বাণিজ্য মেলায় চায়না বাজারে ‘কাড়াকাড়ি অফার’
রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মেলা সেজেছে নান্দনিক সাজে। এরমধ্যে একাধিক স্টল বিভিন্ন অফারে টানার চেষ্টা করছে কাস্টমার। এ দিক দিয়ে এগিয়ে চায়না বাজার। প্রতিষ্ঠানটি তাদের সাইনবোর্ডেই লিখেছে, ‘কাড়াকাড়ি অফার’। এই কাড়াকাড়ি অফারে আরও লেখা আছে ‘১০০ থেকে ৫০০ প্লাস’। তবে, সেটি ছাড়, না কি দাম, বুঝতে হলে ঢুকতে হবে এর ভেতরে।
আজ শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বাণিজ্য মেলায় ১৬ ও ১৭ নং স্টলে গিয়ে চায়না বাজারের এই অফার দেখা যায়। যদিও নাম চায়না বাজার হলেও দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে বেশিরভাগ পণ্যই দেশীয়।
চায়না বাজারের বিক্রেতা সায়েম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, চায়না বাজারে ১০০ টাকার মধ্যে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে বিভিন্ন দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, এখানে বিভিন্ন গৃহস্থালীর পণ্য, বাচ্চাদের খেলার সরঞ্জাম, টেডিবিয়ারসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
চায়না বাজারে নাহিদা বলেন, প্রথম আজ মেলায় এসেছি। এখানে এসে চায়না বাজারে চোখ পড়লে। কিন্তু এখানে চায়নার থেকে দেশি পণ্য বেশি। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে এমন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পছন্দের পণ্য হলে নেব। দেখছি এখনও, ভাবছি কী নেওয়া যায়।
আজ সকালে বাণিজ্য মেলায় লোক সমাগম ছিল কম। এতে হতাশায় পড়েছিলেন দোকানিরা। কিন্তু দুপুরের পরে পরিস্থিতি পাল্টে জনস্রোত তৈরি হয়। এতে দোকানিদের মনে খুশির জোয়ার ওঠে।
ছুটির দিনে মেলার সার্বিক বিষয়ে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক বিবেক সরকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা যেই দর্শনার্থী প্রত্যাশা করেছিলাম, সেই প্রত্যাশা আজ পূরণ হয়েছে। আজ প্রায় লক্ষাধিক দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছে মেলায়। কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহের কারণে ব্যবসায়ীরা তেমন বিক্রি করতে পারেননি। আশা করছি, এখন থেকে ধারাবাহিক লোকজন আসবে।’
২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এবারের মেলা চলবে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা। তবে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলায় প্রবেশ মূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা এবং শিশুদের জন্য ২৫ টাকা। মেলায় যাতায়াত সুবিধার জন্য শাটল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা থাকবে। কুড়িল বিশ্ব রোড হতে এক্সিবিশন সেন্টার পর্যন্ত বিআরটিসি বাস চলাচল করবে।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সহকারি পরিচালক আব্দুল হালিম জানান, এবারের বাণিজ্য মেলায় দেশ-বিদেশের মোট ৩৫১ টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। বিদেশি স্টল বসেছে ১১টি। এরমধ্যে ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যবসায়ীরা এবারের মেলায় অংশ নিয়েছেন।
১৯৯৫ সাল থেকে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে আসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবি। ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অনুষ্ঠিত হতো এই মেলা। পরে জনদুর্ভোগ এড়াতে বাণিজ্য মেলা মূল শহর থেকে পূর্বাচলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরপর থেকে ২০২২ সাল থেকে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চলতি বছর নিয়ে সেখানে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা।