বৈধতাবিহীন সরকারের বাজেট জনকল্যাণকর হতে পারে না : এবি পার্টি
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির নেতারা বলেছেন, যে সরকার নিজেই সংবিধান লঙ্ঘন করে, প্রশাসন যন্ত্রকে অবৈধভাবে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করে, ডামি নির্বাচন নামক প্রহসনের মাধ্যমে জোরপূর্বক গদি দখল করে রাখে, ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে বিচার বিভাগকে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে দেয়... সেরকম রাজনৈতিক বৈধতাবিহীন সরকারের বাজেট কখনোই জনকল্যাণকর হতে পারে না।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা উপলক্ষে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেন আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টির নেতারা। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিকেল ৪টায় এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রিফিংয়ে এবি পার্টির পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান ও সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান।
মূল বক্তব্যে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, এবি পার্টি মনে করে, ঋণ ও ঘাটতি ভিত্তিক বড় বাজেট অতীতে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি, আগামীতেও সম্ভব হবে না। একটি অনির্বাচিত সরকারের ওপর করদাতারা আস্থা রাখে না। যার ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় কর আদায় করতে পারে না। যথেষ্ট রাজস্ব আদায় না হওয়ার কারণে এ বছরের বাজেট হবে আরও বেশি ঋণ ও ঘাটতি নির্ভর। এ বছর আগের ১২ বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে, যা মোট রাজস্ব আয়ের প্রায় এক তৃতীয়াংশ। সরকারি কাজে ব্যয় কমানো কিংবা আর্থিক খাতের সংস্কার নিয়ে এদের কোনো উদ্যোগ নেই, এদের আগ্রহ অনুৎপাদনশীল উন্নয়ন প্রকল্পে।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলো বার বার বলার পরও ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করা হয়নি। এটি বন্ধ হলে তিন বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব হতো। কৃষি ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অপর্যাপ্ত বরাদ্দের সাথে সাথে নতুন করে সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমাচ্ছে, যা দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। দিনকে দিন বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ কমছে। ইতোমধ্যে আর্থিক খাতের অনিয়ম ও ডলার সংকট পুরো আমদানি-রপ্তানি ও জ্বালানি খাতকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তারল্য সংকট ও ব্যাংক খাতের জালিয়াতির কারণে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এত সমস্যা সংকুল পরিস্থিতিতে নতুন বাজেট নিয়ে জনগণের আশাবাদী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, দেশের সব ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি। শেয়ারবাজার লুট হয়ে গেছে বহু আগে। ব্যাংক খাতের লুটপাট শেষ পর্যায়ে। যে সরকার নিজেই আইনকানুন ও সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেই সরকার কীভাবে আর্থিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফেরাবে?
প্রশাসন যন্ত্রকে অবৈধভাবে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহারের উদাহরণ টেনে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ডামি নির্বাচন নামক প্রহসনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ জোরপূর্বক গদি দখল করে রেখেছে। এর আগে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে বিচার বিভাগকে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে দিয়েছে। রাষ্ট্রের সব স্তম্ভ ধ্বংসকারী এ ধরনের রাজনৈতিক বৈধতাবিহীন সরকারের বাজেট কখনোই জনকল্যাণকর হতে পারে না।