লাখপতির গল্প
কেউই চায়নি উদ্যোক্তা হই, এখন লাখপতি : সাবিকুন্নাহার

উদ্যোক্তা সাবিকুন্নাহার। তাঁর অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মেহের কালেকশন বিডি’। দেশীয় সব ধরনের থ্রি-পিস নিয়ে কাজ করেন। পাশাপাশি কিশোরগঞ্জের বিখ্যাত প্যারা মিষ্টি নিয়েও কাজ করছেন। একসময় কেউ চাইত না সাবিকুন্নাহার উদ্যোক্তা হোন। সেই সাবিকুন্নাহার এখন লাখপতি।
সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় সাবিকুন্নাহারের। জানান তাঁর উদ্যোক্তা-জীবনের কথা। কত দিন এ সেক্টরে কাজ করছেন আর কেমনই বা সাড়া পাচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নাম মেহের কালেকশন বিডি (Meher collection BD)। আমি দেশীয় সব ধরনের থ্রি-পিস নিয়ে কাজ করছি। পাশাপাশি আমাদের কিশোরগঞ্জের বিখ্যাত প্যারা মিষ্টি নিয়েও কাজ করছি। আমি আমার উদ্যোগ শুরু করি ২০২০ সালের জানুয়ারির ২৮ তারিখ। কিন্তু আমার কাজ তখন বন্ধ ছিল। কারণ, আমি অনলাইন বিজনেস সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলাম। তারপর ২০২০ সালের জুনের ১০ তারিখ উই-এ (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) জয়েন করার পর আমি আমার উদ্যোগ নিয়ে ভাবতে শুরু করলাম। উই-এ অ্যাকটিভ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। অ্যাকটিভ থাকার তিন মাসের মাথায় আমার সেল শুরু হয়। আলহামদুলিল্লাহ, নতুন ব্যবসা হিসেবে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি।’

আপনার অনুপ্রেরণা কারা ছিল এই কাজে? সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘আমি অনার্স কমপ্লিট করে মাস্টার্সে পড়ছি। আমার চাকরির প্রতি আগ্রহ খুব কম। কারণ, কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম আমার ভালো লাগে না। বরাবরই স্বাধীনচেতা আমি। তাই উদ্যোক্তা-জীবনটা আমার জন্য বেস্ট। উদ্যোক্তা হয়ে আমি খুব খুশি। আমি উই-এর অনেক আপুদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। বিশেষ করে নাসিমা আক্তার নিশা আপু আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আপু যেভাবে আমাদের জন্য ভাবেন, আমাদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করছেন, আমাদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য সব রকম সাহায্য করছেন, তা সত্যিই গর্বের বিষয়।’
পরিবার থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? এনটিভি অনলাইনের এ প্রশ্নের জবাবে সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘প্রথমে আমার পরিবারের কেউ রাজি ছিল না যে আমি উদ্যোক্তা হই। তারা বরাবরই চেয়েছিল, আমি ভালো একটা জব করি। এ ক্ষেত্রে আমাকে একটু কষ্ট করে সবাইকে ম্যানেজ করতে হয়েছে। যখন উই-এ সেল শুরু হয়, তখন থেকে তাদের ধারণা পাল্টাতে শুরু করে। আলহামদুলিল্লাহ, এখন ভালোই সাড়া পাচ্ছি।’

সাবিকুন্নাহারের উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম বা উই-এর ফেসবুক গ্রুপের ভূমিকা অনেক। এ প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলেন, ‘উই নিয়ে যত বলব, ততই কম বলা হবে। উই না থাকলে আমি আমার স্বপ্ন পূরণের কথা চিন্তাও করতে পারতাম না। উই-এ লাখো নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন। বেশির ভাগ নারীই উই-এ এসে উদ্যোক্তা হয়েছেন। উই-এর মাধ্যমেই আমার উদ্যোগ শুরু। আমার মতো আরও অনেকেরই স্বপ্ন পূরণের প্ল্যাটফর্ম উই। করোনাকালে উই মানুষের সঙ্গী হয়ে উঠেছে, জীবিকা নির্বাহের উপায় হয়ে উঠেছে। উই ছাড়া এসব সম্ভব হতো না। আমরা উই, নাসিমা আক্তার নিশা আপু আর রাজিব আহমেদ স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞ। উনারা না থাকলে উই-কে আমরা পেতাম না।’
বলা হয় অনেকে লাখপতি? আপনি হতে পেরেছেন? সাবিকুন্নাহারের জবাব, ‘উই-তে লাখপতি আপুদের সংখ্যা ৩০০ জনের ওপরে। আমিও সেই কাতারে নিজের নাম লিখিয়েছি।’
এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সাবিকুন্নাহারের পণ্য বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে।