লাখপতির গল্প

নিজের ডিজাইনের পোশাক বেচে লাখপতি রুমকি

Looks like you've blocked notifications!
সফল উদ্যোক্তা তামান্না তাসলিমা রুমকি। ছবি : সংগৃহীত

অনলাইনে নিজের ডিজাইনের পোশাক বেচে লাখপতি বনে গেছেন তামান্না তাসলিমা রুমকি। এ সেক্টরে তিনি কাজ করছেন পাঁচ বছর। এরই মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে এ উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠান—রুমকি’স ক্লোসেট।

সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় তামান্না তাসলিমা রুমকির। জানান তাঁর উদ্যোক্তা-জীবনের কথা। কুশল আর কী নিয়ে ব্যস্ত এখন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। যেহেতু আমি ডিজাইন বেইজড কাজ করি, সেহেতু ডিজাইন ডেভেলপ, ফেব্রিক ও ম্যাটারিয়াল কালেকশন নিয়ে একটু ব্যস্ত সময় পার করছি। আমার প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ অনলাইন ক্লদিং ব্র্যান্ড। যেখানে আমার নিজস্ব ডিজাইনের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, কুর্তি, ফ্যামিলি কম্বো সেট, বেবি ড্রেস নিয়ে কাজ করা হয়।’

কেমন সাড়া পাচ্ছেন? রুমকির উত্তর, ‘আমি প্রায় পাঁচ বছর ধরে কাজ করছি। আলহামদুলিল্লাহ, খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি, যেহেতু অনেক দিন যাবৎ কাজ করছি আর ডিজাইন বেইজড ও কাস্টমাইজড বেইজড কাজ করি, তাই দেশে ও দেশের বাইরে কাস্টমারদের কাছে একটা আস্থার জায়গা তৈরি করতে পেরেছি। এ কাজে আমার পরিবার আমাকে সব সময় সাপোর্ট করেছে ও করছে। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেই আমার কাজের ব্যাপারে অনেক উৎসাহ পেয়ে থাকি।’

উদ্যোক্তা হতে পেরে কেমন লাগছে? রুমকির জবাব, ‘একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আমি সব সময় গর্ব বোধ করি। আমার কাজের প্রথম অনুপ্রেরণা ছিল আমার হাজব্যান্ড, তার মেন্টাল সাপোর্ট ছাড়া আমি আসলে সামনে এগোতে পারতাম না। এর পর আমার বোন ও আমার মা। এই তিন জনের সাপোর্ট আর অনুপ্রেরণার জন্য আমি কাজগুলো করতে পেরেছি।’

উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম বা উই-এর ফেসবুক গ্রুপের ভূমিকা অনেক। সে প্রসঙ্গ তুলতেই রুমকি বলেন, ‘উই সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হবে উই মানে স্বপ্ন, উই মানে আস্থা, উই মানে ভরসা, উই মানে শিক্ষা, উই মানে সম্মানের সাথে সামনের পথে এগিয়ে যাওয়া। উই এ দেশের বহু নারীর স্বপ্ন পূরণ করেছে, তাদের ঘরে আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিয়েছে। উই আছে বলেই এ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা সামনে এগিয়ে আসার স্বপ্ন দেখছে, দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।’

রুমকি আরও বলেন, ‘আমি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে উই-এ যুক্ত হই। তার পর থেকে অনলাইন আড্ডা, মাস্টার ক্লাস, কোর্সগুলো করছি। তা ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসা রিলেডেট কিছু নির্দিষ্ট কোর্স করেছি। এতে আমি নিজেকে নতুনভাবে তৈরি করেছি, যা আমার জীবন ও ব্যবসায় একটা নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।’

কী পরিমাণ বিক্রি করেছেন এ পর্যন্ত? তামান্না তাসলিমা রুমকি বলেন, ‘আসলে ব্যবসা তো আমার প্রায় পাঁচ বছরের বেশি সময়ের। পুরো হিসাব আসলে এই মুহূর্তে বলা কঠিন। তবে গত ছয় মাসে প্রায় ছয় লাখের ওপর বেচাকেনা হয়েছে। মাসে আনুমানিক দেড় লাখ টাকার মতো বিক্রি হয়।’

ক্রেতা কেন আপনার পণ্য কিনবেন? উত্তরে রুমকি বলেন, ‘আমাদের পণ্য ইউনিক, আমরা দেশীয় বেস্ট কোয়ালিটির ফেব্রিক ইউস করি। তা ছাড়া সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, কাস্টমার তাঁর পছন্দ অনুযায়ী কালার, ডিজাইন কাস্টমাইজড করে আমাদের কাছ থেকে পণ্য তৈরি করে নিতে পারেন। আর পণ্যের মানে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। নিজের হাতে ডিজাইন করে পোশাক তৈরি করি। কাস্টমারের সন্তুষ্টিই আমার সন্তুষ্টি।’

রুমকির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শুনুন তাঁর ভাষ্যে, ‘আমি সব সময় স্বপ্ন দেখি দেশি পণ্যের একটা ডিজাইনার লাইফস্টাইল স্টুডিও করবার, যেখানে সবাই তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন সিলেকশন করে তাঁদের পছন্দের আউটফিট তৈরি করে নিতে পারবেন।’ রুমকির মতো আরও সফল উদ্যোক্তা আসুন দেশে, এ প্রত্যাশা সবার।