সিম জালিয়াতি : জব্দ হচ্ছে বাংলালিংকের সিমও

Looks like you've blocked notifications!

আঙুলের ছাপ অপব্যবহার করে সিম জালিয়াতির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। জালিয়াতি প্রতিরোধে চলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধড়পাকড়। গত এক মাসে জালিয়াতির এমন ঘটনায় জব্দ হয়েছে কয়েক লাখ সিম। আটক হয়েছেন দেশের বেসরকারি টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পরিবেশক।  

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, সিম জালিয়াতির অভিযোগে বাংলালিংকসহ সংশ্লিষ্ট টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হবে। 

গত বছরের সেপ্টেম্বরে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে ১৪ হাজার সিম নিবন্ধনের সন্ধান পাওয়া যায়। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বাধ্যতামূলক করা হয় আঙ্গুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া। নির্দিষ্ট সময়ে ১১ কোটি ৬০ লাখ সিম নিবন্ধন হলেও, বাইরে থেকে যায় আরো দেড় কোটি সিম। তার পরই দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে বাংলালিংকসহ জব্দ করা হয় কয়েক লাখ সিম। চলতি সপ্তাহে এমন অভিযানে চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে জব্দ করা হয় বাংলালিংকসহ বিভিন্ন অপারেটরের লক্ষাধিক সিম। মাদারীপুরের অভিযানে আটক করা হয় এক পরিবেশকের কর্মীদের। 

এ ব্যাপারে মাদারীপুরে বাংলালিংকের পরিবেশক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রাহক আমাদের স্টাফকে যে ফরমটা দিয়েছে, ফরমের নিচে একটা জায়গায় শনাক্তকারীর নাম, মোবাইল নম্বর এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর থাকে। সে ওটাকে সঠিকভাবে পূরণ করতে পারে নাই। কে বা কারা প্রশাসনকে জানিয়েছে, প্রশাসন  এসে দুইজনকে নিয়ে যায়।’ 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, সাভারের আশুলিয়ায় বাংলালিংকের একটি আউটলেট থেকে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১৮টি ছাপ নিয়ে সিম জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বারবার তাদের আঙুলের ছাপ নিয়ে অন্য সিমের নিবন্ধন করেছে বাংলালিংকের স্থানীয় পরিবেশক।
 

আশুলিয়ায় এক যুবক জানান, তাঁর বাংলালিংকের সিম একটি। বাংলালিংকের পরিবেশক ওই একটি সিম দিয়ে আরো দশটি রেজিস্ট্রেশন করেন। আরো এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, একটা সিম রেজিস্ট্রেশন করতে দেই, পরে চারটি করা হয়েছে। 

আশুলিয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যামেরার সামনে কথা না বলে বাংলালিংক ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়েছে, এটা পুরোনো ইস্যু। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এরই মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে।

তবে বিটিআরসি বলছে, এর দায় এড়াতে পারে না অপারেটররা। বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাজাহান মাহমুদ বলেন, ‘দায়-দায়িত্ব অবশ্যই অপারেটরদের ওপর পড়ে। আমার সংস্থায়  নিচের দিকেও কেউ যদি কিছু করে থাকে তার জন্য কিন্তু আমি দায়ী। সে হিসেবে উনাদের ডিস্ট্রিবিউটর বা রিটেইলাররা যদি কিছু করে থাকে আমরা ডিস্ট্রিবিউটর বা রিটেইলর না, অপারেটরকে দায়ী করব।’ 

সিম নিবন্ধনের শেষ সময়ের আগে, রাস্তার অলি-গলিতে যেভাবে সিম নিবন্ধন হয়েছে, তাকে অগোছালো এবং অপরিকল্পিত বলে মত দিয়ে বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ করেছেন, এর সুযোগ নিয়েছে অপারেটর ও অসাধু ব্যবসায়ীরা।

এ ব্যাপারে টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক বলেন, ‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে একটি রেফারেন্স থাকবে। সে রেফারেন্সের সঙ্গে যা কনফার্ম করা হলো তা মিলেছে কি না এ নিশ্চয়তাটা ব্যবহারকারী বা ভোক্তাকে দিতে হবে। তাহলে অন্তত ভোক্তরা নিশ্চিত হতে পারবে।’