ফ্রিজ নিজেই জানাবে বিল-ভোল্টেজের তথ্য
ফ্রিজ নিয়ে মানুষের মনে কত প্রশ্নই না থাকে। ফ্রিজের জন্য কতটুকু বিদ্যুত খরচ হচ্ছে, বিল কত আসবে, ভোলেজ লো না হাই? ফ্রিজ বা এর কম্প্রেসর চলছে না বন্ধ?
এবার এসব প্রশ্নের উত্তর দেবে স্মার্ট রেফ্রিজারেটর।
দেশের বাজারে প্রথমবারের মতো স্মার্ট রেফ্রিজারেটর নিয়ে এসেছে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। যাকে বলা হচ্ছে আইওটি বা ইন্টারনেট অব থিংঙ্গস বেজড স্মার্ট রেফ্রিজারেটর।
স্থানীয় বাজারে এই স্মার্ট ফ্রিজের বাজারজাতকরণ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার পরিচিতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রাজধানীতে ওয়ালটন করপোরেট অফিসের কনফারেন্স হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্মার্ট ফ্রিজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ওয়ালটন স্মার্ট রেফ্রিজারেটরে ব্যবহার করা হয়েছে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির কম্প্রেসার, সিএফসি এবং এইচএফসিমুক্ত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর৬০০এ গ্যাস। নন-ফ্রস্ট হওয়ায় এই ফ্রিজের ভেতরের বডিতে কোনো বরফ জমবে না। আগামীকাল বুধবার থেকেই পাওয়া যাবে ওয়ালটনের নতুন এই ফ্রিজ। দাম পড়বে ৫৩ হাজার ২০০ টাকা। শুরুতে একটি মডেল বাজারে ছাড়া হয়েছে। শিগগিরই আরো কয়েকটি মডেলের স্মার্ট ফ্রিজ বাজারে আসবে বলেও জানায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
ওয়ালটনের ফ্রিজ গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রকৌশলীরা জানান, ফ্রিজের কন্ট্রোল বোর্ডে আইওটি ডিভাইস হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে ওয়াই-ফাই মডিউল। এর মাধ্যমে বাসায় ব্যবহৃত ওয়াইফাই ইন্টারনেট কানেকশনের আওতায় আসবে এই স্মার্ট ফ্রিজ। গ্রাহককে মোবাইল ফোনে ‘ওয়ালটন স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্সেস’ নামে একটি বিশেষ অ্যাপস ইনস্টল করতে হবে। এতে বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকেই গ্রাহক জানতে পারবেন- তার ফ্রিজে কত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে ও মোট কত টাকা বিদ্যুৎ বিল উঠছে। জানা যাবে ফ্রিজের পাওয়ার অন না অফ; কম্প্রেসার চালু না বন্ধ। শিগগিরই এতে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি অপশন। ফ্রিজের কোনো খাবার কমে গেলে সিগনাল চলে আসবে মোবাইল ফোনে।
প্রকৌশলীরা আরো জানান, গ্রাহকের ঘরে ব্যবহৃত ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজ বা এসিতে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের ভোল্টেজ লো, হাই অথাব ওভারলোড হলে গ্রাহকের মুঠোফোনে নোটিফিকেশন চলে যাবে। গ্রাহক তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে পারবে।
ওয়ালটন ফ্রিজ আরঅ্যান্ডডি রেফ্রিজারেশন-ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ইনচার্জ আব্দুল মালেক সিকদার বলেন, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই) কর্তৃক নির্ধারিত মানদন্ড ‘বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস ১৮৫০:২০১২’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে তৈরি করা হচ্ছে ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজ। বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজই পেয়েছে ‘ফাইভ স্টার’ এনার্জি রেটিং।
আব্দুল মালেক সিকদার আরো বলেন, ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজে রয়েছে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির কম্প্রেসার। কম্প্রেসারে ব্যবহার করা হয়েছে সিএফসি এবং এইচএফসি গ্যাসমুক্ত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর৬০০এ রেফ্রিজারেন্ট। ফ্রিজের ভেতরে আছে এলইডি লাইট। ফলে ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে ৫০ শতাংশেরও বেশি।
ওয়ালটনের বিপণন বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক ইভা রিজওয়ানার প্রত্যাশা, ইন্টিলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির নন-ফ্রস্ট ফ্রিজের মতো ওয়ালটনের নতুন এই স্মার্ট ফ্রিজটিও ব্যাপক গ্রাহকপ্রিয়তা পাবে।
বিপণন বিভাগের প্রধান এমদাদুল হক সরকার বলেন, দেশের বাজারে গ্রাহকচাহিদার শীর্ষে ওয়ালটন। গত বছরের প্রথম সাত মাসের (জানুয়ারি থেকে জুলাই) তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে ওয়ালটনের ফ্রিজ বিক্রি বেড়েছে ৩০.২৯ শতাংশ। চলতি আগস্টের প্রথম দিনেই ওয়ালটন বিক্রি করেছে লক্ষাধিক ফ্রিজ। ওয়ালটনরে এই স্মার্ট ফ্রিজ বাজারে নতুন ক্রেজ তৈরি করবে বলে তাঁর বিশ্বাস।
ওয়ালটনের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, গ্রাহকদের হাতে নিত্য নতুন প্রযুক্তি পণ্য তুলে দিতে গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজে দেশের অন্যতম বৃহৎ গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ গড়ে তুলেছে ওয়ালটন। দেশি-বিদেশি দক্ষ, অভিজ্ঞ ও পরিশ্রমী প্রকৌশলীরা নিয়মিত গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদন করছে বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তির ফ্রিজ। এরই ধারাবাহিকতায় এবার দেশের বাজারে প্রথমবারের মতো স্মার্ট ফ্রিজ এনে আবারও চমক সৃষ্টি করেছে ওয়ালটন।
বাংলাদেশের জন্য ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সংরক্ষণের নিশ্চয়তায় তৈরি হচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজ। বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড স্বীকৃত এবং আইএসও সনদপ্রাপ্ত ল্যাব থেকে মান যাচাই করে বাজারজাত করা হচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজ। মান নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি। সর্বোচ্চ গুণগতমানের নিশ্চয়তায় ওয়ালটন ফ্রিজে এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি দেওয়া হচ্ছে। কম্প্রেসারে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টির সুবিধাও দিচ্ছে ওয়ালটন।