ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড করায় ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিল
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ সংশোধন করায় স্বাগত জানিয়েছে ছাত্রলীগ। এ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তারা আনন্দ মিছিল করেছে।
দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি জায়গা প্রদক্ষিণ করে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয় ছাত্রলীগের মিছিল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, সহসভাপতি মাহমুদুল হাসান তুষার ও আরিফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী ও তাহসান আহমেদ রাসেল, মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান এনে গতকাল একটি আইনের সংশোধনের প্রস্তাব পাস হয়েছে মন্ত্রিসভায়। আমরা কৃতজ্ঞ, আমরা ধন্যবাদ জানাই, আমাদের যে অনুরোধ ছিল প্রাণপ্রিয় নেত্রীর কাছে, তিনি তা রেখেছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পরিবার দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ।’
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করার জন্য সবার আগে মাঠে নামে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কিন্তু কিছু অসৎ নামসর্বস্ব ব্যক্তি, নামসর্বস্ব সংগঠন, ধর্ষকদের যারা সব সময় সাপোর্ট দেয়, তারা মিথ্যা বলে যে সিমপ্যাথি নেওয়ার চেষ্টা করেছে, সেটা কিন্তু সবাই জেনেছে যে এই নাটকবাজদের এজেন্ডা পাকিস্তানের এজেন্ডা। সুতরাং এই পাকিস্তানিদের কোনোভাবে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার সুযোগ দেব না। জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সব সময় পরিশ্রম করে যাবে, তাঁর হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘জনগণের আবেদনে সাড়া দিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে গতকালের মন্ত্রিসভায় ২০০০ সালের যে নারী নির্যাতন আইন ছিল, সে আইনের খসড়া সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড হিসেবে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আজকের এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। বিকেল ৩টায় সারা দেশে আমাদের সব ইউনিট এ কর্মসূচি পালন করবে।’
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আজ অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আজ থেকেই এটি আইনে পরিণত হলো।
এর আগে গতকাল সোমবার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০’ সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় পাস হয়। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এটি আইনে পরিণত হবে। এর আগে এটির আইনি যাচাই (ভেটিং) হবে। যেহেতু সংসদ অধিবেশন আপাতত চলমান নেই, তাই সরকার সংশোধিত আইনটি একটি অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির পর থেকেই আইনটি কার্যকর হবে।’
মন্ত্রী বলেছিলেন, বিদ্যমান আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন আছে। সেটিকে এখন মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন করা হয়েছে। ধর্ষণের অপরাধের গুরুত্ব ও ভয়াবহতা বিবেচনা করে বিচারক মৃত্যুদণ্ডের রায় দিতে পারবেন।