নির্ধারিত ৫০ ওভারে তাদের স্কোরকার্ডে জমা পড়ে ২৬৮ রান। অবশ্য দলের দুজন ব্যাটসম্যানকে পুড়তে হয়েছে শতক বঞ্চিত হওয়ার আফসোসে।
উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম ফিরেছেন ১৩০ বলে ৯৩ রান করে। শতক থেকে ৭ রান দূরে থাকতে আউট হয়েছেন এক ছয় আর ৮ চার হাঁকিয়ে। অন্যদিকে পারভেজ রসুল ৬৬ বলে খেলেছেন ৮৮ রানের অপরাজিত ঝড়ো ইনিংস। তিন অঙ্কের ঘর থেকে রসুল ১২ রান দূরে থাকতেই শেষ হয়ে যায় দলের ইনিংস।
জবাব দিতে নেমে নাঈমের দুঃখটা ভালোই টের পেয়েছেন শাইনপুকুরের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শাদমান ইসলাম। ১১৬ বলে ৮ চারে শাদমান ফিরেছেন ৫ রানের আক্ষেপ নিয়ে, ৯৫ রান করে। টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ভারতীয় উদয় কাউলের সংগ্রহ ছিল ৬১ রান।
মিরপুরে সারাক্ষণই ম্যাচের পেন্ডুলাম দুলেছে দুই দলের দিকেই। শেষ বলের ঠিক আগের বলটাতেই রূপগঞ্জ ফিরিয়ে দিয়েছিল শাইনপুকুরের নবম ব্যাটসম্যানকে। তবে শেষ রক্ষা আর হয়নি। ইনিংসের একদম শেষ বলে চার মেরেই প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট খেলতে আসা শাইনপুকুরকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠে ছাড়েন রায়হান উদ্দিন। মোহাম্মদ শহীদ রূপগঞ্জের পক্ষে তুলে নেন তিন উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কারটা পান শাইনপুকুরের শাদমান।
দিনের আরেক ম্যাচে বিকেএসপিতে অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছে কলাবাগান। শাহরিয়ার নাফিসের ৯৯ রানে ফিরে যাওয়ার আফসোসটা আরও বড় হয়েছে দলের পরাজয়ে। ১২৫ বল মুকাবিলা করে ১৪ চার আর এক ছয় হাঁকানো নাফিস ফিরেছেন শতক থেকে এক রান দূরে থাকতেই। এছাড়া আজমীর আহমেদের ৫৮ রানে নিজেদের ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রানের পুঁজি গড়ে অগ্রণী ব্যাংক। আকবর-উর-রেহমান কলাবাগানের হয়ে শিকার করেন সর্বোচ্চ তিন উইকেট।
পাল্টা জবাবে শুরুতেই উইকেট হারালেও সেই চাপ থেকে কলাবাগান থেকে টেনে তোলেন তাসামুল হক ও মোহাম্মদ আশরাফুল। ১৮৮ রানের জুটিতে দুজনই দেখা পান শতকের। ১১৫ বলে ১০৬ রান করে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তাসামুল ফিরলেও আশরাফুল মাঠ ছাড়েন দলকে জিতিয়েই। ১৩৬ বলে ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংসে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান চার হাঁকিয়েছেন ১০টি। কলাবাগানের পাঁচ উইকেটের জয়ের দিন ম্যাচ সেরাও নির্বাচিত হন এক সময়ে জাতীয় দলের হয়ে মাঠ কাঁপানো এই ক্রিকেটার।
অন্যদিকে ফতুল্লায় লো-স্কোরিং ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি। প্রথমে ব্যাট করা ব্রাদার্স দলপতি অলোক কাপালি ছাড়া আর কারো ব্যাটেই পায়নি ভরসা। ৮৩ বলে ৬৬ রান আসে এই অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে। খেলাঘরের হাসান মাহমুদের তিন উইকেটের দিনে ব্রাদার্স অলআউট হয় ১৮৭ রানে।
ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে অবশ্য ব্রাদার্সের হয়ে লড়েছেন বোলাররা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ছোট পুঁজি গড়েও শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ টেনে নিয়ে যান বোলাররা। তবে সাত উইকেট হারিয়ে তিন বল হাতে রেখেই খেলাঘর জিতে গেলে পরাজিতের দলেই থাকতে হয় ব্রাদার্সকে। অশোক মেনারিয়া খেলাঘরের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন। ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কারও তুলে দেয়া হয় এই ভারতীয়র হাতেই।