জুনের মধ্যেই থ্রিজি হচ্ছে জিপির সব বেইজ স্টেশন

চলতি বছর জুনের মধ্যে সারা দেশে নিজেদের ১০ হাজার বেইজ স্টেশন থ্রিজিতে রূপান্তর করার ঘোষণা দিয়েছে গ্রামীণফোন (জিপি)। ২০১৩ সালের শেষের দিকে থ্রিজি সেবা চালু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৮৩১টি বেইজ স্টেশনকে থ্রিজিতে রূপান্তর করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
আজ রাজধানীর একটি হোটেলে এ ঘোষণা দেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজীব শেঠি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন টেলিনর গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিগভে ব্রেক্কে।
নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের ওপর জোর দিয়ে গ্রামীণফোনের সিইও রাজীব শেঠি বলেন, ২০১৫ সালে তিন হাজার ৪০১টি স্টেশন থ্রিজি সেবাদানের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। এর ফলে, বছর শেষে দেশজুড়ে গ্রামীণফোনের পাঁচ হাজার ৮৩১টি সাইটের মাধ্যমে থ্রিজি সেবা প্রদানে কাজ করছে।’
রাজীব শেঠি আরো বলেন, ‘নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে ২০১৫ সালে আমরা উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ করেছি। এই ধারা বজায় রাখাই আমাদের উদ্দেশ্য। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে আমরা আরো এক হাজার ৭০০ থ্রিজি বেইজ স্টেশন স্থাপন করবে। এর ফলে, এ সময়ের মধ্যে আমাদের গ্রাহকদের ৯০ শতাংশ থ্রিজি সেবার আওতাধীন হবেন। এই ১০ হাজার থ্রিজি বেস স্টেশন দেশের মোবাইল শিল্পে স্থাপিত মোট বেইজ স্টেশনের শতকরা ৬০ শতাংশ।’
রাজীব শেঠি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে থ্রিজি সেবা দেওয়া শুরু করার পরপরই গ্রামীণফোন, টেলিনর গ্রুপের ডিজিটাল আকাঙ্ক্ষা ‘সবার জন্য ইন্টারনেট’-এর একাত্মতার ঘোষণা দেয়। তখন থেকেই গ্রামীণফোন ২০১৯ সালের মধ্যে পাঁচ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত সারা দেশে গ্রামীণফোনের দেড় কোটিরও বেশি ইন্টারনেট গ্রাহক রয়েছে।’
দেশজুড়ে সমভাবে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি দহগ্রাম ও গড়াতির মতো সাবেক ছিটমহল এবং অন্যান্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে থ্রিজি সেবা দেওয়ার কথা বলেন শেঠি। তিনি দেশজুড়ে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও থ্রিজি সেবা বিস্তারকে প্রতিষ্ঠানটির ‘সবার জন্য ইন্টারনেট’ প্রদানের উদ্যোগ বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন।গ্রামীণফোনের সিইও জোর দিয়ে বলেন, শুধু গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোই গ্রামীণফোনের লক্ষ্য ছিল না, গ্রামীণফোনের উন্নত নেটওয়ার্কে গ্রাহকদের সেরা অভিজ্ঞতা দেওয়াই ছিল আমাদের লক্ষ্য। শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল গ্রামীণফোন নেটওয়ার্কে গ্রাহকদের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা। শেঠি বলেন, এ জন্য আমরা শুরুতেই থ্রিজির জন্য ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনতে উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ করেছি। এই প্রাথমিক বিনিয়োগ আমাদের এইচডি ভয়েস ও ডিজিটাল ক্ল্যারিটি এবং দ্বিগুণ গতির এইচএসপিএ কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের চমৎকার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করেছে এবং আমাদের শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সহায়তা করেছে।’
রাজীব শেঠি জানান, গ্রামীণফোন ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি ও থ্রিজি সেবার আওতা বিস্তৃতিতে ২০১৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত এক হাজার ৪৭০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এর আগে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি এক হাজার ৫২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে।
টেলিনর গ্রুপের সিইও সিগভে ব্রেক্কে বলেন, ‘গ্রামীণফোন ভয়েস কমিউনিকেশনের পাশাপাশি ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ রূপান্তরের অংশ হিসেবে গ্রামীণফোন শুধুমাত্র নেটওয়ার্ক ও ডাটা সেবা খাতেই উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ করেনি, প্রতিষ্ঠানটি টেলিনরের সহায়তায় শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে নতুন ডিজিটাল কন্টেন্ট ও সমৃদ্ধ ই-সেবা চালু করেছে। যেসব সেবা এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য খাতগুলোয় এর কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে ও গ্রাহকদের আস্থা লাভ করেছে।’