লাফিয়ে বাড়ছে মুরগির দাম, ঝাঁজ কম কাঁচামরিচ-পেঁয়াজে

Looks like you've blocked notifications!
ফাইল ছবি

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মুরগির দাম। স্থিতিশীল রয়েছে সবজির বাজার। ঝাঁজ কমেছে কাঁচামরিচ আর পেঁয়াজের। মুরগির বাজারে দুই জাতের মুরগির দাম গরুর মাংসকেও ছাড়িয়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সব মুরগির দাম বেড়েছে। সোনালি মুরগির কেজিপ্রতি দাম উঠেছে ৩৮০ টাকায়। এ দরে জীবন্ত মুরগি কিনলে শুধু মাংসের দাম দাঁড়ায় ৫৮০ টাকার মতো। বাজারে এর সমান দামে গরুর মাংসও পাওয়া যায়।

আজ শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশি মুরগির মাংসের দাম গরুর চেয়ে অনেকটা বেশি। জীবন্ত দেশি মুরগির কেজি ৫০০ টাকার মতো। চামড়া, পশম ও নাড়িভুঁড়ি বাদ দিলে শুধু মাংসের কেজি দাঁড়ায় সাড়ে ৭০০ টাকার মতো। আধা কেজি ওজনের একটি সোনালি জাতের মুরগির (চামড়া ছাড়ানো) দাম হাঁকানো হয়েছে ৩২০ টাকা। এর মানে হলো কেজি ৬৪০ টাকা। আর দেশি মুরগির কেজি দাঁড়াচ্ছে পৌনে ৮০০ টাকার মতো।

কয়েক মাস আগেও সোনালি জাতের দেশি মুরগির কেজি ছিল ২২০ টাকা। সে তুলনায় দাম বেড়েছে প্রায় ৭২ শতাংশ।  দেশি মুরগির কেজি ছিল ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা। দাম বেড়েছে ২৯ শতাংশের মতো। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে  ব্রয়লার মুরগিও। বাজারে  দুই মাস আগে যে মুরগির কেজি ১২০ টাকা ছিল, তা এখন ১৬৫ টাকা। খাসির মাংসের কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মুরগির দাম, ঝাঁজ কমেছে কাঁচামরিচ আর পেঁয়াজের। ছবি : সংগৃহীত

প্রতিবছর পবিত্র শবে বরাতের আগে ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম কিছুটা বাড়ে। তবে সোনালি ও দেশি মুরগির দাম খুব একটা বাড়তে দেখা যায় না। এবার সব ধরনের মুরগি ও গরুর মাংসের দাম বাড়ল।

গত সপ্তাহে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া বয়লার মুরগি এ সপ্তাহের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। আর, পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

শবেবরাতকে সামনে রেখে মুরগির দাম বাড়লেও স্বস্তি দিচ্ছে পেঁয়াজের দাম। হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পর গত সপ্তাহে দাম কমা পেঁয়াজের দাম নতুন করে আরও কমেছে। এতে দুই সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ২০ টাকা। এখন ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আর দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি।

পেঁয়াজের পাশাপাশি স্বস্তি দিচ্ছে রসুন, আদা, জিরা এবং ডিম। ফার্মের মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি আদা। জিরা পাওয়া যাচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি।

এদিকে,দুই সপ্তাহ আগে দুইশ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সজনের ডাটার দাম কমে একশ টাকায় চলে এসেছে। বাকি সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে স্থিতিশীল রয়েছে। তবে শশার দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শশার দাম বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে পটল ও ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২৫ টাকা। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মুরগির দাম, ঝাঁজ কমেছে কাঁচামরিচ আর পেঁয়াজের। ছবি : সংগৃহীত

এছাড়া বেগুনের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, গাজরের কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফুলকপি, বাঁধাকপির ও লাউয়ের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস।

কয়েকমাস ধরেই চালের দাম চড়া। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি হলেও চালের দাম কমেনি। খুচরা বাজারে ৬৩ টাকা পর্যন্ত কেজিতে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালও ৫০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দেখা যায়- প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬১ থেকে ৬৩ টাকা কেজিতে, নাজির ৬৪ থেকে ৬৬ টাকা আর আটাশ ৫০ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য মোটা চালের দামও ৫০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে, সপ্তাহ ব্যবধানে মাছের দামে তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি। বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, প্রতি কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পাঙাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা মাছ ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, টেংরা মাছ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ টাকা, সিলভার কাপ ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, দেশি কৈ মাছ ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।