ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩১৮৩ কোটি টাকার বাজেট

Looks like you've blocked notifications!

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) জন্য তিন হাজার ১৮৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।

নগর ভবনের মেয়র হানিফ সম্মেলন কক্ষে সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বৃহস্পতিবার এ বাজেট ঘোষণা করেন। বার্তা সংস্থা বাসসের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।  

চলতি অর্থবছর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে এক হাজার ৩৯১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে রেটস অ্যান্ড ট্যাক্স বাবদ বকেয়াসহ আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত অর্থবছরে (২০১৫-১৬) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাজেট ছিল দুই হাজার ৮৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। গত বছরের সংশোধিত বাজেট ছিল এক হাজার ৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

মেয়র সাঈদ খোকন জানান, চলতি অর্থবছরে নিজস্ব আয়ের অন্যতম খাত বাজার সেলামি। বাজার সেলামি বাবদ আয় ধরা হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা ও বাজার ভাড়া বাবদ ৩০ কোটি টাকা, ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৬৫ কোটি টাকা, রিকশার লাইসেন্স ফি বাবদ তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা ও সম্পত্তি হস্তান্তর বাবদ ৬৫ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে।  এ ছাড়া রাস্তা খনন ফি বাবদ ২৮ কোটি টাকা, অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা বাবদ পাঁচ কোটি ৬০ লাখ টাকা, বাস-ট্রাক টার্মিনাল থেকে পাঁচ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যন্ত্রপাতি ভাড়া বাবদ ১০ কোটি টাকা, শিশু পার্ক থেকে ছয় কোটি ৭০ লাখ টাকা, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া বাবদ তিন কোটি টাকা ও অস্থায়ী আমানতের সুদ বাবদ তিন কোটি টাকা আয় হবে।

মেয়র জানান, সরকারি অনুদান খাতে ১৮ কোটি, সরকারি বিশেষ অনুদান বাবদ ২০০ কোটি টাকা এবং সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তা প্রকল্প খাতে এক হাজার ৪৮৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা সাহায্য হিসেবে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

চলতি অর্থবছরে বাজেটের ব্যয়ের খাতগুলো উল্লেখ করে সাঈদ খোকন জানান, ব্যয়ের খাতগুলো হলো বেতন ভাতা বাবদ ২৪০ কোটি টাকা; সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে ৯৪৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা; ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৫৬০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা; জ্বালানি, পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে ৭৯ কোটি টাকা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ২৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাবদ ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ২০ কোটি টাকা, অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন খাতে ব্যয়ের জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কবরস্থান, শ্মশান ঘাট সংস্কার ও উন্নয়ন খাতে ১৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা; বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও জনসচেতনতা খাতে ১৪ কোটি টাকা; নাগরিক বিনোদনমূলক সুবিধা উন্নয়ন খাতে ১৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকা; পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ৭৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা; প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন সংস্থার চাঁদা বাবদ ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে ২০ কোটি টাকা; ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন খাতে ৫৩৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা; নতুন অন্তর্ভুক্ত আটটি ইউনিয়নের উন্নয়নের জন্য ২০ কোটি টাকা; পাবলিক টয়লেট নির্মাণ বাবদ নয় কোটি টাকা; ল্যান্ডফিল রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন বাবদ ২৭ কোটি টাকা; সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও সম্পদ ক্রয় বাবদ ২০৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘বিশাল দায়-দেনা নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও এখন এ সিটি করপোরেশনের কোনো দায়-দেনা নেই। জাতীয় বাজেটের চেয়ে উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত রাখতে আমাদের বাজেটের আকার এত বড় নয়। এ বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য।’

বাজেট ঘোষণার সময় সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী খান মোহাম্মদ বিলালসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।