দুই নাঈমে রূপগঞ্জের জয়
খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির হয়ে রবিউল ইসলাম রবি হাঁকিয়েছিলেন দুর্দান্ত এক শতক। তবে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের জয় বিঘ্নিত হয়নি তাতে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) আজকের লড়াইয়ে ছয় উইকেটে জয় পেয়েছে রূপগঞ্জ। অবশ্য ম্যাচ জিতেও পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় অবস্থানে নেমে গেছে দলটি।
শেখ জামাল ধানমণ্ডিকে আট উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানটা এখন প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার ডিভিশন খেলতে আসা শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের। রূপগঞ্জের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও রানরেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে দ্বিতীয় স্থানে উত্তীর্ণ হয়েছে শাইনপুকুর। দিনের আরেক ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়ন বড় জয় পেয়েছে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে।
বিকেএসপির মাঠে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই প্রথম উইকেট হারালেও ঘুরে দাঁড়িয়েছিল খেলাঘর। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৮২ রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো সংগ্রহের পথ দেখান রবি আর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। ১২৫ বলে ৮০ রান করে মাহিদুল ফিরেছেন ছয়টি চার আর দুটি ছয় হাঁকিয়ে।
তবে রবি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। নিজের তৃতীয় লিস্ট ‘এ’ শতক তুলে নিয়ে রবি সাজঘরের পথ ধরেছেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেই। ১৩টি চার আর এক ছয়ে ১৩৮ বলে এই ডানহাতির ব্যাট থেকে এসেছে ১১৬ রান। মাঝের কিছু ওভারে দ্রুত রান তুলতে না পারায় বড় সংগ্রহ আসেনি খেলাঘরের স্কোরবোর্ডে। ৫০ ওভার শেষে দলটির পুঁজি ছিল চার উইকেট হারিয়ে ২৫৯ রান।
জবাব দিতে নেমে রূপগঞ্জকে দারুণ সূচনা এনে দেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। আব্দুল মাজিদ ৯ রানের জন্য দেখা পাননি অর্ধশতকের। ৪১ রান করে ফিরেছেন মাজিদ, সালাউদ্দিন পাপ্পুর সংগ্রহ ছিল ৩৫ রান। বাকি পথটা রূপগঞ্জ সহজেই পাড়ি দেয় দুই ‘নাঈম’-এর ব্যাটে ভর করে।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে অধিনায়ক নাঈম ইসলাম জুটি বাঁধেন মোহাম্মদ নাঈমের সঙ্গে। দুজনের গড়া ১৪৪ রানের জুটিতেই জয়ের সুবাস পেতে থাকে রূপগঞ্জ। মোহাম্মদ নাঈম ফিরেছেন দলের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮২ রান করে। ৯৬ বলে সাতটি চার আর দুই ছয়ে সাজিয়েছিলেন নিজের ইনিংস।
অন্যদিকে ফিরে যাওয়ার আগে নাঈম ইসলামের ব্যাট থেকে আসে ৬৪ বলে ৭০ রানের ইনিংস। ২১ বল আগেই রূপগঞ্জ দেখা পেয়ে যায় টুর্নামেন্টের পঞ্চম জয়ের। মোহাম্মদ নাঈম নির্বাচিত হন ম্যাচ সেরা ক্রিকেটার হিসেবে।
দিনের অন্য ম্যাচে শেরেবাংলায় প্রথমে ব্যাট করে করে শেখ জামাল স্কোরকার্ডে ২৬২ রানের পুঁজি গড়ে। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হাসানুজ্জামান ৬১ রান করেন। দলের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭৯ রান আসে জিয়াউর রহমানের ব্যাট থেকে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন শাইনপুকুরের হয়ে জোড়া উইকেট নেন।
নিজেদের ইনিংসে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শাদমান ইসলামের অপরাজিত শতকে শেখ জামালের দেওয়া লক্ষ্য সহজেই পেরিয়ে যায় শাইনপুকুর। ১৪৭ বলে নয়টি চার আর দুটি ছয়ে এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের সংগ্রহ হার-না-মানা ১৪৪ রান। তৌহিদ হৃদয়ও অপরাজিত থেকে যান ৫০ রানে। নয় বল আগেই নবাগত দলটিকে আট উইকেটের বড় জয় এনে দিয়েই মাঠ ছেড়েছেন দুই তরুণ ব্যাটসম্যান। পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে যাওয়ার দিনে শাইনপুকুরের শাদমানের হাতে তুলে দেওয়া হয় ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
ফতুল্লায় আরেক ম্যাচে ব্রাদার্সের হয়ে জুনায়েদ সিদ্দিকী দেখা পেয়েছেন সেঞ্চুরির। তবে তাঁরই সতীর্থ মাইশুকুর রহমান পুড়েছেন শতক বঞ্চিত হওয়ার আক্ষেপে। জুনায়েদের ১১১ বলে ১২৩ রান এসেছে ১৬টি চার আর দুটি ছয় হাঁকিয়ে। অন্যদিকে শতক থেকে চার রান দূরে থাকতে সাজঘরের পথ ধরা মাইশুকুর ১২১ বলে ছয়টি চার আর তিনটি ছয়ে করেছেন ৯৬ রান। দারুণ দুই ইনিংসের পাশাপাশি দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দুজন মিলে করেছেন ২০৫ রান। জুনায়েদ-মাইশুকুরের ব্যাটে ভর করে নিজেদের ইনিংসে ব্রাদার্স পেয়েছিল ৩১৭ রানের বিশাল সংগ্রহ।
জবাবে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি কলাবাগান। আগের ম্যাচে শতক হাঁকানো মোহাম্মদ আশরাফুল ছয় বল খেলে এদিন ফিরেছেন একদম শূন্য হাতেই। কলাবাগান অধিনায়ক মুক্তার আলীই ৬২ রানের ইনিংসে যা একটু ব্যাট হাতে লড়েছেন। ১৮৬ রানে প্রতিপক্ষকে থামিয়ে ব্রাদার্স পেয়েছে ১৩১ রানের বিশাল জয়। সোহরাওয়ার্দি শুভ নিয়েছেন তিন উইকেট। ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ের নামটা জুনায়েদ সিদ্দিকী।