সাড়ে ছয় বছরের মধ্যে তেলের দাম সর্বনিম্ন
এক বছর আগে বিশ্ব বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ছিল ১০০ ডলারের ওপরে। আর এখন তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৪০ ডলারের ওপরে যেতে পারছে না। শুক্রবার প্রতি ব্যারেল বিক্রি হয়ে ৪০ ডলার। গত সাড়ে ছয় বছরের মধ্যে তেলের এ দাম সর্বনিম্ন। ২০০৯ সালে সর্ব নিম্ন দাম ছিল ৪১ ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, প্রায় সাত সপ্তাহ ধরে তেলের দাম অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে।
তেলের দাম কেন এত নিচে নেমে এল- এ নিয়ে কিছু কারণ ও সাম্প্রতিক চিত্র বিশ্লেষণ করেছে সিএনএন।
অতিরিক্ত জোগান
জ্বালানি তেল উৎপাদনে মার্কিন প্রযুক্তি রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে। প্রযুক্তি চৌকসে উৎপাদন বাড়ছে দ্রুত এবং উৎপাদনের পরিমাণ আগের চেয়ে বেশি। অন্যদিকে বাজারে ভারসাম্য আনার চেষ্টা না করে জ্বালানি উৎপাদনকারী রাষ্ট্রগুলোর জোট ওপেকও তেলের উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ওপেকের অন্যতম সদস্য রাষ্ট্র সৌদি আরব মনে করে উৎপাদনে না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্যান্য দেশগুলো বাজার হারিয়ে ফেলবে।
তেল উৎপাদকদের উৎপাদন
খনির ছোট ছোট আধার ভেঙে তেল বের করে আনার প্রযুক্তি ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে তেলের উৎপাদন বেড়েছে আরো বেশি। দাম কমে গেলও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোনোভাবেই তেল উৎপাদন বন্ধ না করে আরো বাড়িয়েছে।
চাহিদার মন্দাবস্থা
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নেই। উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোকে ঘাম ঝরাতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্ত অর্থনীতির দেশগুলো তেলের চাহিদা কমিয়ে আনার নীতিতে চলছে। একই সঙ্গে যেসব দেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, সেসব দেশও তেলের ব্যবহার কমিয়ে আনার পক্ষে।
ভালো নেই চীন
বিশ্ববাজারে চীন একটা বড় নাম। বিশাল বাজারের পাশাপাশি আছে বিশাল চাহিদা। কিন্তু সে চীনও চলছে ধীরগতিতে। কাঁচামালসহ অন্যান্য উপকরণের পাশপাশি চীন জ্বালানি তেলের আমদানিও কমিয়ে দিয়েছে।
শক্তিশালী ডলারও...
অন্যান্য উপকরণের মতো জ্বালানি তেলের দামও নির্ধারণ হয় ডলারে। মার্কিন ডলার যদি শক্তিশালী হয়, তবে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতাদের জন্য তার দাম বেড়ে যায়। চলতি বছর বিভিন্ন মুদ্রার চেয়ে সাত শতাংশ বেড়ে যায়। আর এ কারণে তেলের চাহিদা কমে যেতে পারে।
এবং ইরান..
ধারণা করা হচ্ছে ইরান বিশাল পরিমাণ জ্বালানি তেল মজুদ করে রেখেছে। পশ্চিমের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির বিষয়ের ওপর তেলের সরবরাহসহ অন্যান্য বিষয় নির্ভর করছে। মজুদের ব্যাপারটি ইরান অস্বীকার করলেও গবেষকরা দাবি করছেন, প্রায় ৫০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল মজুদ করে রেখেছে ইরান।