রাবিতে নির্মাণকাজে ভাঙছে সড়ক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুটি আবাসিক হল এবং একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণসামগ্রী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করছে বড় বড় ট্রাক। এতে পিচ উঠে খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসের ভেতরে বেশ কয়েকটি সড়ক। এ কারণে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি এবং অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
প্রকৌশল দপ্তর জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তত ভিত্তির (বেজমেন্ট) কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাস্তাগুলো ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না। আর এ ভিত্তির কাজ শেষ করতে সময় লাগতে পারে কমপক্ষে দুই বছর।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যয় কমাতে ছোট গাড়ির পরিবর্তে ১৫ টনের বেশি লোডের মালবাহী ট্রাক কোনো রুট প্ল্যান ছাড়া ক্যাম্পাসে প্রবেশ করানো হচ্ছে। আর এতেই ক্যাম্পাসে সড়কগুলোর এমন বেহাল দশা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভারী মালবাহী ট্রাকগুলো ক্যাম্পাসে প্রবেশ করায় যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে কয়েকটি সড়ক। তাই রিকশা ও অটোতে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে তাদের। তা ছাড়া রাস্তাগুলো এখন হাঁটারও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে ২০ তলা বিশিষ্ট একটি একাডেমিক ভবন এবং স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন এবং খালেদা জিয়া হলের মধ্যবর্তী স্থানে মেয়েদের জন্য একটি দশ তলা আবাসিক হল নির্মাণের কাজ চলছে। এ ছাড়া মাদার বখশ্ হলের সামনে দশ তলা বিশিষ্ট ছেলেদের জন্য আরেকটি আবাসিক হল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের নির্মাণসামগ্রী নিয়ে বড় বড় ট্রাকের যাতায়াতের ফলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের পেছনের রাস্তা একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, র্দীঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু (তৃতীয় বিজ্ঞান ভবন) একাডমিক ভবনের পেছন থেকে চারুকলার গেট র্পযন্ত বিস্তৃত রাস্তাটির পিচ উঠে গেছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের মোড় থেকে শুরু করে জিয়া হলের সামনের সড়ক এবং হবিবুর রহমান হলের সড়কটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট থেকে চারুকলা ও কৃষি অনুষদে যাওয়ার রাস্তাটির অবস্থা খুবই বাজে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এ রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে এসেছি। কিন্তু, এখনও এটি সংস্কার করা হয়নি। বরং এখন ভবন নির্মাণ কাজের জন্য রাস্তাটি আরও নষ্ট হয়ে গেছে।’
কৃষি অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের অনেকেরই এখন ক্লাস-পরীক্ষা চলছে। রাস্তা খারাপ হওয়ায় পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তা ছাড়া এ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে যেমন অসুবিধা, রিকশায় গেলে পড়ে যাওয়াসহ মারাত্মক দুর্ঘটনার ভয় থাকে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কাজের শুরুতে কিছু ট্রাক বিভিন্ন রুটে প্রবেশ করেছিল। কিন্তু, পরে আমরা রুট প্ল্যান সঠিকভাবে পালনের নির্দেশ দিয়েছি। আর, ক্যাম্পাসে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হলে এমন একটু ভোগান্তি হয়। আপাতত এভাবেই উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তত ভিত্তির (বেজমেন্ট) কাজ শেষ করতে চাই। তাই কয়েকটা দিন একটু কষ্ট সহ্য করতে হবে।’
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, ‘কাজ চলাকালীন রাস্তা মেরামত করলে সেটি আবার ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে সম্পূর্ণ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা করে কার্যকরী কিছু হবে না। তবে, যেসব জায়গা ভেঙে গেছে সেগুলা ঠিকঠাক করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কম হয়।’