ঈদের পর কারখানা খোলা রাখার দাবি জানিয়েছে এফবিসিসিআই

Looks like you've blocked notifications!
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআই।

উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল রাখতে ঈদ পরবর্তীতে কঠোর লকডাউনের মধ্যে শিল্প-কারখানাকে বিধি-নিষেধের বাইরে রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)।

 

আজ রোববার এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কোভিডজনিত বিধি-নিষেধের আওতায় শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখা হলে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রাণশক্তি উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং সাপ্লাই চেইন সম্পূর্ণভাবে বিঘ্নিত হবে। এতে উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বিশেষ করে, খাদ্যসামগ্রী, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, বোতলজাত পানীয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ইত্যাদি উৎপাদন বন্ধ থাকলে ভোক্তা সাধারণ সমস্যার সম্মুখীন হবেন। পণ্যসামগ্রী সঠিকভাবে সরবরাহ ও বাজারজাত না হলে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাবে। এতে স্বল্প আয়ের ক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হবেন।  

 

জসিম উদ্দিন দাবি করেন, রপ্তানি খাতের উৎপাদন ব্যবস্থা বন্ধ থাকলে সময়মতো পরবর্তী সময়ে রপ্তানি অর্ডার অনুযায়ী সাপ্লাই দেওয়া সম্ভব হবে না। এতে রপ্তানি অর্ডার বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঈদের ছুটিসহ প্রায় ১৮ থেকে ২০ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে এক অনিশ্চয়তার মাঝে লেইট সামার, ক্রিসমাস ও বড়দিন এবং আগামী শীতের কার্যাদেশসমূহ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এক মাসের রপ্তানি শিডিউল বিঘ্নিত হলে পরবর্তীতে ছয় মাসের রপ্তানি শিডিউলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেইসঙ্গে উৎপাদন বন্ধ থাকলে আমদানিকৃত কাঁচামাল অব্যবহৃত হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, এর ফলে আমদানিকারক ও উৎপাদক উভয়ই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এদিকে, ক্ষুদ্র ও ছোট কারখানা বন্ধ রাখা হলে উদ্যোক্তা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং কারখানা পুনরায় চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারর্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ টেরি-টাওয়েল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ রপ্তানি ও উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন, চেম্বার শিল্প-কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এফবিসিসিআইয়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

কোভিড বিস্তার রোধে জারিকৃত বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত সার্কুলারে ওষুধ কারখানার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই। যদি ওষুধ কারাখানা বন্ধ রাখা হয় তবে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। অপরদিকে ট্যানারি কারখানা বন্ধ রাখা হলে কোরবানি ঈদে সংগৃহীত চামড়া সংরক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে জীবনরক্ষাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হলে খাদ্যপণ্যসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে সবাই বঞ্চিত হবেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় বিদ্যমান অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রয়েছে এবং জাতীয় প্রবৃদ্ধি ছয় দশমিক এক শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যদি উৎপাদন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয় তাহলে অর্থনীতির চলমান গতিধারা ব্যাহত হবে। জীবন-জীবিকার মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উৎপাদন ব্যবস্থাকে চলমান রাখা জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন।