জাবি শিক্ষার্থীকে মারধরের বিচারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের কর্তব্যরত আনসার সদস্যদের হাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের (৪৬ ব্যাচ) শিক্ষার্থী নূর হোসাইন আহতের প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পৌনে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। দাবি মানার আশ্বাস দিলে সোয়া ১২টায় শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। এর আগে একই দাবিতে সকাল সাড়ে ১১টায় মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কুদ্দুস বয়াতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
অবরোধকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, স্মৃতিসৌধে আনসার বাহিনীর সদস্যেরা যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ওপর নির্মম হামলা করেছে তা গভীর উদ্বেগজনক। পুলিশ উদ্ধার না করলে তাঁকে হত্যা করে ফেলা হতো। এই হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আজ নুর হোসাইন হাসপাতালে ভর্তি। আমরা দোষীদের চাকরি থেকে বহিস্কার ও শাস্তি দাবি করছি।
ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে আছে। আমরা এ ঘটনায় দোষীদের যথাযথ বিচার দাবি করছি। গণপূর্ত বিভাগ জানিয়েছে অভিযুক্তদের চাকরি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। মামলা করার ব্যাপারে আশুলিয়া থানার সঙ্গে কথা হয়েছে। পুলিশ মামলা করবে।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে চার দফা দাবি জানান। হামলাকারীদের অনতিবিলম্বে তাদের চাকরি থেকে বহিস্কার, নূর হোসাইনের চিকিৎসা ব্যয়সহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার ও এমন ঘটনার পুরনাবৃত্তি ঘটলে তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ভার নিতে হবে।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সমর্থনে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।’
ঢাকা জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি আহত শিক্ষার্থীর সঙ্গে দেখা করেছি। যেসব আনসার সদস্য হামলা করেছে, তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে স্থায়ী বহিস্কার করা হয়েছে। আমরা আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসা ব্যয়সহ ক্ষতিপূরণ দেব।’
গতকাল সোমবার বিকেলে দুই ভাগনেকে নিয়ে স্মৃতিসৌধে ঘুরতে যান জাবি শিক্ষার্থী নূর হোসাইন। স্মৃতিসৌধ বন্ধ জানিয়ে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের প্রবেশ করতে দেননি।
অন্যদিকে, টাকার বিনিময়ে অন্যদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে দেখে এর প্রতিবাদ জানান জাবি শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করায় নিরাপত্তাকর্মীরা ক্ষেপে যান। সাত থেকে আট জন নিরাপত্তাকর্মী তাঁকে ভেতরের একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে নির্মমভাবে মারধর করে। পরে তাঁর বড় ভাগনে ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ কর্মকর্তারা এসে তাঁকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।