লাখপতির গল্প
শখে শুরু, এখন মাসে ২০ হাজার টাকা আয় শিউলীর
শখের বশে অনলাইনে পোশাক বেচা শুরু করলেও এখন এটাই পেশা আফরোজা আক্তার শিউলীর। এরই মধ্যে লাখপতি বনে গেছেন। উপার্জন করে ‘গৃহিণী’ তকমা সরিয়ে ‘উদ্যোক্তা’ হয়ে খুশি শিউলী।
আফরোজা আক্তার শিউলীর অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের নাম—উযায়ের’স ক্রিয়েশন। ছেলের নামে এ প্রতিষ্ঠান। এ সেক্টরে কাজ করছেন প্রায় চার বছর। সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় শিউলীর। জানান নিজের উদ্যোক্তা-জীবন ও লড়াইয়ের কথা।
কুশল জানতেই শিউলী বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। কাজের চাপ অনেক। একহাতে সব কিছু করতে হয়, তাই বেশ ব্যস্ত।’
কত দিন ধরে এ সেক্টরে কাজ করছেন আর কেমন সাড়া পাচ্ছেন? উত্তরে শিউলী বলেন, ‘উযায়ের আমার ছেলের নাম, ওর নামেই আমার উদ্যোগ। আমি কাজ করছি ঢাকার যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ থেকে। আমার উদ্যোগের বয়স প্রায় চার বছর। শুরুতে টুকটাক সেল হলেও এখন শাড়ি-থ্রিপিস মিলে গড়ে প্রতি মাসে ৯০-১০০ পিস সেল হয়। শুরুটা শখের বশে হলেও বর্তমানে এটাই আমার পেশা।’
পরিবার থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? আফরোজা আক্তার শিউলী বলেন, ‘আমি ভীষণ লাকি যে পরিবারের সাপোর্ট আছে আমার সাথে। আমার বিজনেসের শুরু থেকে দুজন মানুষ আমাকে সব সময় উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন; আমার মা ও আমার স্বামী।’
উদ্যোক্তা হতে পেরে কেমন লাগছে? শিউলীর ভাষ্য, ‘জি, আমি খুবই খুশি। কারণ, আমার নামের পাশ থেকে হাউসওয়াইফ তকমাটা আমি সরাতে পেরেছি। আমার ননদের স্বামীর ঢাকার চাঁদনী চকে ভালো পজিশনে একটা দোকান ছিলে, সমস্যার কারণে চালু সেই দোকানটা তাদের ছেড়ে দিতে হয়। অনেক কাপড় তাদের স্টকে ছিল। আমি তখন দুদিনে তাদের প্রায় ২২ হাজার টাকার ড্রেস সেল করে দিই। তখনই মাথায় আইডিয়া আসে বিজনেস করার।’
আফরোজা আক্তার শিউলী তাঁতপণ্য, বুটিকস, বাটিক এবং হাতের কাজের পোশাক নিয়ে কাজ করছেন। এ ছাড়া ভারতীয় শাড়ি, থ্রিপিসও তাঁর সংগ্রহে রয়েছে।
উই-এর (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) ফেসবুক গ্রুপ শিউলীর উদ্যোক্তা-জীবনকে প্রভাবিত করেছে। উই সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উই আমাদের দেশে নারীদের জন্য আশীর্বাদ। এই গ্রুপটার কারণে কত মানুষ যে ডিপ্রেশন থেকে বের হয়ে আসছে, তা বলার নয়। বর্তমানে প্রত্যক্ষভাবেও অনেক মানুষের জীবিকার মাধ্যম উই।’
বলা হয়, অনেকে লাখপতি? আপনি হতে পেরেছেন? আফরোজা আক্তার শিউলী বলেন, ‘আমি উই-এ লাখপতি হয়েছি জয়েন করার সাত মাস পর। অন্যদের বলব, নিজের কাজকে ভালোবাসুন, সম্মান করুন এবং নিয়মিত লেগে থাকুন।’
পোশাক বেচে শিউলীর মাসে গড়ে লাভ থাকে ২০ হাজার টাকা, কোনো মাসে তারও বেশি। তাঁর পরিকল্পনা, নিজ বাসায় একটা শোরুম দেবেন আর আগামী এক বছরে অন্তত দুজন মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবেন। তাঁর ইচ্ছে পূরণ হোক, এ প্রত্যাশা সবার।