প্রস্তাবিত বাজেট

১০ দাবির একটিও বিবেচনা হয়নি : বিজিএমইএ

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর কাওরান বাজারে গতকাল শনিবার বিকেলে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

আগামী অর্থবছরের (২০১৬-১৭) প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক খাতের ১০টি প্রস্তাবের একটিও বিবেচনা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করা হয়নি; বরং এ শিল্পের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানো হয়েছে।

রাজধানীর কাওরান বাজারে গতকাল শনিবার বিকেলে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিজিএমইএর সভাপতি।

পোশাক খাতসংশ্লিষ্ট পাঁচ সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বিটিটিএলএমইএ ও বিজিএপিএমইর যৌথ আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংগঠনগুলোর পক্ষে বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাকের রপ্তানি মূল্যের ওপর উৎসে কর কর্তন দশমিক ৬ থেকে বাড়িয়ে ১ দশমিক ৫ করা হয়েছে। কর  বৃদ্ধির হার ১৫০ শতাংশ। এতে তৈরি পোশাক খাতের স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। দিনে দিনে পণ্য উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কিন্তু পণ্যের দাম বাড়ছে না। নতুন করে করের বোঝা যোগ হলে এ খাতের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে।’

‘উৎসে কর বিক্রয়মূল্যের ওপর ধরা হয়। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্যের সব খরচ বাদ দিয়ে ৩ শতাংশ মুনাফা করা কঠিন। ৩ শতাংশ মুনাফার ওপর কর আসে দশমিক ৫ শতাংশ। সেখানে দেড়শ শতাংশ কর আরোপ হলে কোনো ব্যবসা টিকে থাকতে পারবে না। তাই গত অর্থবছরের মতো দশমিক ৬ শতাংশ বহাল রাখতে অনুরোধ করছি।’

করপোরেট করহার প্রসঙ্গে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘পোশাক খাতের করপোরেট করহার ৩৫ থেকে ২০ শতাংশ করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। যদিও আমাদের অনুরোধ ছিল তা ১০ শতাংশ করা।’

বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘বাজেটে আমাদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করার পরিবর্তে কিছু অতিরিক্ত ঝামেলা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থ আইন-২০১৬-তে কাস্টম অ্যাক্ট ১৯৬৯-এর সেকশন ১৫৬(৫) ও (৫৯)-এর সংশোধনীতে শুল্ক কর্মকর্তাদের কোনো অপরাধের তদন্তের ক্ষেত্রে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরকে যেরূপ তদন্তের পদ্ধতি ও ক্ষমতা দেওয়া আছে, তা সন্নিবেশিত হয়েছে। এতে করে এ খাতের ব্যবসায়ীদের আরো বেশি হয়রানির শিকার হতে হবে।’

এফবিসিসিআইর প্রথম সহ-সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবছর এ করের আওতা না বাড়িয়ে একটা দীর্ঘমেয়াদি পলিসি থাকা উচিত। তা না হলে শিল্প বিনিয়োগে উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবেন। আমাদের ওপর এমন কিছু চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না, যাতে উদ্যোক্তাদের মধ্যে ভীতি কাজ করে।’

বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, ‘শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মোট কর্মসংস্থানের কথা বিবেচনা করে হলেও বর্ধিত উৎসে কর বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি।’

বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি আসলাম সানি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে বর্জ্য শোধনাগারের (ইটিপি) কেমিক্যালের আমদানি শুল্ক ৩ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া রং ও কেমিক্যালের ওপর শুল্ক ৩ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে নিট খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিটিএমইএর সহসভাপতি ফজলুল হক, বিটিটিএলএমইএর চেয়ারম্যান হোসাইন মাহমুদ, বিজিএপিএমইএর দ্বিতীয় সহসভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসাইন মতি প্রমুখ।