প্রত্যাশার কতটুকু পূরণ করতে পারলেন হামজা-শমিতরা?

দেশের ফুটবলে নতুন জোয়ার আনার কারিগর হামজা চৌধুরী, শমিত সোম, ফাহমিদুল ইসলামরা। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সবারই গায়ে জড়ানো হয়েছে লাল-সবুজের জার্সি। এ ম্যাচে এই তারকাদের নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশাও ছিল আকাশচুম্বি। সেই প্রত্যাশার কতটুকু পূরণ করতে পারলেন তারা?
গতকাল মঙ্গলবার স্বাভাবিকভাবে শুরুর একাদশে ছিলেন হামজা। তার সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছিলেন শমিত, ফাহমিদুলও। দ্বিতীয়ার্ধে ফাহমিদুলকে কোচ উঠিয়ে নিলেও পুরো ৯০ মিনিট খেলেছেন হামজা আর শমিত।
এ ম্যাচ দিয়েই প্রথমবার বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন শমিত। কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলা এই তারকাকে নিয়ে ভক্তদের প্রত্যাশাও ছিল অনেক। তাদের হতাশ করেননি তিনি। ঘরের মাঠে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন তিনি। বেশ কয়েকবার দর্শকদের উৎসবের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন। যদিও ফরোয়ার্ড পজিশনে থাকা খেলোয়াড়রা সেটাকে কাজে লাগাতে পারেনি। প্রথমার্ধেই অন্তত ৩-৪টি গোলের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন শমিত। দল হারলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে তিনি ছিলেন উজ্জ্বল।
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বড় নাম ছিলেন হামজা চৌধুরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা এই ফুটবলারের প্রতি বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমীদের প্রত্যাশ এভারেস্টসম। ইতোমধ্যে লাল-সবুজের জার্সিতে ভারত ও ভুটান ম্যাচে সেটা পুরণও করেছেন তিনি। গতকাল সিঙ্গাপুর ম্যাচেও খারাপ করেননি হামজা। কিছু দুর্বলতা ছিল। তবে মাঝমাঠের নতুন সঙ্গী মোহাম্মদ হৃদয়ের সঙ্গে বোঝাপড়ার ঘাটতির কারনেই সেগুলো হয়েছে।
গতকাল ভক্তদের নজর ছিল আরেক ফুটবলার ফাহমিদুল ইসলামের ওপর। তাকে দলে ভেড়াতে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছিল ফুটবল প্রেমীদের। উন্মাদনার এ খারাপ করেননি তিনি। উইংয়ে তার স্বভাব সূলভ গতিতে পরাস্ত করার চেষ্টা করেছেন প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের। তবে মেজাজের ভারসাম্যতা ঠিক রাখতে পারেননি ফাহমিদুল। বেশ কয়েকবার মেজাজ হারাতে দেখা গেছে তাকে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও পরিপক্ক হবেন তরুণ এই ফুটবলার। সেই প্রত্যাশা ফুটবল প্রেমীদের।
সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে হাতে গোনা কয়েকদিন অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। এই তিন ফুটবলারের এক সঙ্গে ম্যাচ খেলাও এটাই প্রথম। ফুটবলে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া থাকাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন। সেজন্য প্রয়োজন একসঙ্গে দলের দীর্ঘ সময়ের অনুশীলন এবং ম্যাচ খেলা। যেটি সবে শুরু হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে নিজের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেছেন শমিত। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের ফুটবল সবেমাত্র শুরু হচ্ছে।’ শমিতের এই কথাই বিশ্বাস করেন দেশের কোটি ফুটবল ভক্ত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব ফুটবল বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিবেন তারা।