গত বছর ৪০৮ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বেজা

Looks like you've blocked notifications!

কোভিড ১৯ মহামারি সত্ত্বেও বিনিয়োগের প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের সুবাদে ২০২০ সালে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) প্রায় ৪০৮ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে। বেজা সারা দেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে। বিনিয়োগ প্রস্তাবগুলোর মধ্যে বেজা কোভিড ১৯ মহামারিকালে প্রায় ৩১৫ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।

৩১৫ কোটি ডলারের মধ্যে ৫৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্য থেকে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এএফডিআই) হিসেবে আসবে। সরাসরি প্রধান বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্যের বার্জার পেইন্ট, চীনের জিয়াংসু ইয়াবাং ডাইয়েস্টাফ কোম্পানি লিমিটেড, জাইহংগ মেডিকেল প্রোডাক্টস (বিডি) কোম্পানি লিমিটেড এবং সিসিইসিসি বাংলাদেশ লিমিটেড অব চায়না, ভারতের রামকে ইনভিরো সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড, জার্মান এবং ভারতের যৌথ বিনিয়োগ কোম্পানি ফরটিস গ্রুপ, অস্ট্রেলিয়ার এইচএ টেক লিমিটেড, নেদারল্যান্ডের লিজার্ড স্পোর্টস বিভি এবং সিঙ্গাপুরের ইন্টার-এশিয়া গ্রুপ লিমিটেড।

স্থানীয় বিনিয়োগ প্রস্তাবকারীদের মধ্যে রয়েছে মেট্রো স্পিনিং লিমিটেড, ম্যাকসনস স্পিনিং অ্যান্ড টেক্সটাইলস, সামুদা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড, উত্তরা মোটরস লিমিটেড, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচার অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), সাইমান বিচ রিসোর্ট লিমিটেড, মাফ সুজ লিমিটেড, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিস অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাচারর্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ), এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, রানার মোটরর্স লিমিটেড, সাইফ পাওয়ারটেক, ডেল্টা ফার্মা লিমিটেড এবং এশিয়া কম্পোজিট মিলস লিমিটেড।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বাসসের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, এ সব বিনিয়োগ প্রস্তাব ছাড়াও অনেক বিশ্বখ্যাত কোম্পানি বড় ধরনের বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে আসছে। তিনি বলেন, কোভিড ১৯ মহামারিকালে বিনিয়োগ প্রস্তাব প্রমাণ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক জোন বিনিয়োগের জন্য বৃহত্তম জায়গা। স্থিতিশীলতা এবং বর্তমান সরকারের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর (বিএসএমএসএন) বিনিয়োগের আদর্শ স্থান হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠার কারণে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখানে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠছেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএসএমএসএন এ বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী বছর শিল্পকারখানার জন্য বিনিয়োগকারীদের ভূমি বরাদ্দ দেওয়া বেপজার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। বিএসএমএসএন হবে বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যের পরবর্তী রাজধানী।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, দেশি- বিদেশি অনেক উদ্যোক্তা ইতোমধ্যেই ইকোনমিক জোনগুলোতে তাদের শিল্প ইউনিট স্থাপনের কাজ শুরু করেছে, অনেকে কারখানা স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইকোনমিক জোনগুলোতে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইকোনমিক জোনে দেশি ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারী সমান সুযোগ সুবিধা পাবে।’ তিনি বলেন, বেজা পরিচালনা বোর্ড ইতোমধ্যেই দেশে ৯৭টি অর্থনৈতিক জোনের জন্য স্থান ও ভূমি বরাদ্দ দিয়েছে, এরমধ্যে ৬৮টি সরকারি অর্থনৈতিক জোন এবং ২৯টি বেসরকারি জোন। জোনগুলোর মধ্যে দুটি সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব অর্থনৈতিক জোন, চারটি সরকার টু সরকার অর্থনৈতিক জোন এবং তিনটি ট্যুরিজম পার্ক। ইতোমধ্যেই পাঁচটি অর্থনৈতিক জোনে (বিএসএমএসএন, মহেশখালী, শ্রীহট্ট, জামালপুর অর্থনৈতিক জোন এবং সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক) ১৭২টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সাত হাজার ৩১৫ একর ভূমি লিজ বরাদ্দের জন্য নির্ধারিত হয়েছে। এতে ২৩.৯৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হচ্ছে।

পবন চৌধুরী বলেন, পাশাপাশি বেসরকারি অর্থনৈতিক জোনে ৩১০ কোটি ডলার বিনিয়োগ হচ্ছে, এতে মোট বিনিয়োগ প্রস্তাবের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭.০৭ বিলিয়ন ডলার। প্রস্তাবিত বিনিয়োগে সরাসরি প্রায় ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে।