আন্দোলনকারীদের মারধরের দায়ে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

Looks like you've blocked notifications!

গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার দায়ে ছয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।

আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. নূর উদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, বহিষ্কৃতরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে পাঁচজনকে স্থায়ীভাবে এবং একজনকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের রাফিজুল ইসলাম (আইডি নম্বর- ২০১৫১১০৫০৩৪), নূরুদ্দিন নাহিদ (২০১৫১২০৫০৬০), আরিফুল ইসলাম সাকিব (২০১৪১২০৫০২৯), মো. মাজহারুল ইসলাম মিশন (১৬ এমজিটি ০৪৮) ও রাহাত আল হাসান (১৭ এমজিটি ০৪৩)।

এ ছাড়া চলতি বছরে জুলাই-ডিসেম্বর সেমিস্টার ও আগামী বছরের জানুয়ারি-জুন সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী ইসমাইল শেখকে (১৬ এমজিটি ০৬০)।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, নারী কেলেঙ্কারীসহ নানা অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা তাঁর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের তৃতীয় দিনে ২১ সেপ্টেম্বর কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসার পথে ভিসি সমর্থক শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের হামলার শিকার হয়। এতে ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়।

এ ঘটনায় বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ড. আব্দুর রহিম খানকে সভাপতি ও আইন অনুষদের সাবেক ডিন মো. আব্দুল কুদ্দুস মিয়াকে সদস্য সচিব করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ভিসি ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনই এই কমিটি করে দেন।

২৯ সেপ্টেম্বর ওই কমিটি রেজিস্ট্রারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত প্রতিবেদনে হমলার ঘটনায় কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু ওই প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

নাসির উদ্দিনের পদত্যাগের পর এ ঘটনায় পুনঃতদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২১ সেপ্টেম্বর হামলার প্রকৃত কারণ উদঘাটন, তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২০ অক্টোবর আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়।

পাঁচ সদস্যের কমিটি সদস্যরা হলেন সিএসই বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক ড. সালেহ আহমেদ, রেজিস্ট্রার ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ, প্রক্টর ড. মো. রাজিউর রহমান, বাংলা বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রহমান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক মাহবুবা উদ্দিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর গত ১৩ ও ১৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড সভা করে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ছয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।’