‘অক্সফোর্ড থেকে মেইল আসার পরও বিশ্বাস হচ্ছিল না’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী মুনজেরিন শহীদ। ইংরেজি বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে যোগ দিয়েছেন দেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম ১০ মিনিট স্কুলে। প্রতিষ্ঠানটির হিউম্যান রিসোর্স বিভাগে কাজের পাশাপাশি ইংরেজি শিক্ষার ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরি করে নেটিজেনদের কাছে এখন তিনি তুমুল জনপ্রিয়। লিখেছেন ‘ঘরে বসে স্পোকেন ইংলিশ’ নামে একটি বইও।
মুনজেরিন পড়াশোনা করেছেন প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবার তিনি সত্যিকারের অক্সফোর্ডে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। সেখানে তিনি দ্বিতীয় মাস্টার্স সম্পন্ন করবেন অত্যন্ত সম্মানজনক শেভনিং স্কলারশিপের আওতায়।
‘অনলাইনে শিক্ষা’ বা ‘শিক্ষার জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার’—এ বিষয়ে এনটিভির অনলাইনের ফেসবুক লাইভ আড্ডায় মুনজেরিন জানালেন শৈশব, পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। সেই সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো—
এনটিভি অনলাইন : কেমন আছেন আপনি? আপনার নিজের সম্পর্কে দর্শকের উদ্দেশে কিছু বলুন।
মুনজেরিন শহীদ : ধন্যবাদ এনটিভি অনলাইনকে। যারা আজকে এই লাইভ শো-টি দেখছেন সবাইকে আসসালামু আলাইকুম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি ১০ মিনিট স্কুলের হিউম্যান রিসোর্স টিমটা দেখছি। গত দেড়-দুই মাস ধরে ইংরেজি শিক্ষার কিছু ভিডিও তৈরি করছি। ভিডিওগুলো সবার অনেক ভালো লাগছে। সবার কাছ থেকে অনেক সাপোর্ট, অনেক অ্যাপ্রিসিয়েশন পেয়েছি। ভিডিওগুলো দেখে সবার অনেক হেল্প হচ্ছে, সবাই অনেক শিখতে পারছে এবং আমিও শেখানোর মাধ্যমে নিজেও অনেক কিছু শিখতে পারছি। আমার জন্য ইটস অ্যান অ্যামেজিং এক্সপেরিয়েন্স। সবার সাপোর্ট পেয়েও অনেক থ্যাংকফুল ফিল করছি।
এনটিভি অনলাইন : আপনি অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর আগে নেটিজেনদের কাছে ততটা পরিচিত ছিলেন না। এখন আপনার ভিডিও কোটি-কোটি বার দেখা হচ্ছে, হাজার-হাজার বার শেয়ার হচ্ছে। কেমন লাগছে এখন?
মুনজেরিন শহীদ : সত্যি বলতে কি, তিন মাস আগেও আমি চিন্তা করিনি অনলাইনে ভিডিও তৈরি করব। তখন কেউ যদি আমাকে এ রকম কিছু বলত আমি ডেফিনেটলি কারও কথা বিশ্বাস করতাম না। আমাকে যারা ক্লোজলি চেনেন, তারাই জানেন আমি কতটা ক্যামেরা শাই ছিলাম। তখন আমাকে কেউ ভিডিও করতে বললে খুব ভয় পেতাম। কিন্তু গত দুই মাসে কয়েকটা সেলফ ডিসকভারি হয়েছে। ভিডিওগুলো থেকে ভালো ফিডব্যাক পেয়ে আরও ইমপ্রুফ করার স্কোপ পাচ্ছি। এই যে আমি আগে অনেক শাই ছিলাম, কথাবার্তা বলতাম না, এখন সেটা অনেকটা কেটে গেছে। সবার সাপোর্ট পেয়ে বিষয়টা অনেক সহজ হয়ে গেছে। এখন মনে হয়, কালকে যদি একটা ভিডিও না বানাই, তাহলে তো ভালোই লাগবে না।
এনটিভি অনলাইন : আপনি ১০ মিনিট স্কুলে কীভাবে যুক্ত হলেন?
মুনজেরিন শহীদ : আমি ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ার থেকেই ১০ মিনিট স্কুলে যুক্ত হয়েছিলাম একজন ব্লগ রাইটার হিসেবে। তারপর আস্তে আস্তে কাজের পরিধি বাড়ল, ১০ মিনিট স্কুলের স্যোশাল মিডিয়া টিমটা দেখার সুযোগ পেলাম। এখন এইচআর দেখছি। গত দুই মাস ধরে ইংলিশ ট্রেনিংয়ের ভিডিও বানাচ্ছি। আসলে অনেক কিছু শেখার সুযোগ আছে এখানে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আমরা যে টিউটরিয়ালগুলো বানাচ্ছি সেগুলো লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখছে, অনেক জনকে রিচআউট করার স্কোপ পাচ্ছি। এই ইমপ্যাক্টটা অন্য কোথাও হলে হয়তো সম্ভব হতো না। এখানে থাকার এটাই অনেক বড় কারণ।
এনটিভি অনলাইন : আপনি তো ১০ মিনিট স্কুলের হিউম্যান রিসোর্স বিভাগে কাজ করতেন। কখন মনে হলো আপনিও ইংরেজি পড়াবেন? ভিডিও তৈরি করবেন?
মুনজেরিন শহীদ : আমি ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজিতে পড়াশোনা করেছি। আমার মাস্টার্সও ইংরেজি ভাষা শিক্ষার ওপর। তখন আমার এ ধরনের কনটেন্টগুলো পড়তে ভালো লাগত, মনে হতো এটা নিয়ে যদি রিয়েল লাইফে ইমপ্লিমেন্ট করা যেত! টিচিংয়ের ঝোঁকটা আসলে সেখান থেকেই এসেছে। করোনায় ছুটির প্রথম দিকে সবাই বোর হচ্ছিলাম, ভাবছিলাম কী করা যায়? তখন মনে হচ্ছিল এতদিন যেগুলো শিখেছি সেগুলো যদি ইমপ্লিমেন্ট করতে পারি তাহলে তো ভালোই হয়। কারণ এখন তো সবকিছুই অনলাইনে। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে অনলাইনে পড়াশোনা করার চাহিদাও বেড়ে গেছে। তখনই মনে হলো অনলাইনে কিছু করার এখনই বেস্ট সময়।
এনটিভি অনলাইন : ছোটবেলা বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আপনার কি কখনো শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল?
মুনজেরিন শহীদ : সত্যি বলতে আমার অনেকগুলো ‘এইম ইন লাইফ’ ছিল। একসময় মনে হতো ডাক্তার হব। কিন্তু ডাক্তার হতে যে এত পড়াশোনা করতে হয় তা আমার জানা ছিল না। ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশনের সময় আমার বোন আমার জন্য মেডিকেলের একটি গাইডবুক পাঠান। গাইডটি দেখেই আমি ভাবলাম, আমার দ্বারা মেডিকেলে পড়া হয়তো হবে না। কারণ মেডিকেলে ভর্তির গাইডবুকই যেখানে এতে মোটা, বাস্তবে কী হবে সেটা চিন্তা করেই আমি আর মেডিকেলের কথা ভাবিনি। তারপর ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ইংলিশ বিভাগে পড়ার সুযোগ হলো। তখন মনে হয়েছিল এখানে ভালো কিছু করতে পারব। পাঁচ বছর ইংলিশ বিভাগে পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে।
এনটিভি অনলাইন : আপনার শৈশব এবং স্কুল-কলেজ সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
মুনজেরিন শহীদ : আমি চট্টগ্রামে বড় হয়েছি। স্কুল থেকে কলেজ পর্যন্ত আমি চট্টগ্রামেরই ছিলাম। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ার জন্যই পাঁচ কি ছয় বছর আগে আমি ঢাকা আসি। চাকরিও ঢাকায় হলো, সে কারণেই ঢাকায় থাকা। এখন যদিও চট্টগ্রামে আছি। লকডাউনে সেখান থেকেই অফিস করছি।
এনটিভি অনলাইন : আপনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হওয়াটা কি বাই চয়েস না কি বাই লাক ছিল?
মুনজেরিন শহীদ : আমার জন্যে বাই চয়েস ছিল। সবার মতো আমিও ফার্স্ট চয়েস ইকোনোমিকস আর সেকেন্ড চয়েস ইংরেজি দিয়েছিলাম। ইকোনোমিকসে হয়নি, ইংলিশে হয়েছিল। ইংলিশ পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে। মাস্টার্সে উঠে ইংলিশ কীভাবে পড়ানো যায়, সেটা নিয়েও পড়ার সুযোগ হয়েছে। আমার মনে হয় লাক এবং চয়েস দুটোই এখানে ভূমিকা রেখেছে।
এনটিভি অনলাইন : আপনার পড়ানোর ভঙ্গি অত্যন্ত সহজ, সাধারণ ও সাবলীল। প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সবাই আপনার ভিডিও দেখে উপকৃত হতে পারেন। এমনকি যাঁদের জীবনে বেশি পড়াশোনার সুযোগ হয়নি তাঁরাও উপকৃত হতে পারেন আপনার ভিডিও ক্লাসগুলো শুনে। পড়ানোর এই সহজ ও সাধারণ কৌশলটি আপনি কীভাবে রপ্ত করলেন?
মুনজেরিন শহীদ : ইংরেজি শেখানোর অনেক জায়গায় অনেক ভিডিও আছে। আমার কাছে মনে হতো বাংলাদেশিদের জন্যে অ্যাপ্রোপ্রিয়েট একটি মেথড দরকার। তাই আমার মনে হলো এমনভাবে ক্লাসগুলো ডিজাইন করব যাতে বাংলাদেশিদের উপকারে আসে। তাই ওভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে ভিডিও ক্লাসগুলো আর বইটাও।
এনটিভি অনলাইন : আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইংরেজি-ভীতি রয়েছে। যদিও ছোটবেলা থেকে শিক্ষাজীবনের নানা স্তরে আমাদের ইংরেজি পড়তে হয়। তবুও মাস্টার্স শেষ করার পর অনেকে ইংরেজিতে ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। কেন এমন হয় বলে আপনি মনে করেন?
মুনজেরিন শহীদ : আমি মনে করি, আমাদের স্কুল বা কলেজে স্পোকেন ইংলিশের একদমই চর্চা হয় না। তার থেকেও বড় কথা হলো এসএসসি বা এইচএসসি এ ধরনের কোনো পরীক্ষাতেও স্পোকেন ইংলিশের ওপর ভাইভা নেই। আমার মনে হয় ওখান থেকেই আমাদের মধ্যে ইংরেজি-ভীতিটা থেকে যায়।
এনটিভি অনলাইন : অনেকে কোচিং সেন্টারে গিয়ে হাজার-হাজার টাকা খরচ করেও ইংরেজি শিখতে পারে না বলে অভিযোগ করেন। একজন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে আপনার কাছে আমার জানতে চাওয়া, কেন এমন হয়?
মুনজেরিন শহীদ : আমার মনে হয়, কোচিংয়ে অনেকে অনেকভাবেই বেনিফিট পায়। আবার অনেকের কাছে শুনি যে ওরা পারসোনালাইজড বেনিফিট পায় না। কারণ সেখানে একসঙ্গে ৩০-৪০ জন স্টুডেন্ট, যার ফলে ইনডিভিজুয়াল স্টুডেন্টকে হেল্প করা হয়ে ওঠে না। বাংলাদেশের জন্য যে মেথডটা হেল্পফুল হবে সেটা নিয়ে আমাদের আরো বেশি কনসার্ন হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি, তাহলে কোচিং থেকেও স্টুডেন্টরা বেনিফিটেড হতো।
এনটিভি অনলাইন : দেশে এবং বিদেশে একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন থাকে অনেকেরই। সেটা অক্সফোর্ড, হার্ভার্ড কিংবা স্ট্যানফোর্ড হোক। আপনি অক্সফোর্ডে পড়ার সুযোগ পেয়ে লিখেছেন. ‘I still can’t believe….’ এখন কি আপনার বিশ্বাস হচ্ছে?
মুনজেরিন শহীদ : আমার কাছে যখন মেইল এলো তখনো আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল আমার কাছে ভুল করে মেইলটা আসছে। তারপর দেখলাম যে না এটা মনে হয় ভুল করে আসেনি। তবে সত্যি কথা হলো, আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।
এনটিভি অনলাইন : আপনি কখন থেকে অক্সফোর্ডে ভর্তির প্রক্রিয়াটি শুরু করেছিলেন? কেউ যদি অক্সফোর্ড বা ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান, তার কী করা উচিত? প্রস্তুতির জন্য কতটা সময় লাগে?
মুনজেরিন শহীদ : আমি কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলাম। এর মধ্যে অক্সফোর্ডের প্রক্রিয়াটা সবচেয়ে বেশি কঠিন ছিল। ওরা অনেক ধরনের লিখিত ডকুমেন্ট চায়, একাডেমিক রাইটিংয়ের স্যাম্পল চায়, তিনটা রেকমেন্ডেশন লেটার লাগে। অক্সফোর্ডের ভর্তির প্রক্রিয়াটি অনেক রিগোরাস ও জটিল। তাই বলব, কেউ যদি অক্সফোর্ডে ভর্তি হতে চান তাহলে প্রিপারেশনটা ইউনিভার্সিটি লাইফ থেকেই শুরু করা উচিত। কারণ অক্সফোর্ড একাডেমিক রেজাল্টকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়। অক্সফোর্ডের ভর্তির প্রক্রিয়া শেষ করতে অন্তত এক থেকে দেড় মাসের মতো সময় লাগে।
এনটিভি অনলাইন : আপনি অক্সফোর্ডে যে বিষয়ে পড়বেন সে সম্পর্কে যদি একটু বলতেন? এই ডিগ্রি শেষ করলে আপনি কীভাবে উপকৃত হবেন?
মুনজেরিন শহীদ : অক্সফোর্ডে ‘অ্যাপ্লাইড লিঙ্গুইস্টিকস অ্যান্ড সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েস একুইজিশন’ এই প্রোগ্রামের জন্যে আবেদন করেছিলাম। এই প্রোগ্রামটা মূলত দ্বিতীয় একটি ভাষা কীভাবে শেখানো যায় সেই কানেকশনটার মধ্যে ফোকাস করে। আমার লক্ষ্য হচ্ছে এক বছরের এই প্রোগ্রামটা শেষ করে বাংলাদেশে ফিরে এক্সপেরিয়েন্সটা কাজে লাগানো।
এনটিভি অনলাইন : বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আছেন, যাঁরা বিদেশের ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে চান। তাঁরা কখন থেকে প্রস্তুতি নেবেন, কী কী প্রস্তুতি নেবেন?
মুনজেরিন শহীদ : প্রিপারেশনটা ইউনিভার্সিটি লাইফ থেকেই শুরু করা উচিত। কারণ অক্সফোর্ড বা ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একাডেমিক রেজাল্টকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়। একাডেমিক ইংরেজিটাকে গুরুত্ব দিতে হবে আর এসওপিতে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
এনটিভি অনলাইন : ইংরেজি ভাষার দক্ষতার পরীক্ষা আইইএলটিএসের সর্বোচ্চ স্কোর ৯-এর মধ্যে আপনি ৮.৫ পেয়েছেন। কীভাবে আপনি এতে ভালো স্কোর করলেন? আপনি ইংরেজিতে অনার্স-মাস্টার্স করেছেন বলে, না কি আপনি হার্ডওয়ার্কার কিংবা এক্সট্রা অর্ডিনারি?
মুনজেরিন শহীদ : এখানে হার্ডওয়ার্কের অবদান বেশি ছিল। ইংরেজিতে অনার্স-মাস্টার্স পড়ার কারণে এবং রাইটিংয়ে আমার ভালো দক্ষতা ছিল, যার কারণে আইইএলটিএসে ভালো কিছু করার সুযোগ হয়েছে। সব কিছু মিলেই আমাকে হেল্প করেছেন। এখানে এক্সট্রা অর্ডিনারির কিছুই নেই। আমার মনে হয় এক দেড় মাস ভালো করে হার্ডওয়ার্ক করলেই আইইএলটিএসে ভালো কিছু করা সম্ভব।
এনটিভি অনলাইন : ইংরেজি শেখার জন্য আপনার লেখা বই ‘ঘরে বসে স্পোকেন ইংলিশ’ কতটুকু কার্যকর? আসলে কি ঘরে বসে ইংরেজি শেখা যায়?
মুনজেরিন শহীদ : আমার উদ্দেশ্য ছিল ঘরে বসে বইটা পড়ে যে কেউ যেন উপকৃত হতে পারেন। বইটা ডিজাইন করা হয়েছে ইজি টপিক থেকে মিডিয়াম টপিকে, মিডিয়াম থেকে ডিফিকাল্ট টপিকে। অ্যাডভান্সদের জন্য অ্যাডভান্স লেভেলের আলোচনাও করেছি।
এনটিভি অনলাইন : বইটির প্রিন্ট ভার্সন প্রকাশের প্ল্যান আছে কি?
মুনজেরিন শহীদ : করোনা পরিস্থিতির কারণে আপাতত প্রিন্ট ভার্সন আনার প্ল্যান নেই। তবে ভবিষ্যতে সুযোগ হলে আমরা পাবলিশিংয়ে যেতেই পারি।
এনটিভি অনলাইন : অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে আপনার মতামত কী?
মুনজেরিন শহীদ : এখন সবাই মোটামুটি অনলাইনের ওপর নির্ভরশীল। এখন অনলাইনেই ক্লাস হচ্ছে, এক্সাম হচ্ছে। এই যে রেভ্যুলিউশন এসেছে, আমার মনে হয় এটাই গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমরা চাইলেই অনলাইনে যেকোনো কোর্স করে ফেলতে পারি।
এনটিভি অনলাইন : আপনার প্রিয় বই বা সিনেমা কী?
মুনজেরিন শহীদ : আমার সব সময়ের প্রিয় বই হ্যারি পটার। প্রিয় সিনেমা থ্রি ইডিয়টস ও তারে জমিন পার।
এনটিভি অনলাইন : আপনার পরিবার সম্পর্কে যদি বলতেন?
মুনজেরিন শহীদ : আমার বাবা-মা ও বড় বোন আছেন।
এনটিভি অনলাইন : আপনি জীবনে কী হতে চেয়েছিলেন এবং ভবিষ্যতে কী হতে চান?
মুনজেরিন শহীদ : আমি টিচিংয়ে থাকতে চাই। গত দুই-তিন মাসে ভিডিও টিউটোরিয়ালগুলো থেকে যে পরিমাণ সাড়া পেয়েছি, যার কারণে টিচিংয়ে থাকতে চাই।
এনটিভি অনলাইন : আপনার জীবনের কোনো আনন্দের বা কোনো দুঃখের ঘটনা শেয়ার করবেন?
মুনজেরিন শহীদ : দুঃখের ঘটনা হচ্ছে স্কুলে থাকতে যখন অঙ্ক করতে হতো বা ফিজিকস, কেমেস্ট্রি পড়তে হতো। আমি এখনো গণিত, ফিজিকস বা কেমেস্ট্রি পড়ার কথা চিন্তা করলে ভয় পাই।
এনটিভি অনলাইন : আপনার জীবনের নানা অর্জনে কার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি?
মুনজেরিন শহীদ : অবশ্যই আমার বাবা-মা। সেই সাথে আমার বোন আমাকে সাহস দেন। এখন প্রত্যেকটা স্টুডেন্ট যেভাবে আমাকে সাহস দেয়, সেজন্য আমাদের বইটাও স্টুডেন্টদের উৎসর্গ করেছি।
এনটিভি অনলাইন : আপনি দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপীঠে পড়েছেন, এখন পৃথিবীর সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়তে যাচ্ছেন। আপনার মতো সন্তানই তো সব বাবা-মায়ের স্বপ্ন। আপনার জন্য আমাদের শুভ কামনা।
মুনজেরিন শহীদ : সবাই আমাদের অনেক বেশি সাহস দিয়েছেন, সাপোর্ট দিয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে অনেক ভালো কথা শুনেছি। সবার কাছে আমাদের এটাই রিকোয়েস্ট থাকবে, আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আরো বেশি কাজ করতে পারি এবং বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে আরো উন্নত করতে ভূমিকা রাখতে পারি। ধন্যবাদ আপনাকে এবং এনটিভি অনলাইনকেও।