একটু বড় ইলিশ হলেই ইচ্ছামতো দাম

Looks like you've blocked notifications!

দেশের বিভিন্ন স্থানে পয়লা বৈশাখ উদযাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে কয়েক বছর ধরে বিবেচিত হয়ে আসছে পান্তা-ইলিশ। সেই বৈশাখ আসতে বাকি সাতদিন। কিন্তু এরই মধ্যে অনেকটা লাগামছাড়া জাতীয় মাছ ইলিশের দাম। ওজনে একটা ইলিশ এক কেজি হলেই ইচ্ছামতো দাম হাঁকাতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের।  

রাজধানীর শান্তিনগর ও মালিবাগ বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাঝারি ধরনের (এক কেজির কম) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। এক কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ওজন এক কেজির ওপরে হলেই বিক্রেতারা ইচ্ছামতো দাম হাঁকাচ্ছেন। একই বাজারে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে আকারভেদে ইলিশের দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে। এক কেজির ওপরের ইলিশ কেউ হাঁকাচ্ছেন দুই হাজার ২০০, আবার কেউ আড়াই হাজার।    

শান্তিনগর কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা মকবুল মিয়া জানান, গত সপ্তাহ থেকে ইলিশের দাম বেড়েছে। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামনে পয়লা বৈশাখ। এ কারণে বাজারে চাহিদা বেশি। আর এই সময়ে নদীতে ইলিশ ধরা নিষেধ। তাই বাজারে আমদানি কম থাকায় দাম বেশি। বাজারে যেসব ইলিশ আছে, তা সবই হিমায়িত বলেও জানান তিনি।  

বাজার ঘুরে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগেও এক কেজির কম ওজনের প্রতিটি বিক্রি হতো ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হতো ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায়। 

শান্তিনগর কাঁচাবাজারে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে কথা হয় এনটিভি অনলাইনের। তিনি বলেন, ‘এখন বাজারের অবস্থাটা দাঁড়িয়েছে যাচ্ছেতাই। যে যারমতো করে ব্যবসা করে যাচ্ছে। কারো কোনো নজরদারি নেই। এক সপ্তাহ আগে যে ইলিশ ৬০০ টাকায় কিনেছি, আজ তা দাম চাইছে দুই হাজারের ওপর। এটা কোন ব্যবস্থাপনার মধ্যে পড়ে?’

বাজার ঘুরে দেখা যায়, ইলিশ বাদে অন্যান্য মাছের দাম গত সপ্তাহের কাছাকাছি রয়েছে। আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ২৩০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, কাতলা ৩০০ থেকে ৪০০, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ২৫০, সিলভারকার্প ১৮০ থেকে ২৫০, চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১২০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া আকারভেদে চিংড়ি ৪০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
 
সবজির বাজার অপরিবর্তিত
মালিবাগ কাঁচাবাজারে দেখা যায়, সাদা বেগুন কেজিপ্রতি ৪০ টাকা, কালো বেগুন ৪৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম ৬০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, গাজর ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পটোল ও ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, ৭০ টাকা, করলা ৫০ টাকা ও আলু ১৫ থেকে ১৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 
এ ছাড়া দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ২২ টাকা, দেশি রসুন ১০০ টাকা, চীনা রসুন ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহেও এই পণ্যগুলোর দাম ছিল প্রায় একই।

দাম কিছুটা কম ব্রয়লারের
ব্রয়লার মুরগির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। সেটা আগে ছিল ১৬০ টাকা। বাজারে গরুর মাংস কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি লেয়ার মুরগি ১৬৫ টাকা, দেশি মুরগি হালিতে ৮০০ টাকা, পাকিস্তানি লাল মুরগি কেজিপ্রতি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
তবে চালের বাজারে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। প্রতি কেজি স্বর্ণা চাল ৪২ টাকা, নাজিরশাইল ও পারিজা চাল ৪২-৪৪ টাকা, মিনিকেট ৫৬ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৪২-৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।