জবির ফটোকপি গলিতে দিনে প্রায় ৯০ হাজার টাকার ফটোকপি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পাশেই ফটোকপি নামক গলিতেই প্রতি দিন প্রায় ৯০ হাজার টাকার শিট ফটোকপি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা নির্ভর করে এ ফটোকপি করা শিটের ওপর। যার ফলে এখানে জমজমাট হয়ে উঠেছে ফটোকপির ব্যবসা।
ফটোকপির গলিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখানে ২২টি ফটোকপির দোকান রয়েছে। সবকটি দোকানেই বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন কোর্সের শিটের তালিকা টাঙ্গানো আছে। শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট দোকানে গিয়ে তালিকা থেকে শিট নম্বর বললে মুহুর্তে তাদের ফটোকপি করে দেওয়া হয়। তাছাড়া পরীক্ষার সময় এসব শিট নিয়ে শিক্ষার্থীদের তোরজোর আরও বেড়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭বছরে এসেও বদলায়নি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের সিলেবাস। বেশিরভাগ বিভাগেই এখনও শিট ফটোকপিভিত্তিক পড়াশোনা চলছে। শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর তৈরি এসব শিট দিয়েই বছরের পর বছর চলে পাঠদান। সিলেবাস পরিবর্তন না হওয়ায় এমন নিয়মেই চলছে পরীক্ষা ও ক্লাস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রেদোয়ান জামান বলেন, ‘আমাদের বইগুলো বাইরের লেখকের হয়, দামও বেশি হয় তাই ফটোকপি করে শিট আকারে পড়ানো হয়। আর পরীক্ষার সময় বিগত বছরের প্রশ্নসহ নানা শিট ফটোকপি করতে হয় শিক্ষার্থীদের।’
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জামান ইউসুব বলেন, ‘প্রতি সেমিস্টারে আমাদের ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার শিটই ফটোকপি করতে হয়। মূলত সিলেবাসের কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় বিগত বছরগুলোতে তৈরি করা শিটগুলোই প্রতি বর্ষে পড়ানো হয়।’
ফটোকপি দোকানিরা জানান, ফটোকপি গলিতে এক একটি দোকানে দৈনিক প্রায় তিন থেকে চার হাজার টাকার শুধু ফটোকপি করা হয়। দোকানগুলোতে বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস প্রতিনিধিরা এসে শিট দিয়ে যায় সে অনুযায়ী তালিকা করে টাঙ্গানো হয়।
ফটোকপি দোকানের কর্মচারী পারভেজ বলেন, ‘বিভিন্ন বিভাগের শিট নির্দিষ্ট ফটোকপির দোকানগুলোতে রাখা হয়। শিক্ষার্থীরা এসে শিটের নাম্বার বললেই আমরা ফটোকপি করে দেই।’
ফটোকপি দোকানের মালিক শুভ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘দোকানে প্রতিদিন চার হাজার টাকার শিট ফটোকপি করা হয়। ক্যাম্পাস খোলা থাকলে ফটোকপি বেশি হয়। পরীক্ষার সময় চাপ আরও বাড়ে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা আইকিউএসি নিয়ে আরও কাজ করছি। এর মাধ্যমে শিক্ষকদের পাঠদানের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শিট নির্ভর পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া হবে।