আর্থিক অনটনে কুয়েট শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, তদন্তে কমিটি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তু রায়ের আর্থিক অনটনে আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কুয়েট কর্তৃপক্ষ বলছে, আবাসিক হলে অন্তুর ভর্তি ও সিট বরাদ্দ বাবদ ছয় হাজার ৬৫৫ টাকা বকেয়া ছিল। কিন্তু এই টাকার জন্য তাকে কখনও চাপ দেওয়া হয়নি।
কুয়েটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম শুক্রবার এক ই-মেইল বার্তায় তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান।
‘কুয়েট শিক্ষার্থী অন্তু রায়ের মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণায় কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা’ শিরোনামে দেওয়া বক্তব্যে বলা হয়, “২০১৮ সালে কুয়েটে ভর্তির পর থেকে থাকা-খাওয়ার জন্য ড. এম. এ. রশীদ হলে ১৮ হাজারের বেশি টাকা বকেয়া পড়ায় অন্তু নন-বোর্ডার হয়ে যান। তা ছাড়া তিনি সেন্ট্রাল ভাইভাও দিতে পারেননি। কয়েকজনের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই সংবাদে আরও বলা হয়, ‘সামান্য টাকার জন্য কেন অন্তুদের হলে নাম কাটা যাবে, কেনো ভাইভা দিতে পারবে না। কুয়েট কেন খোঁজ নিল না।’ সংবাদপত্রে প্রকাশিত এসব মিথ্যা তথ্যে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম. এ. রশীদ হলে অন্তু রায়ের ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত হলে ভর্তি ও সিট বরাদ্দ বাবদ বকেয়া ছিল ছয় হাজার ৬৫৫ টাকা। অন্তু কখনও হলে ডাইনিং ব্যবহার করেনি। ফলে তার খাওয়া বাবদ কোনো বকেয়া নেই এবং এজন্য তাকে নন-বোর্ডার করার কোনো বিষয় নেই। হলের পক্ষ থেকেও টাকা পরিশোধের জন্য তাকে কোনোভাবে চাপ দেওয়া হয়নি। বরং তার পারিবারিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুতই তাকে হলে থাকার ব্যবস্থাও করেছিল।’’
ই-মেইল বার্তায় আরও বলা হয়, ‘হলের বকেয়া টাকার সঙ্গে সেন্ট্রাল ভাইভার কোনো সম্পর্ক নেই। অন্তু রায় দ্বিতীয় বর্ষে সব পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। কিন্তু সেন্ট্রাল ভাইভায় অংশ নেননি এবং এর কোনো কারণও এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। মূলত একটি পক্ষ মিথ্যা তথ্য প্রচার করে কৌশলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে।’
এদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অন্তু রায়ের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনকে সমবেদনা জানানোর পর আজ শুক্রবারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হয়েছে, ছয় হাজার টাকার জন্য অন্তু রায়কে ভাইভা পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি বরং আড়াই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রাখা হয়।
উল্লেখ্য, করোনাকালে ও এর পরবর্তী সময়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।