তাপমাত্রা বাংলাদেশে করোনার বিস্তারকে ধীর করে দিতে পারে : সিকৃবি

Looks like you've blocked notifications!

বর্তমান তাপমাত্রা বাংলাদেশে কোভিড-১৯-এর বিস্তারকে অনেকটা ধীরগতি করে দিতে পারে বলে জানিয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) একদল গবেষক।

সিকৃবির গবেষক দল দেশের মানুষকে সাবধান করে দিয়ে বলেছে, এর মধ্যেই ভাইরাসটিতে বিরূপ পরিবেশে নিজেকে পাল্টে ফেলার চারিত্রিক লক্ষণ দেখা গেছে। তাই ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে যাতে কমিউনিটি বিস্তার না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নয়তো এটি দেশকে ভয়ঙ্কর মহামারির দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে জানান গবেষকরা।

স্যাটেলাইট ইমেজিংয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত চীনের উহান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি ও বাংলাদেশের তাপমাত্রার তুলনামূলক তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য বিস্তার ও তাপমাত্রার প্রভাব নিয়ে করা এ গবেষণাটি ‘রিসার্চ স্কয়ার’ নামক ওয়েবসাইটে প্রি-প্রিন্ট হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।

এ গবেষণাপত্রটি বর্তমানে নেচার রিসার্স গ্রুপের একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের জন্য পর্যালোচনা চলছে।

বায়োইনফরম্যাটিক্সের বিভিন্ন গবেষণাপদ্ধতি এবং স্যাটেলাইট ইমেজিং ও এপিডেমিওলজির বিভিন্ন ডাটাবেজ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণাটি করা হয়।

সিকৃবি এপিডেমিওলজি ও পাবলিক হেলথ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধানে মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো বাশির উদ্দিন, ফার্মাসিউটিক্যালস ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান, একোয়াটিক রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আহমেদ হারুন-আল-রশীদ, এপিডেমিওলজি ও পাবলিক হেলথ বিভাগের প্রভাষক ডা. মো. ইরতিজা আহসান এবং ফার্মাসিউটিক্যালস ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল বায়োটেকনোলজি বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মো. আব্দুস শুকুর ইমরান এ গবেষণাটি করেন।

গবেষণাটিতে ২০১৬ সালে বাংলাদেশে মহিষ থেকে প্রাপ্ত এক ধরনের করোনাভাইরাসের জিনোমের সঙ্গে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ মহামারির জন্য দায়ী সার্স-করোনাভাইরাস-২-এর জিনোমের মধ্য তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া বিগত দিনগুলোতে রোগ সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস গ্রুপের অন্যান্য ভাইরাস যেমন সার্স, মার্স ও বাদুড় থেকে প্রাপ্ত করোনাভাইরাসের মধ্যেও তুলনামূলক গবেষণা করে ফলাফল হিসেবে বলা হয়, কোভিড-১৯-এর জন্য দায়ী সার্স-করোনাভাইরাস-২ পূর্বে বাংলাদেশে প্রাপ্ত মহিষ করোনাভাইরাসের সঙ্গে কম সাদৃশ্যপূর্ণ ও সার্স ভাইরাসের সঙ্গে অত্যধিক সাদৃশ্যপূর্ণ।

দ্বিতীয়ত, ৯ মার্চ পর্যন্ত এপিওডেমিওলজির বিভিন্ন ডাটাবেজ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গ্লোবাল কেস ফ্যাটালিটি ও মৃত্যুহার তুলে ধরা হয়।

সেইসঙ্গে স্যাটেলাইট ইমেজিংয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত চীনের উহান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি ও বাংলাদেশের তাপমাত্রার তুলনামূলক তথ্য বিশ্লেষণ থেকে বলা হয় যে, বর্তমান তাপমাত্রা বাংলাদেশে কোভিড-১৯-এর বিস্তারকে অনেকটা ধীরগতি করে দিতে পারে।

একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এম.আই.টি থেকে মার্চ ২০২০-এ প্রকাশিত গবেষণাতে বলা হয়েছে, সার্স-করোনাভাইরাস-২ এর প্রাদুর্ভাব ৩ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সবচেয়ে বেশি। একইভাবে, ইউরোপীয় গবেষকদের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে কোভিড-১৯-এর ৯৫ শতাংশ কেস মূলত শীতপ্রধান দেশের, যেখানে তাপমাত্রা ৫ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ গবেষণার তথ্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।