ছোট পুঁজি গড়েও জয় পেয়েছে রূপগঞ্জ
ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে(ডিপিএল) জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। সুপার লিগের তৃতীয় ম্যাচে অল্প সংগ্রহেও খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতিকে হারিয়েছে দলটি। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে জিতেছে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব। অন্যদিকে আবাহনী লিমিটেড পরাজিত করেছে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টস ক্লাবকে।
ফতুল্লায় আগে ব্যাট করা রূপগঞ্জকে দুইশো পেরোনো পুঁজি এনে দেন লেজের ব্যাটসম্যানরা। টপঅর্ডার ও মিডলঅর্ডারের ব্যর্থতায় মাত্র ৮৬ রানেই ছয় উইকেট হারিয়েছিল রূপগঞ্জ। অষ্টম উইকেট জুটিতে ৫০ রান যোগ করেন নাজমুল মিলন ও আসিফ হাসান।
মিলনের ব্যাট থেকে আসে ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৬ বলে অপরাজিত ৬৩ রান। অধিনায়ক নাঈম ইসলামের ৩৩, মোশাররফ রুবেলের ২৬ আর আসিফের ২০ রানে নির্ধারিত ওভার শেষে রূপগঞ্জের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেট হারিয়ে ২১৬ রান। খেলাঘরের হয়ে চার উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সাদ্দাম।
ছোট পুঁজি নিয়েও রূপগঞ্জের বোলাররা চালিয়ে যান লড়াই। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ব্যাটে পাল্টা জবাব দিতে থাকে খেলাঘরও। শেষ পর্যন্ত আর লাভ হয়নি অবশ্য। ১০৫ বলে ৭৭ রান করে অঙ্কন ফিরে গেলে আর দাঁড়াতে পারেনি প্রথমবারের মত ডিপিএল সুপার লিগে উঠে আসা খেলাঘর। ১২ রানের জয় নিয়েই মাঠে ছাড়ে রূপগঞ্জ। ম্যাচ সেরার পুরস্কার যায় মিলনের হাতে।
বিকেএসপিতে লিস্ট ‘এ’র রেকর্ড গড়া পুঁজিতেও আবাহনী ম্যাচ জেতেনি সহজে। প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব হেরেছে, তবে আবাহনীর ঘাম ঝরিয়েই। ম্যাচে দেখা মিলেছে মোট চারটি শতকের। দুই দল থেকেই এসেছে জোড়া শতক।
প্রথম ব্যাট করা আবাহনী এনামুল হক বিজয় ও নাজমুল হোসেন শান্তর জোড়া সেঞ্চুরিতে গড়ে চার উইকেটে ৩৯৩ রানের পর্বত। আবাহনীকে বড় পুঁজির ভিতটা গড়ে দিয়েছে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এনামুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৩৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে তাঁরা গড়েছেন যে কোন উইকেট জুটিতে এবারের ডিপিএলে সর্বোচ্চ রান।
দুজনই দেখা পেয়েছেন শতকের। ১২৬ বলে সাত চার আর ছয় ছক্কায় আনামুলের সংগ্রহ ১২৮ রান। অন্যদিকে শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে ১০৬ বলে ১২ চার আর দুই ছক্কায় ১২১ রান।
এছাড়া দারুণ ফর্মে থাকা ভারতীয় ব্যাটসম্যান হানুমা বিহারি আর মোহাম্মদ মিঠুনের ঝড়ো দুই ইনিংসও আবাহনীকে সহায়তা করে রেকর্ড সর্বোচ্চ সংগ্রহ গড়তে। সাত চার আর দুই ছয়ে বিহারি খেলেছেন ৩৬ বলে ৬৬ রানের মারকুটে ইনিংস। অন্যদিকে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাঁচ চার আর দুই ছয়ের মারে মিঠুনের সংগ্রহ ২৪ বলে অপরাজিত ৪৭ রান।
জবাব দিতে নেমে শুরুতেই দুই উইকেট খুইয়ে বসলেও দোলেশ্বরকে এগিয়ে নেন ফজলে মাহমুদ ও মার্শাল আইয়ুব। এই দুজন গড়েন ২০৭ রানের জুটি। সেঞ্চুরির দেখা পান দুজনই। এরপরেই মাঠে নামে বৃষ্টি। খেলা যখন আবার শুরু হয় দোলেশ্বরের জন্য নতুন লক্ষ্য। তবে ২৬৪ রানের জবাবে ২৪৪ রান করতেই শেষ হয়ে যায় দোলেশ্বরের জন্য নির্ধারিত ওভার। ২০ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আবাহনী।
শতক পেয়েই ফিরে গিয়েছেন মাহমুদ। ৮৭ বলে নয় চার আর তিন ছয়ে করেছেন ১০০ রান। তবে মার্শাল আইয়ুব রয়ে গিয়েছিলেন অপরাজিতই। ৮৮ বলে নয় চার আর তিন ছয়ে মার্শালের সংগ্রহ ছিল হার-না-মানা ১০৮ রান।
অন্যদিকে, শেরেবাংলায় বৃষ্টি আইনে বর্তমান শিরোপাধারী গাজী গ্রুপকে আট রানে হারিয়েছে শেখ জামাল। প্রথমে ব্যাট করে জিয়াউর রহমানে ভর করে সবকটি উইকেট হারিয়ে শেখ জামাল স্কোরকার্ডে তোলে ২৪৮ রান। ৭৪ বলে ৮০ রানের ঝড়ো ইনিংস আসে জিয়ার ব্যাট থেকে। আবু হায়দার রনি নেন চার উইকেট।
জবাব দিতে নেমে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ৪৭ ওভারে ২১৭ রান তুলতেই নামে বৃষ্টি। প্রচন্ড বৃষ্টিতে মাঠে আর এক বলও গড়াতে পারেনি। ফলে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ম্যাচ জিতে নেয় শেখ জামাল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬১ রান আসে জাকির ব্যাট থেকে। রবিউল হক শেখ জামালের পক্ষে শিকার করেন তিন উইকেট। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন জিয়া।