লাখপতির গল্প
গুঁড়ো মসলা বেচে মাসে লাখ টাকা আয় ফেরদৌস আক্তারের
নারী উদ্যোক্তা ফেরদৌস আক্তার। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থেকে কাজ করছেন গুঁড়ো মসলা নিয়ে। অনলাইনে পণ্য বেচে এখন এ উদ্যোক্তা মাসে লাখ টাকা আয় করেন।
সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় ফেরদৌস আক্তারের। জানান তাঁর উদ্যোক্তা-জীবনের কথা। বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নাম কুক মাসালা (Cook Masala)। চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানার পোমরা গ্রাম থেকে আমি উই-এর (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করছি। আমার উদ্যোক্তা-জীবন শুরু হয়েছে প্রায় ১০ মাস। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো সাড়া পাচ্ছি, আমার ভাবনা থেকেও অনেক বেশি। আমার প্রতিষ্ঠান কুক মাসালার প্রডাক্ট দেশের ৩৪টি জেলায় ছড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও সুনাম অর্জন করেছে।’
উদ্যোক্তা হতে কারা অনুপ্রেরণা ছিল? এনটিভি অনলাইনের এমন প্রশ্নের জবাবে ফেরদৌস আক্তার বলেন, ‘আমি একজন নারী, এই পরিচয় দিতে একসময় দ্বিধা কাজ করত, কিন্তু এর সঙ্গে উদ্যোক্তা শব্দটি যোগ হয়েছে। আর আজ নারী উদ্যোক্তা পরিচয় দিতে আমার অহংকার এবং গর্ব বোধ হয়। কারণ, আজ আমি বোঝা থেকে নিজেকে সম্পদে পরিণত করেছি। আমার এই কাজে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার বড় আপা। আমি যখন কাজ শুরু করি, তখন আমার আত্মীয়-স্বজন অনেক বাজে কথা বলেছিল। সেসব বাজে কথা এবং ঝামেলা থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে আমার বড় আপা, যাঁকে আমি সম্প্রতি হারিয়ে ফেলেছি।’
পরিবার থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? ফেরদৌস আক্তার বলেন, ‘পরিবার থেকে আলহামদুলিল্লাহ ভালোই সাড়া পাচ্ছি। আমার পরিবারের সবাই আমাকে সাপোর্ট ও সহযোগিতা করে। তাদের সহযোগিতা ছিল বলেই এতটুকু আসতে পেরেছি, বিশেষ করে আমার স্বামী আমাকে খুব সহযোগিতা করে।’
উই-এর ফেসবুক গ্রুপ এ কাজে ফেরদৌসকে বেশ সহযোগিতা করেছে। বলেন, ‘নারী উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পূরণের প্ল্যাটফর্ম উই না থাকলে আমার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন জন্মই নিত না। উই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ার পর রাজিব আহমেদ স্যারের অনুপ্রেরণায় আমার ভেতর উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন জন্ম নিয়ে থাকে এবং উই-এর প্রেসিডেন্ট নাসিমা আকতার নিশা আপু উই প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করেছেন বলে এই স্বপ্নের জন্ম ও বাস্তবায়ন হয়েছে।’
ফেরদৌস জানান, ঈদকে সামনে রেখে আরও আগে থেকেই গুঁড়ো মসলার সাথে কাপড় নিয়েও কাজ শুরু করেন। বিশেষ দিনগুলোতে তাঁর পণ্যের চাহিদা বাড়ে। বাঙালিরা বিশেষ দিনে খাবারের আয়োজন করে বেশি, তাই উৎসবে মসলাজাতীয় পণ্যের চাহিদা খুব বেড়ে যায়। শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ টাকার গুঁড়ো মসলা বিক্রি করেছেন।
উদ্যোক্তা হওয়ার পরে মধুর কোনো স্মৃতি? ফেরদৌস আক্তার বলেন, ‘উদ্যোক্তা হওয়ার পর আমার জীবনের মধুর স্মৃতি হলো, আমি আমার শ্রমের টাকা দিয়ে আমার প্রিয়জনদের এবং আমার সংসারের জন্য ইচ্ছেমতো খরচ করতে পারি। আমার পরিবারের সাপোর্ট আমার পাশে ছিল বলে আজ আমি এতটুকু আসতে পেরেছি। তারা পাশে না থাকলে কখনও এতটুকু পথ আসতে পারতাম না।’
আয় কেমন ও প্রতিষ্ঠানে কত জন কাজ করেন? ফেরদৌস আক্তার বলেন, ‘আমার উদ্যোক্তা-জীবনের প্রায় ১০ মাস। আমার এখন প্রতিমাসে আয় লাখ টাকা। তবে কর্মী চার জন।’
ফেরদৌস আক্তারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো, কুক মাসালা প্রতিষ্ঠানের নামে একটা ফ্যাক্টরি চালু করা। তাঁর এ স্বপ্ন পূরণ হোক, এ প্রত্যাশা সবার।