দেড় বছর পর ক্লাসে ফিরেছেন রাবি শিক্ষার্থীরা

Looks like you've blocked notifications!
দেড় বছর পর ক্লাসে ফিরেছেন রাবি শিক্ষার্থীরা। ছবি : সংগৃহীত

করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে মতিহারের সবুজ ক্যাম্পাসে।

আজ সকালে ক্লাস শুরুর আগেই নিজ নিজ বিভাগে আসতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। যেসব শিক্ষার্থী অন্তত এক ডোজ করোনার টিকা নিয়েছেন, শুরুতে তাঁরা ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছেন। দীর্ঘ বিরতির পর শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের আন্তরিক সহযোগিতায় পড়ালেখায় করোনার ক্ষতি পুষিয়ে স্বাভাবিক শিক্ষা ও কর্ম জীবনে ফেরার প্রত্যাশা করছেন তাঁরা।

এদিকে দীর্ঘদিন পর ক্লাসে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাহাবুদ্দিন বিজয় বলেন, ‘দেড় বছরের বেশি সময় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সেশনজটের মুখে পড়েছেন। হল খোলার পর ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হওয়া আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। আমরা দীর্ঘ সেশনজটের কবল থেকে রক্ষা পাব হয়তো।’

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘অনেক দিন পর সব বন্ধুদের সঙ্গে বসে ক্লাস করতে পারছি, এটি অনেক আনন্দের।’

এদিকে, করোনার দীর্ঘ বন্ধে অনলাইনে ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস ও কোর্স কারিকুলাম এগিয়ে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে রাবি’র ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. মো. আনোয়ারুল কবীর ভূঁইয়া জানান, অতি দ্রুত ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ করে বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেবেন তাঁরা।

করোনার আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ ক্লাস হয়েছে গত বছরের ১৬ মার্চ। দীর্ঘ এ বন্ধের ক্ষতি কাটাতে আগামী শীত ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিলের পাশাপাশি নানা উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।

গত ১৭ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের জন্য সব আবাসিক হল খুলে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার শর্তে ও মানসম্মত পরিচালনা পদ্ধতি সামনে রেখে নিয়মিত ক্লাস পরিচালিত হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘দেড় মাস ধরে আমার অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষা চলছে। তাই সব কক্ষ খোলা এবং পরিষ্কার রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা আসার পরই ক্লাস করার পরিবেশ পাবেন৷ তবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে। আর ক্লাসরুমে হ্যান্ড স্যানিটাইজার থাকবে, যার প্রয়োজন তিনি ব্যবহার করবেন।’

প্রকৌশল অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক একরামুল হামিদ বলেন, ‘আমার অনুষদের প্রায় সব বর্ষেই পরীক্ষা চলছে। তাই আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে এলেই তাঁদের প্র্যাকটিকাল (ব্যবহারিক) পরীক্ষাগুলো নেওয়ার। কারণ, আমাদের দুটি সেমিস্টারের ক্লাস নেওয়া আছে। তাই যতটা সম্ভব, প্র্যাকটিকালগুলো নিয়ে রাখতে হবে, যাতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লে প্র্যাকটিকালের জন্য পরীক্ষা পিছিয়ে না থাকে।’

অধ্যাপক একরামুল আরও বলেন, ‘এই অনুষদের প্রত্যেকটি বিভাগে মাস্ক ও স্যানিটাইজার পাঠানো হয়েছে, যাতে ক্লাসে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত থাকে।’

প্রথম দিনের ক্লাসে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল ক্লাসে৷ রাবি উপাচার্য ক্লাস পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ৱবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।

এর আগে গত ১৭ অক্টোবর শিকার্থীদের জন্য খুলে  দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল।