কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলনেও চাষিদের মুখে নেই হাসি
কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষক প্রতিবিঘা জমি থেকে তুলছে ৬০ থেকে ৭০ মণ পেঁয়াজ। কিন্তু এ সাফল্যেও হাসি নেই তাদের মুখে। বাম্পার ফলন ও বিদেশ থেকে আমদানির ফলে পেঁয়াজের দাম নেমে এসেছে ১৫ থেকে ১৭ টাকা কেজি দরে।
এতে চরম লোকসানে পড়েছে জেলার পেঁয়াজচাষিরা। এখন এক কেজি চাল কিনতে কৃষকের বিক্রি করতে হচ্ছে প্রায় তিন কেজি পেঁয়াজ।
সংকট ও বাজারের অস্থিরতা কাটাতে সরকারই কৃষকদের পেঁয়াজ চাষে উৎসাহী করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সাফল্যও দেখিয়েছে তারা।
কুষ্টিয়ায় খেতজুড়ে এখন কৃষকদের পেঁয়াজ তোলায় ব্যস্ততা। প্রতি বিঘায় কৃষক পেঁয়াজ তুলছে ৬০ থেকে ৭০ মণ। কিন্তু চড়া দামের পেঁয়াজের বাজার হঠাৎ করেই নিম্নমুখী। প্রতি কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষকের খরচ যেখানে প্রায় ২০ টাকা, সেখানে দাম পাচ্ছে মাত্র ১৫ থেকে ১৭ টাকা।
বিদেশ থেকে আমদানির ফলে কষ্টার্জিত পেঁয়াজের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না—এমন দাবি করে জেলার পেঁয়াজচাষিরা জানান, আষাঢ় মাস পর্যন্ত পেঁয়াজ রেখে বিক্রি করলে দাম পাওয়া যাবে। কিন্তু সংরক্ষণের জায়গা না থাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে এখনই। এতে চরম লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। এক কেজি চাল কিনতে কৃষকের বিক্রি করতে হচ্ছে তিন কেজি পেঁয়াজ। বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পাশাপাশি সরকারিভাবে পেঁয়াজ সংরক্ষণের দাবি তাদের।
এদিকে বিদেশ থেকে আমদানির ফলে চাষিদের পাশাপাশি পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন চরম লোকসানে।
জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশের যে পাঁচটি জেলায় বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, তার একটি হচ্ছে কুষ্টিয়া। এ জেলায় এবার পেঁয়াজের চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি।
পেঁয়াজ চাষিদের একটু অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক বিষ্ণুপদ সাহা বলেন, কৃষিবান্ধব সরকার পেঁয়াজচাষিদের রক্ষায় অবশ্যই একটি সঠিক পদক্ষেপ নেবেন। কৃষি অধিদপ্তরের সার্বিক প্রচেষ্টায় জেলায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর পেঁয়াজের কোনো সংকট হবে না।
এদিকে কুষ্টিয়া জেলার বেশিরভাগ কৃষকের বাড়ির আঙিনাজুড়ে এখন পেঁয়াজের গাদা। দুই বছর ধরে চলা পেঁয়াজের বাজারের অস্থিরতা কাটাতে এবার চাষিরা পেঁয়াজ চাষে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে। তাই পেঁয়াজচাষিদের রক্ষায় সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে এমটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।