দেশে দুই লাখ মানুষ ডাউন সিনড্রোমে ভুগছে
বিশ্বে প্রতি ৮০০ শিশুর মধ্যে একজন ডাউন সিনড্রোম শিশু জন্মগ্রহণ করে। সে হিসাবে বাংলাদেশে দুই লাখ মানুষ ডাউন সিনড্রোমে ভুগছে। এসব ব্যক্তি সমাজে অবহেলিত।
১২তম বিশ্ব ডাউন সিনড্রোম দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মোজাফফার আহাম্মদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন।
ডাউন সিনড্রোমের লক্ষণগুলো তুলে ধরে সভায় বক্তারা বলেন, এটি কোনো রোগ নয়। বরং এটি শরীরের একটি জেনেটিক পার্থক্য ও ক্রোমোজোমের একটি বিশেষ অবস্থা। এ ধরনের ব্যক্তিদের দেহকোষে একটি অতিরিক্ত ক্রোমোজোম থাকে যাকে ট্রিসোমি ২১ বলে। অন্যদের তুলনায় এরা দেরিতে কথা বলে, হামাগুড়ি দেয় ও হাঁটে।
সঠিক যত্ন, পুষ্টিকর খাবার ও ফিজিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে ডাউন সিনড্রোম শিশুরা লেখাপড়া করে স্বনির্ভর হতে পারে। তাই জাতীয় পর্যায়ে তাদের সামাজিক মর্যাদা, গ্রহণযোগ্যতা, অধিকার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি বলে মনে করেন আলোচকরা।
ডাউন সিনড্রোম ব্যক্তিরা সমাজেরই অংশ বলে মনে করেন আলোচনা সভার প্রধান অতিথি উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এ জন্য তাদেরকে মূলধারার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ডাউন সিনড্রোম শিশু ও অভিভাবকদের নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। ঢাবির যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হাকিম আরিফের সভাপতিত্বে শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন ঢাবি উপাচার্য।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এম এ আজিজ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহাম্মেদ ও ডাউন সিনড্রোম সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান সরদার এ রাজ্জাক প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগ, ডাউন সিনড্রোম সোসাইটি অব বাংলাদেশ, আমদা বাংলাদেশ, ডাউন সিনড্রোম প্যারেন্ট সাপোর্ট গ্রুপ, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ‘বিশ্ব ডাউন সিনড্রোম দিবস আওয়ার্ড’ অর্জন করেন ডাউন সিনড্রোম সোসাইটির চেয়ারম্যান সরদার এ রাজ্জাক। তাঁকে যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগ থেকে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে ‘ডাউন সিনড্রোম ভয়েস’ নামে একটি নিয়মিত ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।