ঢাবি থেকে ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ!’
সেন্সরশিপ ও নিপীড়নের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কয়েকজন শিক্ষার্থীর স্থাপন করা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতীকী ভাস্কর্যটি দুদিনের মাথায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি-সংলগ্ন রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে স্থাপন করা ওই অস্থায়ী ভাস্কর্যটি আর দেখা যায়নি। পরে শিক্ষার্থীরা সেখানে ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ!’ লেখা ব্যানার ঝুলিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে অস্থায়ী ওই ভাস্কর্য স্থাপনকারী শিক্ষার্থীদের একজন শিমুল কুম্ভকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) স্থাপিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতীকী ভাস্কর্যটি গুম হয়ে গেছে। কে বা কারা, কখন, কীভাবে কাজটি করেছে, তা আমরা জানি না। আমাদের লোকজন আজ সকালে এসে সেটি আর দেখতে পাননি। আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সেটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।’
শিমুল বলেন, ‘আমাদের এই ভাস্কর্যটি আসলে প্রতিবাদের প্রতীক ছিল। এ জন্য এটি কারও কারও গাত্রদাহের কারণ হতে পারে। আর সেজন্যই এটা তাদের উদ্যোগে সরানো হতে পারে।’
ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের আহ্বায়ক কাজী রাকিব হোসাইন বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের ওই ভাস্কর্য মূলত চারুকলার শিক্ষার্থীরা তৈরি করেছিল। তাদের সঙ্গে আমাদের ছাত্র ইউনিয়নের চারুকলার কর্মীরাও ছিল। বইমেলায় বই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, আদর্শের মতো প্রকাশনীকে স্টল দেওয়া হচ্ছে না, সর্বত্র বাক স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এসবেরই একটি প্রতীকী প্রতিবাদ ছিল এটা।’
কাজী রাকিব আরও বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার—সেটি হয়তো প্রক্টোরিয়াল টিম সরিয়ে ফেলেছে। এই ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা জানতে চেষ্টা করছি—কারা এই ভাস্কর্যটি ওখানে হঠাৎ করে কোনো অনুমতি ছাড়াই হাজির করল। আমাদের একটি অনিন্দ্য সুন্দর ভাস্কর্যের (রাজু ভাষ্কর্য) সামনে অন্য আরেকটি ভাস্কর্য তারা রেখে চলে গেল কী করে? আমি জানি না—এটা ভাস্কর্য কি না!’
প্রক্টর বলেন, ‘যারা আমাদের নোবেল বিজয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে এরকম একটা কাজ করল, তাদের কাছে এই কাজের জবাবদিহিতা আশা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কারণ, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে এটা স্থাপন করেনি। এ জন্য এটা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এর কিছু নীতিমালা আছে এবং কিছু মাস্টার প্ল্যান আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের কাজ প্রত্যাশিত নয়।’