ব্যাংকিং বিষয়ে তরুণদের কথা শুনতে চাই : গভর্নর

Looks like you've blocked notifications!
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

ব্যাংকিং বিষয়ে তরুণদের বেশি আগ্রহী করতে হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেন ‘আমরা ব্যাংকের নতুন সেবা সম্পর্কে তাদের মুখে শুনতে চাই। কেননা, তরুণরাই আগামী দিনের ব্যাংকার।’

সবাইকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে বেশ কিছু নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে ‘ব্যাংকিং মেলা বাংলাদেশ-২০১৫’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এসব কথা বলেন।

আতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য সদিচ্ছা জরুরি। এ মেলার মাধ্যমে সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য-সেবার আওতায় আনতে চাই। এরই মধ্যে বর্গাচাষি, প্রান্তিক চাষি ও নারী উদ্যোক্তা, গরিব ও অসহায় মানুষকে মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মোবাইল ব্যাংকিং, স্কুল ব্যাংকিং, গ্রিন ব্যাংকিং, গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ কেন্দ্র, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের আরো অনেক উদ্যোগ দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে।’  

অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, ‘ব্যাংকিং সেক্টরে দুষ্টচক্র কাজ করছে। অনিয়ম ও গরমিলের দুষ্টচক্রকে ভাঙতে হবে। এ চক্র রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে ব্যাংকের আওতায় আনা গেলে দেশের রাজস্ব আদায় বাড়বে।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সচিব ড. এস আসলাম আলম বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধ ৮ শতাংশে নিতে হবে। এর জন্য বেসরকারি বিনিয়োগ প্রয়োজন, এটা করতে হলে ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা জরুরি।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে মেলার সমন্বয়কারী বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বিরূপাক্ষ পাল বলেন, ‘টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি পরিমিত রাখা, অভ্যন্তরীণ অভিঘাত মোকাবিলায় নিরলসভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

মেলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছাড়াও দেশি-বিদেশি ৫৬টি ব্যাংক, ছয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সাতটি আর্থিকসেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক শিক্ষা, টাকা জাদুঘর, টাকা তৈরির মেশিন, স্মারক মুদ্রা ও নোট ক্রয়, মানবিক ব্যাংক, গ্রিন ব্যাংকিং, এসএমই ব্যাংকিং, স্কুল ব্যাংকিংয়ের তথ্য ও সেবা সম্পর্কে জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে মেলায়।

এ ছাড়া আর্থিক উন্নয়ন, শিক্ষা, মূল্যস্ফীতি, প্রবৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংকের ভূমিকা; গ্রহণযোগ্য সুদহার নির্ধারণ; কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণপ্রবাহের ভূমিকা; মুদ্রানীতির কার্যকারিতা ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবা বিষয়ে সেমিনার এবং গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে মেলায়। ব্যাংকিং পণ্য ও সেবা সম্পর্কে লোকজ গান, নাটিকার মাধ্যমে প্রচার চালানো হবে।

এই মেলার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘একটি ব্যাংকিং জাতি গড়ার প্রত্যয়ে’। এই স্লোগান প্রচারের মাধ্যমে পাঁচ দিনের এই মেলা চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।