স্বাস্থ্য সমস্যা ও সমাধান নিয়ে ইয়ুথ ফোরাম

Looks like you've blocked notifications!

গতকাল মঙ্গলবার নরওয়ের অসলোতে টেলিনর ইয়ুথ ফোরামে চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন মোবাইল ও ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে চারটি নতুন ধারণার প্রদর্শন করা হয়। ছয় মাসব্যাপী বৈশ্বিক টেলিনর ইয়ুথ ফোরামে নিজেদের যাত্রা শুরু করতে বাংলাদেশ থেকে টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের দুজন বিজয়ী টেলিনরের অন্যান্য বিজনেস ইউনিটের (বিইউ) বিজয়ীদের সঙ্গে অসলো পর্বে যোগ দেয়।

টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের ১৬ জন প্রতিনিধি (২০১৮-১৯ কর্মসূচির জন্য) বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে গত চার দিন ধরে অসলোতে এর সমাধান নিয়ে কাজ করছে। স্বাস্থ্যবিষয়ক চ্যালেঞ্জগুলো হলো কৃষি উপযোগিতা বৃদ্ধি, বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করা, অসংক্রামক রোগের সংক্রমণ হ্রাস করা এবং জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান বয়স্কদের সহায়তাদান।

প্রতিনিধিদের চারটি দল গতকাল তাদের প্রস্তাবনা বিচারকদের সামনে তুলে ধরে। বিচারকদের মধ্যে ছিলেন ইউনিসেফের করপোরেট পার্টনারশিপস অ্যান্ড ইনোভেশনের পরিচালক আমের ফরিদ, শি’র প্রধান নির্বাহী সুসানে কালুজা, টেলিনর গ্রুপের ইভিপি অ্যান্ড হেড অব পিপল সিসিলিয়ে হইচ এবং টেলিনর হেলথের চিফ গ্রোথ অফিসার ম্যাথিউ গিলফোর্ড।

গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের বাংলাদেশ ইউনিট থেকে বৈষম্য দূরীকরণে সেরা ধারণা হিসেবে বিজয়ী হয় সায়মা মেহেদী খান ও সামীন আলম। তাদের প্রস্তাবিত ধারণাগুলো ছিল যথাক্রমে ‘কৃষিনেট’ ও ‘প্রজেক্ট শুকতারা’। বৈষম্য দূর করে উপার্জন বাড়ানোর মাধ্যমে কৃষকদের ক্ষমতায়নে ‘কৃষিনেট’র ধারণা প্রস্তাব করে সায়মা মেহেদী খান এবং যৌন হয়রানি প্রতিরক্ষায় ‘প্রজেক্ট শুকতারা’র ধারণা প্রস্তাব করে সামীন আলম। এখন সায়মা বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিতকরণ প্রকল্পে হেড অফটলিনর রিসার্চ বিয়র্ন টালে স্যান্ডবার্গের সঙ্গে এবং সামীন টেলিনর রিসার্চের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইইউর হাইলেভেল এআই এক্সপার্ট গ্রুপের সদস্য আয়েভা মার্টনকেনাইটের সঙ্গে কৃষি বিষয়ে কাজ করবে।

এ নিয়ে টেলিনর গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও সিইও সিগভে ব্রেক্কে বলেন, ‘যেসব উৎসাহী তরুণ পৃথিবীতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চায়, তাদের একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম দিতে আমরা প্রতিবছর টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম আয়োজন করি। নোবেল শান্তি পুরস্কারের সময়ে আমরা নোবেল পিস সেন্টারের যৌথ সহযোগিতায় এ কর্মসূচি পরিচালনা করছি। আমাদের লক্ষ্য প্রয়োজনীয় সামাজিক নানা সমস্যার টেকসই ডিজিটাল সমাধান নিয়ে আসা। এবং আমরা তাদের প্রস্তাবিত ধারণা দিয়ে রোমাঞ্চিত।’

অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফোলি বলেন, “বিজয়ী দুই তরুণের জন্য এটা অনেক বড় সুযোগ। তারা শুধু একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মেই অংশগ্রহণ করবে না, পাশাপাশি এ অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে তাদের আরো অনেক কিছু শিখতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশ থেকে সম্ভাবনাময় তরুণরা বিশ্বমঞ্চে যাবে এবং তারা নিজেদের ধারণার বিকাশে ও সমাজের ক্ষমতায়নে নতুন নতুন বিষয় শিখবে, এটা আমাদের জন্য বিশেষ গর্বের বিষয়। এ বছর বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান প্রস্তাব করাই মূল চ্যালেঞ্জ। বিশ্বজুড়েই লক্ষাধিক মানুষ স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যার সমাধান খুঁজছে। স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান যেকোনো দেশের মূল উন্নয়নে সহায়তা করবে এবং দেশের সামাজিক ক্ষমতায়নেও এর সরাসরি প্রভাব রয়েছে। বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে সবার জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এটা সহায়তা করবে। এ বছরের টিওয়াইএফের প্রতিপাদ্য ‘ব্রাইট মাইন্ডস রিডিউসিং ইনইকুয়ালিটিস’-এর লক্ষ্য প্রত্যক্ষভাবে সমাজের ক্ষমতায়ন।”

টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম, যা তৈরি হয়েছে তরুণদের বৈষম্য দূরীকরণের সম্পৃক্ত করার ধারণার ওপর ভিত্তি করে। এ প্ল্যাটফর্মে স্ক্যান্ডিনেভিয়া ও এশিয়ার আটটি দেশে তরুণ নেতৃত্বদের নিযুক্ত করা হয় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত বৈশ্বিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ প্রতিরোধে। অসলো ও ব্যাংককে জড়ো হওয়ার মাধ্যমে টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম ছয় মাসের যাত্রা নিয়ে থাকছে ‘উই স্টার্ট চেঞ্জ’ প্রদর্শনী। ‘উই স্টার্ট চেঞ্জ’ প্ল্যাটফর্ম সবাইকে ইতিবাচক অবদান রাখতে এবং পরিবর্তনে উদ্বুদ্ধ করে। নোবেল পিস সেন্টারের (এনপিসি) যৌথ সহযোগিতায় এ ফোরাম পরিচালিত হয়।