জবি শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে স্মারকলিপি

Looks like you've blocked notifications!
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকবর খানের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছবি : এনটিভি

 

চট্টগ্রামে ফ্লাইওভারের নিচ থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী আকবর খানের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ ও প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। গত ২৭ আগস্ট ১২তম আবর্তনের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আকবর পুরান ঢাকার মেস থেকে বেরিয়ে যান এবং তাঁর সহপাঠীরা বিভিন্ন সময় ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি আশেপাশে অবস্থান করছেন বলে জানান। সর্বশেষ রাতে যখন আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় তখন তিনি একটু পর বাসায় ফিরবে বলে তার বড় বোনকে জানান। অতঃপর রাত ৮টা ৫৩ মিনিটে জানা যায় আকবর চট্টগ্রামের একটি ফ্লাইওভার থেকে নিচে পড়ে যায় এবং প্রতক্ষ্যদর্শীরা ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞান ও আহত অবস্থায় আকবরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসক, পুলিশের তদন্ত ও প্রাপ্ত আলামতের ভিত্তিতে এটি স্পষ্ট হয় যে, এটি কোনো আত্মহত্যা কিংবা দুর্ঘটনার বিষয় নয়। কারণ, আকবরকে অজ্ঞান ও অসুস্থ অবস্থায় ফ্লাইওভার থেকে ফেলে দেওয়া হয় বলে সূত্রমতে জানা যায়। এরকম অনেক সূত্র পুলিশের কাছে রয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় আকবরের পরিবার একটি মামলাও করেছে।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় আকবরের অবস্থা ছিল খুবই আশঙ্কাজনক এবং পরবর্তীতে গত ১ সেপ্টেম্বর ভোরে ৪টা ৫০ মিনিটে আকবর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, আমরা খুবই হৃদয়বিদারক ও ব্যথিত কণ্ঠে বলতে চাই, আমাদের সহপাঠীর সঙ্গে খুব অন্যায় হয়েছে, পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আকবরকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী আমাদের একজন সহপাঠীর এমন রহস্যজনক দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী এটাই জানাতে চাচ্ছি, আমাদের সহপাঠী আকবর হত্যার দ্রুত সঠিক তদন্ত ও দোষীদের বিচার না হলে অনতিবিলম্বে আমরা মানববন্ধনসহ প্রয়োজনে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবো।

স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়টি আমি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখব। আকবরের মৃত্যুর তদন্ত সুষ্ঠুভাবে করতে সার্বিক সহযোগিতা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন করবে।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে আমি নির্দেশ দিয়েছি যেনো তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করেন।’

এর আগে গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার থেকে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন আকবর। তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল বুধবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকবর খানের মৃত্যু হয়।