মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে অভিযানের পর বাজারে ডলার সংকট

Looks like you've blocked notifications!
ডলারের প্রতীকী ছবি এএফপির

উচ্চ বিনিময় হার নিয়ে মুনাফার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ হাউসে অভিযান চালানোর পর খোলা বাজারে ডলারের সংকট আরও বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহে খোলা বাজারে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ডলারপ্রতি ১১২ টাকা থেকে ১১৮ টাকায় পৌঁছেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে গত সপ্তাহের শেষের দিকে এবং সপ্তাহান্তে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউসে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসব অভিযানে এক্সচেঞ্জগুলোকে আগের দরে ১১২ থেকে ১১৩ টাকা দরে ডলার বিক্রি করতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়।

কিন্তু জানা গেছে, অভিযানের ফলে এই সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে মানি এক্সচেঞ্জগুলো বাজার থেকে ডলার সম্পূর্ণভাবে তুলে নিয়েছে। চড়া দামে ডলার বিক্রির দায়ে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত ও সিলগালা করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শাস্তির ভয়ে ডলার বিক্রি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো।

ফলে খোলা বাজারে ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন খাতের সংশ্লিষ্টরা। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ১২০ টাকায়ও এক ডলার কেনা যায়নি। এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো বলেছে, তাদের কাছে বিক্রি করার মতো কোনো ডলার নেই।

খোলা বাজারে ডলারের সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেসবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, ডলার লেনদেন ঠিকই হচ্ছে, কিন্তু সবাই তা বিক্রি করছে না। যাদের কাছে ডলার আছে তারাই বিক্রি করছে।

মতিঝিল এলাকার মানি এক্সচেঞ্জ হাউসের মালিক জামান (ছদ্মনাম) রোববার ইউএনবিকে বলেন, তারা ১১৫ টাকায়ও ডলার কিনতে পারেন না, তাহলে ১১২-১১৩ টাকায় ডলার বিক্রি করা কীভাবে সম্ভব?

ডলারের সরবরাহ সংকটের কারণে রোববার অন্যান্য অনেক মানি এক্সচেঞ্জ হাউস এবং মার্কিন ডলারের ভাসমান ব্যবসায়ীদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে গিয়ে এই হতাশাজনক চিত্র যায়।

আমাদের সংবাদদাতা গুলশান, বনানী, মহাখালী ও ফার্মগেটের মতো অন্যান্য এলাকায় অনুসন্ধান করেও একই চিত্র দেখেছেন।

গত ১২ বছর ধরে ডলার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আয়নাল বলেন, ‘মানি চেঞ্জাররা একজনের কাছ থেকে কিনে আরেকজনের কাছে বিক্রি করে। বর্তমান দামে ডলার বিক্রি করতে মানি চেঞ্জারদের ডলার কিনতে হচ্ছে ১১০ টাকায়। কেউ যদি ১১২ টাকার নিচে ডলার বিক্রি না করে তাহলে মানি চেঞ্জাররা কীভাবে ডলার পাবে? ব্যবসায়ীরা ডলার না পেলে বিক্রি করতে পারবে না, মানি চেঞ্জাররা এ কথা বলছেন।’

গত ৬ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা থাকায় ডলার কিনতে মতিঝিলে আসেন ওমর ফারুক। খরচের জন্য ডলার কিনতে বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়েও পাননি তিনি।

ওমর বলেন, ‘এখন মানি চেঞ্জারের কাছে এসেছি, এখানেও ডলার নেই। আমি গুলশানে এক পরিচিতকে ফোন করেছি ৪০০ ডলার ম্যানেজ করার জন্য। যেখানে প্রতি ডলার হয়ত ১২০ টাকা হতে পারে। দাম যাই হোক না কেন, ডলার ছাড়া আমি কীভাবে বিদেশে যাব?’