হিলি স্থলবন্দরে জলাবদ্ধতা, আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত
দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে দীর্ঘ ৩০ বছরেও সুষ্ঠু পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই বন্দরে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
সরেজমিনে বন্দর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে রাস্তার কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বাসাবাড়ি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয়রা। প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বন্দরের পণ্যবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন।
আজ সকালে দেখা গেছে, বন্দরের চারমাথা, সিপি রোড, হাসপাতাল, সোনারপট্টি, চুড়িপট্টি, বাসস্ট্যান্ড ও উপজেলা পরিষদ রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব রাস্তার কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া হাকিমপুর ডিগ্রি কলেজ, বাংলা হিলি পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বাংলা হিলি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাংলা হিলি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, অগ্রণী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ধরন্দা ও সিপি রোডের বেশ কয়েকটি গুদাম এবং শতাধিক বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
হাকিমপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর বৃষ্টির পানিতে কলেজটি ডুবে থাকে। এ কারণে লেখাপড়ায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে থাকায় কলেজের ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বন্দরে প্রতি বছর এই সমস্যা হয়। বন্দর থেকে সরকার রাজস্ব পেলেও এর রাস্তাঘাট উন্নয়নে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
বন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্টের নিরাপত্তা কর্মকর্তা গোলাম রহমান জানান, আজ শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত পানামা পোর্টের ভেতরে পণ্য ওঠা-নামা হয়নি। পানির কারণে বন্দরের কাজ-কর্ম ব্যাহত হচ্ছে। আমদানি পণ্যবোঝাই ভারতীয় ১৯৪টি ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বন্দরের শুল্ক বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. সাইফুর রহমান জানান, এই বন্দর দিয়ে বেশির ভাগ গম, ভুট্টা, ভুসি, খৈল আসে। বৃষ্টিতে বন্দরের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। আবার ব্যবসায়ীরাও পানির কারণে পণ্য কম আমদানি-রপ্তানি করছেন।
হাকিমপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজহারুল ইসলাম জানান, বন্দর এলাকায় পরিকল্পিতভাবে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। অল্প বৃষ্টিতেই প্রতিবছর স্থলবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো ডুবে যায় এবং এসব রাস্তায় পানি জমে থাকায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। এতে সরকারের রাজস্ব আদায়ও ব্যাহত হয়। এ ছাড়া স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হওয়ায় নাগরিকদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
আগামী সোমবার দিনাজপুর জেলা সমন্বয় কমিটির সভা আছে। সেখানে হিলি স্থলবন্দরের রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা উপস্থাপন করা হবে বলে জানান ইউএনও।