মূসক নির্ধারণে বাজুসের হুঁশিয়ারি
অলংকার বিক্রির ওপর ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। দাবি না মানলে আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি। আজ শনিবার বাজুসের সভাপতি কাজী সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৪ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক আদেশের মাধ্যমে মূল্য সংযোজনের নির্ধারিত হারের ভিত্তি বিক্রি বাবদ পাওয়া অর্থের শতকরা ৩৩ দশমিক ৩৩ ভাগ এবং নিট মূসকের হার ৩ শতাংশের স্থলে ৫ শতাংশ ধার্য করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস উল্লেখ করেছে, বিগত পাঁচ-ছয় বছর ধরে সোনা ও রুপার দাম আন্তর্জাতিক বাজারে লাগামহীনভাবে বাড়ায় ও অর্থনৈতিক মন্দার ফলে জুয়েলারি ব্যবসায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। দাম বাড়ায় ক্রেতারা অলংকার কেনার পরিমাণ বহুলাংশে কমিয়ে দিয়েছে। আর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে জুয়েলারি শিল্পে ১ শতাংশ মূসক বিদ্যমান থাকায় এবং ভিসা পাওয়া সহজলভ্য হওয়ায় এ দেশের ক্রেতারা সেখান থেকে সোনার অলংকার কেনায় উৎসাহী হবে।
এ দেশে বর্তমানে আরোপিত ভ্যাট অনুযায়ী একজন ক্রেতা ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার কিনলে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা ভ্যাট দিতে হবে। তবে ভারত থেকে ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ক্রয় করলে মাত্র ১০ হাজার টাকা ভ্যাট দিতে হবে।
এতে জুয়েলারি শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছে বাজুস।
বাজুস বলছে, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের বাজেটে মূসক ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ আরোপ করায় ক্রেতারা স্বর্ণালংকার কেনা কমিয়ে দেয়। এর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে জুয়েলারি শিল্পের ওপর। বিক্রি কম হওয়ায় জুয়েলারি খাতে সরকারের রাজস্ব আদায়ও কমে গেছে। ক্রেতারা যেখানে ৩ শতাংশ হারে মূসক দিয়ে স্বর্ণালংকার কিনতে চায় না, সেখানে ৪ জুন জারীকৃত এসআরও অনুযায়ী ৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপিত হলে ক্রেতা ও জুয়েলার্সের জন্য তা সংগ্রহ ও দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। বর্তমানে স্বর্ণালংকারের উচ্চ দামের সঙ্গে এ হারে মূসক আরোপ হলে জুয়েলারি ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ক্রেতারা অলংকার কেনায় নিরুৎসাহিত হবে।
বাজুসের দাবি, জুয়েলারি শিল্পকে বাঁচাতে ভারতের মতো ১ শতাংশ থেকে ১.৫ শতাংশ মূসক আরোপিত হলে ক্রেতারা উৎসাহিত হবে। এতে জুয়েলারি শিল্প ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে। সরকারের রাজস্বও দ্বিগুণ বাড়বে।
জুয়েলারি শিল্পকে রক্ষা করতে অলংকার বিক্রির ওপর ৫ শতাংশের স্থলে ১ দশমিক ৫ শতাংশ মূসক নির্ধারণ করার দাবি করেছে বাজুস। এ ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি এবং ডিলিং লাইসেন্স নবায়ন ফি আগের অবস্থায় বহাল করার দাবি করেছে তারা।
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাজুস।