লাখপতির গল্প

দুই বান্ধবী মৌ ও মিলা, যেমন চলছে ‘মৌমিলা’র ব্যবসা

Looks like you've blocked notifications!
সফল উদ্যোক্তা ইফফাত জাহান মিলা ও মৌ। ছবি : সংগৃহীত

দুজন পরম বন্ধু মৌ ও মিলা। একসঙ্গে ব্যবসা করছেন। তাঁদের অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান—মৌমিলা (MouMila)। অনলাইনে টাঙ্গাইলের শাড়ি বিক্রি করেই ভাগ্য পরিবর্তন দুজনের।

সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় দুই বান্ধবীর একজন ইফফাত জাহান মিলার সঙ্গে। জানান নিজের উদ্যোক্তা-জীবনের কথা। কেমন সাড়া পাচ্ছেন? উত্তরে মিলা বলেন, ‘আসলে আমি কাজ করছি এক বছর চার মাস। মূলত উই-এ (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) এসেই আমার কাজ করার আগ্রহ তৈরি হয়। সাড়া ভালোই পাচ্ছি। তবে পরিবেশ-পরিস্থিতির জন্য তেমন এগোতে পারছি না।’

কী কী পণ্য নিয়ে কাজ করছেন? মিলা বলেন, ‘আমি মূলত টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়ে কাজ করি। তবে আমার খুব ভালো লাগে ফ্যামিলি কম্বো নিয়ে কাজ করতে। আমি ফ্যামিলি সেট নিয়েও কিছু কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতে ইচ্ছে আছে এর ওপর ফোকাস করার।’

এই কাজে কারা আপনাকে সাহায্য করে? ইফফাত জাহান মিলা বলেন, ‘আসলে যে কোনও কাজই একটা টিম ওয়ার্ক। আর যেহেতু আমরা দুই বান্ধবী মিলে কাজটি করছি, এখানে আমরাসহ আমাদের পরিবারের সবাই মোটামুটি কাজে সহযোগিতা করে। এ ছাড়া আমাদের ডেলিভারি ম্যানরা আছেন। তাঁরাও আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেন।’

এই দেড় বছরে মৌমিলা থেকে এক লাখ ষাট হাজার টাকার মতো পণ্য বিক্রি হয়েছে। তো, পণ্যের মান কীভাবে রক্ষা করেন? উত্তরে মিলা বলেন, ‘আমি পণ্যের মানের ব্যাপারে আপসহীন। অনেক যাচাই-বাছাই করে পণ্য স্টক করি। যদি কোনও কারণে ভালো মানের পণ্য না পাই, তবে তা আনি না। আমি কাস্টমার ফেরত দিয়ে দিই, তবুও ভালো পণ্য ছাড়া পণ্য দিই না। আসলে বিজনেস তো আর একদিনের জন্য নয়।’

উই-এর ফেসবুক গ্রুপ মিলার উদ্যোক্তা-জীবনকে প্রভাবিত করেছে। উই সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো নারী উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পূরণের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে উই-এর জুড়ি নেই। আমরা যারা জানতামই না বিজনেস কী, কীভাবে করে, সিগনেচার পণ্য কী, পণ্য ফোকাস করা, পারসোনাল ব্র্যান্ডিং কী। উই বলতে গেলে সবই শিখিয়েছে। উই-এর মাধ্যমেই জেনেছি স্টোরি টেলিংয়ের মাধ্যমে পণ্য সেল করা। শুধু তা-ই নয়, উই আমাদের বিশ্বমানের মাস্টার ক্লাসের সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা ঘরে বসেই সব করতে পারছি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ওয়ার্কশপের মাধ্যমে আমাদের পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে শিখিয়েছে। এক কথায়, উই স্বপ্ন পূরণের সিঁড়ি।’

উদ্যোক্তা হতে পেরে কেমন লাগছে? ইফফাত জাহান মিলার ভাষ্য, ‘আমার কাছে তো খুব ভালো লাগছে। নিজের একটা আইডেনটিটি ক্রাইসিসে ভুগছিলাম। মনে হচ্ছে তা ফিরে পেয়েছি। অনুপ্রেরণা উই-এর উদ্যোক্তারা। যখন দেখলাম সবাই এভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তবে কেন আমি নই! এত এত সাকসেস স্টোরি, সত্যি এগুলো আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করেছে।’

আপনার মতো লাখপতি হতে চাইলে কী করতে হবে? মিলার জবাব, ‘লাখপতি হতে হলে আপনাকে নিয়মিত হতে হবে। পণ্যের মান ভালো হতে হবে। আর সবচেয়ে যেটা প্রয়োজন, আপনাকে কাস্টমারের প্রয়োজন বুঝতে হবে, তাদের সাথে কথা বলতে হবে। পণ্য পাঠিয়ে দিয়েই শেষ নয়, পণ্য হাতে পেল কি না, কাস্টমারের মনমতো হলো কি না; এ সব খোঁজখবর নিতে হবে। উদ্যোক্তার মনে রাখতে হবে—কাস্টমার পণ্য কেনে না, কেনে আবেগ।’ মিলার ভবিষ্যৎ ভাবনা একটাই, মৌমিলাকে সবাই এক নামে চিনবে। সে লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন।