বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়ে যা বললেন আবরার ফাহাদের ছোট ভাই

Looks like you've blocked notifications!
আবরার ফাহাদ (ডানে) এবং তাঁর ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) হলে হত্যার শিকার হওয়া শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ এবার বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে আবরার ফাইয়াজ ৪৫০তম হয়ে যন্ত্রকৌশল বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর বুয়েটের ওয়েবসাইটে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার এ চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয় হয়।

বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর আবরার ফাইয়াজ এবং তাঁর পরিবারের যেমন আনন্দ পাওয়ার কথা ছিল, আবরার ফাহাদ এখানে হত্যার শিকার হওয়ার কারণে তাদের মনে এখন আর খুব একটা আনন্দ নেই। ফাইয়াজকে বুয়েটে ভর্তি করা হবে কি না, এ নিয়ে ফাইয়াজের মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যেরা অনেকটাই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও আশঙ্কা বোধ করছেন বলে আবরার ফাইয়াজ জানান।

এ নিয়ে আবরার ফাইয়াজের সঙ্গে কথা হয় এনটিভি অনলাইনের। বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর তাঁর অনুভূতির কথা জিজ্ঞেস করলে কান্না জড়ানো স্বরে ফাইয়াজ বলেন, ‘ভাইয়া থাকলে চান্স পাওয়ার পর আমার মধ্যে যে অনুভূতিটা কাজ করতো, এখন আসলে সে অনুভূতিটা নেই। আমার আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল যে, আমি হয়তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব নয়তো বুয়েটে। তখন আসলে এরকম কথা ছিল যে, ভাইয়া বুয়েট থেকে গ্র‍্যাজুয়েশন শেষ করে বের হবে, আর আমি তখন ঢুকব। কিন্তু, এটা তো আর হলো না।’

ফাইয়াজ বলেন, ‘ভাইয়া আজ নেই, আমি চান্স পেয়ে গেলাম। ব্যাপারটা যে রকম হওয়ার কথা ছিল, তার থেকে ভিন্ন রকম হয়ে গেল। এখনকার অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’

বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়া নিয়ে তাঁর পরিবারের অনুভূতির কথা জানতে চাইলে ফাইয়াজ বলেন, ‘আব্বু আসলে এখন পর্যন্ত ভালো-মন্দ বেশি কিছু বলেনি। কিন্তু, আম্মু বুয়েটে ভর্তি হওয়াকে খুব একটা ভালোভাবে নিচ্ছেন না। তিনি একটু শঙ্কিত। এ ছাড়া পরিবারের অনেক সদস্যই আছেন, যাঁরা আসলে বুয়েটে ভর্তি হওয়াকে পছন্দ করছেন না। তাঁদের বেশির ভাগেরই বেশ সন্দেহ আছে নিরাপত্তা নিয়ে। এজন্য পরিবারের কেউ ওরকমভাবে জোর দিয়ে বলেছে না যে, বুয়েটেই ভর্তি হও।’

সবশেষে ফাইয়াজ বলেন, ‘তবে, আমি এসব ব্যাপারে তেমন কোনো শঙ্কায় নেই। আমি আইইউটিতেও সিএসইতে ভর্তি আছি। তাই, পরিবারের সবাই একটু ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নেব।’

এর আগে গত ১৮ জুন বুয়েট ক্যাম্পাসে ছয় হাজার শিক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ও বিকেল—দুই পর্বে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রকৌশল, পুরকৌশল, যন্ত্রকৌশল, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের অধীনে বুয়েটের ১২টি বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হবে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ও অন্যান্য এলাকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীভুক্ত প্রার্থীদের জন্য প্রকৌশল বিভাগ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জন্য মোট তিনটি এবং স্থাপত্য বিভাগে একটি সংরক্ষিত আসনসহ সর্বমোট এক হাজার ২৭৯টি আসনের বিপরীতে প্রার্থী সংখ্যা ১৭ হাজার ৩৪ জন।