রুয়েটে শিক্ষকদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শুরু

Looks like you've blocked notifications!

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এনে এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শুরু করেছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষক সমিতি।

আজ সোমবার থেকে রুয়েটে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না।

৩৩ ক্রেডিট বাতিলের দাবিতে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন রুয়েটের ২০১৪ ও ২০১৫ সিরিজের শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে উপাচার্যসহ প্রায় ২০ শিক্ষককে আবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

পরে গতকাল রোববার দুপুরে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের মুখে ৩৩ ক্রেডিট পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় রুয়েট। এরপরই দুপুর ২টার দিকে রুয়েটের শিক্ষক সমিতি জরুরি এক সাধারণ সভায় আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে ক্লাস-পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন ঘোষণা করে।

এ বিষয়ে রুয়েটের শিক্ষক সমিতির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. নীরেন্দ্র নাথ মুস্তাফি বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি গতকাল ২টার দিকে জরুরি এক সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের। শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যে অছাত্রসুলভ আচরণ, শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা এবং শিক্ষকদের যে অপমান করা হয়েছে, মূলত আমরা এ জন্যই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

ড. নীরেন্দ্র নাথ মুস্তাফি আরো বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে আচরণ পেয়েছি, সেগুলো অপ্রত্যাশিত। প্রশাসনকে আমরা বলেছি যে এটার একটা তদন্ত হওয়া দরকার। কারণ, ছাত্রদের কাছ থেকে তো এর আগে এ ধরনের আচরণ আমরা পাইনি। এটা কেন হলো, কেন তারা শিক্ষকদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করছে, এটার সুরাহা হওয়া দরকার। না হলে তো শিক্ষকদের যে অস্তিত্ব, সেটা হুমকির মধ্যে পড়ছে।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁরা কোনো শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ করেননি। একটা দাবিকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সফল করে তুলতে হলে অনেক কিছুই করতে হয়। সেটা কোনো শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট কোনো শিক্ষককে উদ্দেশ করে করেননি। কিন্তু শিক্ষকরা ব্যাপারটা হয়তো ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যারদের অবরুদ্ধ করে রাখার সময় এক শিক্ষকের মা অসুস্থ ছিলেন, তাঁকে চলে যেতে দেওয়া হয়েছে। আরেক শিক্ষক রাতে খাওয়ার ওষুধ আনেননি, তাঁকে চলে যেতে দেওয়া হয়েছে। আমরা আসলে তাঁদের এভাবে আটকে রাখতে চাইনি। আমাদের দাবি মেনে নিলেই আমরাও চলে আসতাম। শিক্ষকরা ভেতরে কার্পেটে ঘুমিয়েছেন, আমরা শীতের মধ্যে বাইরে ফ্লোরে ছিলাম, মশার কামড় খেয়েছি। আর আমাদের কেউ মদদ দেয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বাইরে অন্য কারো স্বার্থ থাকলে সব শিক্ষার্থী এভাবে একসঙ্গে আসত না।’

ওই শিক্ষার্থী আরো বলেন, ‘আসলে স্যাররা আমাদের ওপর রাগ করেছেন। আমরা ভাবছি, স্যারদের কাছে সরি বলব, আর এভাবেই ব্যাপারটা মিটে যাবে।’